এক দিকে, উষ্ণায়নের মতো উত্তরোত্তর বেড়ে চলা সমস্যা।

 অন্য দিকে, ওজোন স্তরের ফাটল ক্রমশই বাড়ছে আন্টার্কটিকায়।

নাসা জানাচ্ছে,আন্টার্কটিকার বায়ুমণ্ডলের স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে ওজোনের স্তরে ওই ফাটল ধরেছে অনেক দিনই। প্রতি দিন সেই ফাটল বাড়ছে রীতিমত রেকর্ড হারে।

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ভূপৃষ্ঠ থেকে বায়ুমণ্ডলের ২৫ কিমি উঁচুতে স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে আছে এই ওজোনের স্তর। সূর্যের ক্ষতিকারক অতিবেগুনি রশ্মি থেকে পৃথিবীকে বাঁচিয়ে রাখে এই ওজোন স্তর। কিন্তু সাতের দশকের শেষ থেকেই ফাটল ধরে ওজোনের স্তরে। মাত্রাতিরিক্ত দুষণের কারণে ক্রমশ বাড়ছে উষ্ণায়ন। বেশ কিছু ক্লোরোফ্লুরো কার্বন, ব্রোমিন, ক্লোরিন গ্যাস এর জন্য দায়ী। গত কয়েক দশকে বাতাসে এই সব গ্যাসের পরিমাণ বেড়েছে। ফলে বেড়েছে ওজোন স্তরের ছিদ্রও। যার প্রভাব পড়েছে জীবজগতে। ফাটলের জন্য ক্ষতিকারক অতিবেগুনি রশ্মি আরও বেশি ঢুকছে পৃথিবীতে। যার ফলে কয়েক দশকে ত্বকের ক্যানসার, চোখের ছানির সম্ভাবনা বেড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ইমিউন সিস্টেমের। বাদ যায়নি গাছপালাও।

নাসার বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, অগস্ট ও সেপ্টেম্বর—এই দুই মাস ক্ষতিকারক গ্যাসগুলির কারণে প্রতি বছরই আরও বড় হয় ওজোন স্তরের ফাটলটি। তবে আবহাওয়া পরিবর্তনে চলতি বছরে ফাটল বেড়েছে কয়েক গুণ। গত ২ অক্টোবর এই ফাটলের মাপ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮২ লক্ষ বর্গ কিমি। আয়তনে উত্তর আমেরিকার থেকেও বেশি। গত বছরের সর্বোচ্চ মাত্রার থেকে এই মাপ ৪১ লক্ষ বর্গ কিমি বেশি। গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর এই ফাটল বাড়ে সবচেয়ে বেশি। ২৪১ লক্ষ বর্গ কিমি।

উষ্ণায়ন ঠেকাতে ডিসেম্বরে প্যারিসে বৈঠকে বসতে চলেছেন রাষ্ট্রপ্রধানেরা। রাষ্ট্রপুঞ্জের আবহাওয়া সংক্রান্ত সেই সম্মেলন উষ্ণায়ন রুখতে কী ভাবে বাতাসে কার্বনের গ্যাস নিঃসরণের মাত্রা বেঁধে দেওয়া যায় তার রূপরেখা ঠিক করবেন উন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশগুলির রাষ্ট্রপ্রধানেরা। তার আগেই অবশ্য বিজ্ঞানীদের মাথার চুল খাড়া হওয়ার জোগাড়। ইদানিং এল নিনোর দাপটে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে বাড়তি তাপ মুক্ত হচ্ছে বায়ুমণ্ডলে। তার জেরেই চলতি বছরে চড়চড়িয়ে বেড়েছে পৃথিবীর তাপমাত্রা।

তবে কিছুটা আশার কথাও শুনিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। আবার ফিরে পাওয়া যাবে ১৯৮০ সালের ওজোনের স্তরের আয়তন। তবে তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে আরও ৫৫ বছর। ২০৭০ সালে ফিরে পাওয়া যাবে ওজোন স্তরের আগেকার চেহারা। তার জন্য অবশ্য দূষণ রোধের লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে হবে আমাদের।

আন্টার্কটিকায় এএফপি-র তোলা ছবি।