ইরান : বিনিয়োগকারীরা আসছে কিন্তু বিনিয়োগ আসছে না
হুমায়ুন সাদেক চৌধুরী।
ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা উঠে গেছে। মনে করা হচ্ছিল, নিষেধাজ্ঞা উঠলেই বিপুল সম্ভাবনার এ দেশটিতে ব্যাপকভাবে বিদেশি বিনিয়োগ আসবে।
তাতে আরো চাঙ্গা হবে ইসলামী প্রজাতন্ত্রটির অর্থনীতি। কিন্তু যেমনটি আশা করা হয়েছিল, বাস্তবে তেমনটি হয়নি। বিদেশি
বিনিয়োগকারীরা আসছেন, ঘুরছেন, দেখছেন এবং ফিরে যাচ্ছেন। কিন্তু প্রত্যাশামাফিক বিনিয়োগ আসছে না।
এ পরিস্থিতির কথা স্বীকার করেন দেশটির শীর্ষ ব্যবসায়ীরাও। ইরানের ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মোহাম্মাদ মেহদি
বেহকিশ গত বছরও ব্যাপক আশাবাদী ছিলেন। তিনি হতাশ নন এখনও, তবে স্বীকার করেছেন যে, ইরানে বিনিয়োগে ইচ্ছুক বিদেশির সংখ্যা
একেবারেই কম।
কেন এমনটি হচ্ছে – জানতে চাইলে বেহকিশ বলেন, ইরানে বিনিয়োগের সম্ভাবনা কিন্তু বিশাল। কারণ, এদেশে রয়েছে সাড়ে সাত কোটি তরুণের
এক বিশাল জনগোষ্ঠী। এদের বিরাট অংশই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে উচ্চ শিক্ষাপ্রাপ্ত। এতো সম্ভাবনা সত্ত্বেও বিদেশি বিনিয়োগকারীরা এদশেবিনিয়োগ করছেন না। কারণ, তারা হয় ভীত, নতুবা উদ্বিগ্ন। বেহকিশ বলেন, অবশ্য তাদের উদ্বিগ্ন হওয়ারই কথা।বেহকিশ ভুল বলেননি। ইরানের সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোই দেশটির ব্যবসা- বাণিজ্যের বড় পরিচালক। যেমন, আবাসন ব্যবসার প্রধান নিয়ন্ত্রক হলোবিপ্লবী গার্ড বাহিনী। আন্তর্জাতিক অবরোধের সময় টিকে থাকার জন্য ব্যবসায়ীদের অনেক নিয়মকানুন অমান্য করতে হয়েছে। আর এটা এখন
‘অভ্যাসে’ পরিণত হয়েছে।
বেহকিশ বলেন, এই অভ্যাসটি আমাদের অনেক ক্ষতি করেছে।
ক্ষতি-যে করেছে, তা জানা যায় ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের রিপোর্টেও
। তাদের ২০১৫ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আফগানিস্তানের মতো চরম না
হলেও রাশিয়ার মতোই দুর্নীতি আছে ইরানে।
এ অবস্থায়ও হতাশ নন বেহকিশ। তাঁর কথা, আমাদের এ থেকে ফিরে আসতে হবে। বিশ্বায়ন একাজে আমাদের সহায়তা করতে পারে।
বেহকিশ আশা করছেন, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় যোগদানের মতো অনেকগুলো পদক্ষেপ নিতে পারে ইরান। বোঝা গেলো, তিনি আশা করছেন যে,
উচ্চতর গুণগতমানটি বহির্বিশ্ব থেকেই আসতে পারে। এ তো গেলো একজন ব্যবসায়ী নেতার ভাবনা। ইরানের সাধারণ ব্যবসায়ীরা
কী ভাবছেন? রাজধানী তেহরানের এক শপিং মলে একটি দোকান চালান দু’ ইরানি নারী – সারা নোঘানি ও পোয়া শাহসিয়াহ। তারা জানান,
অবরোধ উঠে যাওয়ার পরও গত এক বছরে ব্যবসার তেমন কিছু উন্নতি হয়নি। হাসতে-হাসতে তারা বলেন, বরং আরো খারাপ হয়েছে।