এক মুগ্ধ কিশোরের কথা
হুমায়ুন সাদেক চৌধুরী ।
তারিখটা এখনো মনে আছে – ১৯৭৪ সালের ৭ নভেম্বর। তখন আমি ক্লাস এইটে পড়ি। আর দুনিয়ার যত ”আউট বই” ও আর পত্রপত্রিকা হাতের নাগালে পেলেই গোগ্রাসে গিলি। সেই সুবাদে সাপ্তাহিক ”বেগম” পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে ছাপা হতে থাকা উপন্যাস ”বং থেকে বাংলা”ও আমার আগ্রহের বিষয়বস্তু হয়ে যায়। সারা সপ্তাহ পথ চেয়ে থাকি, কখন ”বেগম” পত্রিকাটি আসবে আর আমি ”বং থেকে বাংলা” পড়তে পাবো। উপন্যাসটির লেখক রিজিয়া রহমান। মনে-মনে ভাবি, ইস, কী সুন্দরই না লিখেন উনি! একদিন ”বেগম” পত্রিকাতেই উনার ঠিকানা পেয়ে গেলাম – সম্ভবত ৩৮, বড় মগবাজার, ঢাকা। আর কী, তাঁকে একখানা চিঠি লিখে ফেললাম। তাঁর লেখা আমার কতো ভালো লাগে, সে-কথাই লিখেছিলাম মনে হয়। তার অনেকদিন পর চিঠি এলো; আমার ”রিজিয়া আপা”র চিঠি। পুরনো ডায়েরির পাতায় দু’পৃষ্ঠার চিঠি। তিনি লিখেছেন, মাত্র অষ্টম শ্রেণীতে পড়েও তুমি যেরকম সুন্দর বাংলা লিখেছ…। বার-বার পড়ি সে-চিঠি। এতো বড় একজন লেখিকা আমার চিঠির জবাব দিয়েছেন, বিশ্বাসই হতে চায় না। তারপর কতো কাল কেটে গেছে। বহুকাল হয়, সাংবাদিকতা পেশাসূত্রে আমিও ঢাকাবাসী। তাঁর আরো অনেক বই পড়েছি, তাঁর কথা কতো মনে পড়েছে, কিন্তু কখনো তাঁর সামনে গিয়ে দাঁড়ানো হয়নি। জানি, অষ্টম শ্রেণীর সেই মুগ্ধ কিশোর পাঠকটিকে ”আপা” নিশ্চয়ই ভুলে গেছেন, কিন্তু ”সেই কিশোর” আজও তাকে ভোলেনি। আজ (২২ ডিসেম্বর-২০১৭) ”কালের কণ্ঠ” পত্রিকায় দীর্ঘ সাক্ষাৎকার পড়ে তাঁকে মনে পড়লো। আপা, আপনার কখনো-না-দেখা ছোট ভাইটির সালাম ও শ্রদ্ধা গ্রহণ করুন।