এশিয়া কাপ: মহাদেশীয় ক্রিকেটে শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের লড়াই

আর মাত্র কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা। এর পরই পর্দা উঠবে ১৪তম এশিয়া কাপের। শুরু হবে মহাদেশীয় ক্রিকেটে শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের এ লড়াই। দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ-শ্রীলংকা ম্যাচের মধ্য দিয়ে শুরু হবে এ লড়াই। গতকাল বেলা ১টায় ম্যাচের টিকিট বিক্রিও শুরু হয়েছে, যা পাওয়া যাচ্ছে আয়োজক দেশের ইউএই এক্সচেঞ্জের বুথগুলোয়।

গত রোববার এশিয়া কাপে অংশ নিতে ঢাকা ত্যাগ করেন মাশরাফিরা। তামিম ইকবাল ভিসা জটিলতায় পড়ে দুদিন পর যোগ দেন দলের সঙ্গে। ২৩ বছর আগে আকরাম খান নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ দল খেলেছিল দুবাইয়ে। এবারের দলটির দুবাইয়ে খেলার অভিজ্ঞতা নেই। যদিও ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের কারণে ব্যক্তিগতভাবে সাকিব-তামিম-মাহমুদউল্লাহ-মুশফিক-মুস্তাফিজ এখানে খেলে গেছেন। এবার দেশের মাটিতে নয়দিন ও দুবাইয়ে পাঁচদিনের প্রস্তুতিকে সম্বল করেই বাংলাদেশকে লড়াইয়ে নামতে হবে।

তবে এবারের লড়াইটা যে বাংলাদেশের জন্য সহজ হবে না, তা জানেন দলের ক্রিকেটাররা। অতীতের এশিয়া কাপের ১৩টি ফাইনালের ১১টিতে খেলেছে লংকানরা। যেখানে পাঁচবার শিরোপা জয়ের বিপরীতে রানার্সআপ হয়েছে ছয়টিতে। ২০০৮ থেকে ২০১৬ সালে পাঁচ আসরে দুবার শিরোপা জয়ের স্বাদ পেয়েছে। পাকিস্তান জিতেছিল একটিতে। সেখানে বাংলাদেশের অর্জন বলতে কেবল ঘরের মাঠে এশিয়া কাপের তিন আসরের মধ্যে দুটিতে ফাইনাল খেলা। পাকিস্তান ও ভারতের কাছে হেরে রানার্সআপের স্বাদ নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে।

দুবাইয়ে টুর্নামেন্ট বলে দুশ্চিন্তা আছে উইকেট নিয়েও। বুধবার অনুশীলন শেষে সংবাদমাধ্যমে দেয়া সাক্ষাত্কারে দলের ওপেনার তামিম ইকবাল বলেন, ‘আমার দুবাইয়ে খেলার পূর্ব অভিজ্ঞতা রয়েছে। কারণ আমি পাকিস্তান সুপার লিগে খেলেছি। তবে আমার মনে হয়, উইকেট ওই রকম থাকবে না এবার। মাঝে মধ্যে এখানে সত্যি ভালো ব্যাটিং উইকেট হয়। আবার মাঝে মধ্যে বোলাররাও— পেসার ও স্পিনাররা ভালো সাহায্য পায়। আমরা দেখতি চাচ্ছি, আমরা কেমন উইকেট পাই।’

যে ভেনুতে বাংলাদেশ খেলতে নামবে, সেখানে এশিয়া কাপের জন্য দুটো সম্পূর্ণ নতুন উইকেট তৈরি করা হয়েছে বলে গণমাধ্যমে জানিয়েছেন ভেনুটির প্রধান কিউরেটর টবি লুমসডেন। তিনি বলেন, ‘এবারের এশিয়া কাপে আবহাওয়া একটা বড় প্রভাব ফেলতে পারে। এখানে এশিয়ার কাপের ফাইনালসহ ৮টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। আমরা ভালো ক্রিকেট ম্যাচ দেখার জন্য ভালো উইকেট তৈরি করেছি। সেখানে দুই দলই সমান সুযোগ পাবে ব্যাটিংয়ে-বোলিংয়ে। এ গ্রীষ্মে দুটো সম্পূর্ণ নতুন উইকেট তৈরি করেছি আমরা। ব্যস্ত ক্রিকেটসূচির কথা মাথায় রেখেই মূলত এ উইকেটগুলো তৈরির উদ্দেশ্য। ঐতিহ্যগতভাবে এ উইকেট ২৬০ রান হওয়ার মতো। আশা করি, আমরা এ নতুন উইকেটে ২৭০ থেকে বেশি রান পাব। এ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কিন্তু এর চেয়ে ভালো উইকেট বানানো কঠিন।’

এদিকে টুর্নামেন্ট শুরুর আগে বাংলাদেশকে ভাবাচ্ছে তরুণ ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্স। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের সাফল্যের প্রায় সবটার মূলে দলের সিনিয়র ক্রিকেটাররা। সর্বশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরেও ওয়ানডে ও টি২০ সিরিজে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন অভিজ্ঞরা। তরুণদের জন্য ঘুরে দাঁড়ানোর মূল মঞ্চ হতে পারে এশিয়া কাপ। তামিম-সাকিব-মুশফিক-মাশরাফিদের পাশে তারাও অবদান রাখতে পারলে এশিয়া কাপে সাফল্যলাভে বাংলাদেশের সম্ভাবনা অনেকটাই বেড়ে যাবে।

এছাড়া গ্রুপে থাকা দুটি দলই চোখ রাঙাচ্ছে টাইগারদের। আফগানিস্তান ও শ্রীলংকার বিপক্ষে সময়টা খুব ভালো কাটেনি বাংলাদেশের। এছাড়া কন্ডিশন বিবেচনায় নিলে এ দুদল অভিজ্ঞতায়ও অনেক এগিয়ে থাকবে বাংলাদেশের চেয়ে। তাই মাশরাফিদের চ্যালেঞ্জটা চতুর্মুখী। তবে নিজেদের সেরা ক্রিকেটটা উপহার দিতে পারলে শিরোপা হাতে নিয়ে ঘরে ফেরা খুব অসম্ভব কোনো স্বপ্নও না। বণিক বার্তা ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.