এ যেন পাখির জাদুঘর!


ফুল, পাখি আর জোনাকীর সৌন্দর্য কাকে না মুগ্ধ করে। বিশেষ করে গ্রাম-বাংলার সবুজ-শ্যামলীময় পরিবেশে বেড়ে ওঠা মানুষের যাপিত জীবনে এমন নান্দনিকতা যে নিত্যসঙ্গী।

দিন যায়, দিন আসে— আসা-যাওয়ার প্রতিক্ষণে প্রকৃতি মেলে ধরে তার রূপ-বৈচিত্র্য। সে যে এক অমোঘ আহ্বান! সেই আহ্বানে সাড়া দিতে বাঙালীর মন যে ব্যাকুল হয়ে ওঠে। তাইতো নগরায়নের চাদরে আবদ্ধ থাকা মানুষেরাও বুক ভরে দম নিতে সবুজের আহ্বানে ছুটে চলে পথে, পার্কে, গাঁয়ের পথে।

এ বাস্তবতার আরেক রূপ দেখা গেল জাতীয় জাদুঘরের নলিনীকান্ত ভট্টশালী প্রদর্শনীলয়ে। নানা রূপ ও রঙের পাখির আলোকচিত্র এবং স্টাফিং নিয়ে চলমান প্রদর্শনীতে শহুরে মানুষের এত ভীড় ও কৌতূহল দেখেই তা স্পষ্ট হওয়া যায়।

প্রকৃতির স্বাভাবিকতা ধারণ করা খুব সহজ বিষয় নয়। আর অন্যের কাছে তুলে ধরা— সে তো আরও জটিল। এ জটিল কাজকে চিত্রে ধারণ করেছে দেশের প্রায় ৪৬ জন আলোকচিত্রী। তারা গ্রাম বাংলার পথে প্রান্তরে ঘুরে ১০২ প্রজাতির পাখি ও তাদের যাপিত জীবনের চিত্র তুলে ধরেছেন। এ-সব চিত্রকে দর্শকের সামনে এনেছেন ‘বাংলাদেশ বার্ড ক্লাব’। এ ছাড়া জাদুঘরের সংগ্রহে থাকা ৩১টি পাখির স্টাফিংকেও যুক্ত করেছে জাদুঘর কর্তৃপক্ষ।

কেবলই যে গ্যালারির দেয়ালের ফ্রেমে ফ্রেমে বা স্টাফিং করা পাখি গাছের ডালে ঝুলছে তা নয়। প্রদর্শনীটি সকল প্রকার দর্শনার্থীদের উপজীব্য করে তুলতে রয়েছে প্রামাণ্যচিত্র ও নির্ভরযোগ্য গাইডও। যেখানে মিলছে নানাবিধ জিজ্ঞাসার সমাধান।

কেউ দেখছেন পাখি, কেউ বা দেখছেন পাখির বাসস্থল। অর্থাৎ যে পাখি যেখানে শোভা পায় সেখানের পরিবেশ ও প্রতিবেশ তুলে ধরতে ভুল করেনি আলোকচিত্রীরা। ফলে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় দর্শকের জন্য এ প্রদর্শনী উৎসাহ ও গভীর অনুপ্রেরণার।

বড় গুলিন্দা, রাঙ্গামুরী, বড় মরালী, ভুটিহাঁস, কোকিল, বসন্ত বাউরী, কালো মাথা মুনিয়া, পাতিহাঁস, টিয়া, ভাত শালিকসহ নানা-রকমের পাখির চিত্রসমাবেশ দেখে মনে হবে এটা কেবল প্রদর্শনী পাখির জাদুঘর!

আট দিনের প্রদর্শনীটি শুরু হয়েছে ৪ ডিসেম্বর। চলবে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। বৃহস্পতিবার জাদুঘরের সাপ্তাহিক ছুটির দিন বাদে প্রর্দশনী সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.