ওকে কখনো অস্ত্র হাতে দেখিনি

বিমান ছিনতাই নাটকের অবসান হলেও আলোচনা থেমে নেই। নানামুখী আলোচনা। কমান্ডো অভিযানে ছিনতাই চেষ্টাকারী পলাশ নিহত হওয়ার পর তার সাবেক স্ত্রী সিমলাকে নিয়ে এখন অন্তহীন আলোচনা। বলা হচ্ছে, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত নায়িকা সিমলা কেন পলাশকে বিয়ে করেছিলেন? কেনই বা তাদের সংসার ভেঙে গেল? এ নিয়ে কৌতূহল চারদিকে। এই কৌতূহল থেকেই সিমলার মুখোমুখি হয় মানবজমিন। বর্তমানে বিদেশে অবস্থানরত সিমলা জবাব দিয়েছেন অনেক প্রশ্নের। বলেছেন, কেন যে তাকে বিয়ে করলেন- এটা ভাবতেও অবাক লাগে। শরমও লাগছে।

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টা। নির্দিষ্ট নাম্বারে ফোন করতেই রিসিভ করলেন। বললেন সিমলা বলছি। মানবজমিন থেকে কামরুজ্জামান মিলু। কেমন আছেন? ঘুম ঘুম চোখে সিমলা বললেন আছি, সবই তো জানেন। যাই হোক, কয়েক মাস ধরে মুম্বই রয়েছি। সিনেমার শুটিং নিয়ে খুবই ব্যস্ত। ছবির কাজ প্রায় শেষ বলতে পারেন। এখন শুধু পোস্টার ও ফটোসেশনের কিছু কাজ বাকি রয়েছে। মা ছিলেন সঙ্গে। ক’দিন আগে মা ঢাকায় চলে গেছেন। কি করে পলাশের সঙ্গে জানাজানি? আগে চিনতাম না।

২০১৭ সালের ১২ই সেপ্টেম্বর একজন পরিচালকের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে মাহাদির সঙ্গে কথা হয়। প্রথম আলাপেই ওর প্রতি কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়ি। কয়েক মাস কথা চলে। দেখা-সাক্ষাৎও হয়। এক সকালে সিদ্ধান্ত নেই মাহাদি ওরফে পলাশকে বিয়ে করবো। পলাশের বাবা-মা রাজি ছিলেন না, পরে জেনেছি। তাদের ভাষায়, ওতো এক বাউন্ডেলে। কখন কি বলে? মিথ্যা বলে বলে মানুষকে আকৃষ্ট করে। কখনো গার্মেন্ট ব্যবসায়ী। কখনো বিলেত প্রবাসী। কখনো আইটি বিশেষজ্ঞ। ফেসবুক আইডিতে চমকপ্রদ যতসব তথ্য। এসব দেখেই কি বিয়ের সিদ্ধান্ত নিলেন? বলতে পারেন তাই।

কিন্তু আমি জানতাম না ও এর আগে আরেকটা বিয়ে করেছে। ওর কোনো কথাই মিল নেই। মিথ্যুক যাকে বলে। বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত কেন নিলেন? কি করার ছিল বলুন? ওর গ্রামের বাড়িতে যখন গেলাম তখনই বুঝতে পেরেছি আমার সর্বনাশ হয়ে গেছে। ওর বাবা-মা সাদাসিধে মানুষ। গ্রামের লোকজনের মুখে এমন সব কথা শুনলাম- যা আমাকে কষ্ট দেয়। তবুও সংসার করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু পারলাম না। অনেক কিছুই আছে। এখন সব কিছু বলবো না। তবে এটুকু বলছি, সে বিবাহিত এবং একটি সন্তান রয়েছে জানার পর আর স্থির থাকতে পারি নি। গত বছরের ৬ই নভেম্বর বনানীর একটি কাজী অফিসে গিয়ে তালাকনামায় সই করি। জানিয়ে দেই, গুডবাই পলাশ। এরপর ভারতে চলে আসি।

এখনো আছি। সিনেমা নিয়ে ডুবে আছি বলতে পারেন। সিমলা বললেন, পলাশকে নানাভাবে দেখেছি। কিন্তু কখনো অস্ত্র হাতে দেখি নি। বিমান ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত হয়েছে দেখে শুধু ভেবেছি। এত বড় সর্বনাশ করলো দেশের। এটা দুঃখজনক, লজ্জাজনক। কেউ যদি আমার কাছে পলাশ সম্পর্কে আরো তথ্য জানতে চান আমি বলবো। অবশ্যই বলবো। আমার কাছে দেশ বড়। পলাশের সঙ্গে সর্বশেষ কবে কথা হয়েছিল? কোরবানির ঈদের দু’সপ্তাহ আগে। তেমন কোনো কথা হয়নি। তখন শুধু বলেছিল দেশের বাইরে যাবে। কেন যাবে, কোথায় যাবে- তা বলেনি।

অন্য এক টেলিভিশনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে সিমলা বলেন, ওর সঙ্গে সংসার করা হয়নি। ফোনেই বেশির ভাগ আলাপ-আলোচনা হতো। সে সব সময় বলতো বিদেশে রয়েছে। একদিন ওর পাসপোর্ট দেখে তাজ্জব হয়ে গেলাম। পাসপোর্টে কোনো ভিসা নেই। বলতো ব্যারিস্টারি পড়ে। এরও কোনো প্রমাণ মেলে নি।
সৌজন্যে: দৈনিক মানবজমিন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.