ওমান অধিনায়ক সুলতান আহমেদের বাংলাদেশ-স্মৃতি
টি ২০ বিশ্বকাপের প্রথম পর্বের শেষ ম্যাচে আজ বাংলাদেশের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে দারুণ রোমাঞ্চিত ওমান অধিনায়ক সুলতান আহমেদ। পরের রাউন্ডে খেলার সম্ভাবনা তো আছেই। আরেকটি বড় কারণ, তার বাংলাদেশ নিয়ে নতুন-পুরনো কিছু স্মৃতি।
বিস্ময়কর হলেও সত্যি, পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে দেশের বাইরে সুলতান প্রথম খেলেছিলেন বাংলাদেশেই। সেটিও প্রায় ১৭ বছর আগে। সুলতানের জন্ম ও বেড়ে ওঠা পাকিস্তানের করাচিতে। ক্রিকেটের শুরুও সেখানেই। নব্বইয়ের দশকে ঢাকা প্রিমিয়ার লীগে ছিল পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের দাপট। প্রতি ক্রিকেট মৌসুমেই ঝাঁকে ঝাঁকে বাংলাদেশে আসতেন পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা। ১৯৯৯ সালে সেই ক্রিকেটারদের একজন ছিলেন সুলতান। শুক্রবার ধর্মশালায় নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে বৃষ্টিতে পণ্ড ম্যাচের সংবাদ সম্মেলন শেষে ওমানের ৩৮ বছর বয়সী উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান ফিরে গেলেন বাংলাদেশে খেলে যাওয়ার সেই সময়টায়, ‘আমি তখন কিছুদিন হল খেলা শুরু করেছি। অনেক পাকিস্তানি ক্রিকেটার তখন বাংলাদেশে খেলত। আমির হানিফ, রাশেদ হানিফরা নিয়মিতই খেলত। ওরা দুই ভাই-ই মূলত আমাকে নিয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশে। ট্রায়ালে দেখার পর মোহামেডান দলে নিয়েছিল আমাকে, শুনেছিলাম অনেক বড় দল। তবে একটি ম্যাচ খেলার পরই ফিরতে হয়েছিল পাকিস্তানে, এখানে ঘরোয়া লীগের দল আমাকে চাইছিল।’ বয়স কম ছিল, সময়টাও প্রায় দেড় যুগ আগে। খুব ভালো করে মনে করতে পারেন না অনেক কিছুই। সেই সুলতান কিছুদিন আগে আবার ক্রিকেট খেলে এলেন বাংলাদেশ থেকে। তবে মাঝের এই সময়ে বদলে গেছে তার জীবনের গতিপথ। একসময় পাকিস্তানের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার স্বপ্ন দেখা সেই তরুণ বাস্তবতার নানা বাঁক পেরিয়ে এখন ওমানের অধিনায়ক।
সম্প্রতি এশিয়া কাপের বাছাইপর্বে খেলেছেন বাংলাদেশে। ১৭ বছর আগের স্মৃতি যৎসামান্য যা মনে আছে, তার সঙ্গে এখন মেলাতে পারেন না কিছুই, ‘এটুকু মনে আছে, এবার যে দুই মাঠে খেললাম (মিরপুর ও ফতুল্লা), সেবার সেই মাঠে খেলিনি। এত ভালো স্টেডিয়াম, এত সুযোগ-সুবিধা ছিল না। এবার তো আমরা এশিয়া কাপ বাছাই খেলতে গিয়ে সবাই বেশ উপভোগ করেছি। আমাদের খেলা দেখতেও বেশ দর্শক হয়েছে।’ এশিয়া কাপে বাছাই উতরাতে পারেননি ওমান, তবে এখন পর্যন্ত এই বিশ্বকাপের বড় চমক তারা। বড় টুর্নামেন্টে প্রথম আবির্ভাবেই হারিয়ে দিয়েছে আইসিসির টুর্নামেন্টগুলোর নিয়মিত নাম ও বড় দলগুলোর যম আয়ারল্যান্ডকে। বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত নেদারল্যান্ডস ম্যাচ থেকেও মিলেছে একটি পয়েন্ট। এই গ্রুপের সবচেয়ে দুর্বল দল ভাবা হচ্ছিল যাদের, সেই ওমানই এখন বাংলাদেশের পথের কাঁটা। সুলতান জানালেন, সবাই চমকে গেলেও বিশ্বকাপে ভালো করার আত্মবিশ্বাস তাদের ছিল, ‘আজকের এই অবস্থানের আশা আমাদের ছিল। আত্মবিশ্বাসী ছিলাম আমরা। স্কটল্যান্ড, আয়ারল্যান্ডে আমরা ভালো খেলেছিলাম, ওদেরকে হারিয়েছিলাম। হংকংকে সিরিজ হারিয়েছিলাম। বিশ্বাসটা তাই ছিল।’
এখন এমনকি গ্রুপের শেষ ম্যাচে আজ বাংলাদেশকে হারিয়ে সুপার টেন পর্বে খেলার স্বপ্নও দেখছেন ওমান অধিনায়ক, ‘নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে খেলে জিতলে আরও ভালো লাগত। তবে আমরা উচ্ছ্বসিত যে এখনও আমরা ভালো অবস্থানে আছি। পরের ম্যাচে বাংলাদেশকে হারাতে আমরা আত্মবিশ্বাসী। বিশ্বাস আছে বলেই বলছি, অবশ্যই আমরা বাংলাদেশকে হারাতে পারি।’ বিডিনিউজটোয়েন্টিফোর ডটকম।