কৈশোরে পরিবারের কাছে গোপন রাখা ৭ বিষয়

সন্তানরা যখন শৈশব বয়স পার করে কৈশোরে আসে তখন তাদের মনেরও পরিবর্তন ঘটে। এই সময় তাদের সব কথা পরিবারের কাছে খুলে বলে না। কিছু কিছু কাজ বাবা-মায়ের কাছে লুকিয়ে করে, যা জানানোর প্রয়োজন মনে করে না কিংবা জানাতে ভয় পায়। অথবা যা করতে চায় তা হয়তো বাবা-মা বা পরিবার পছন্দ করে না বলে সেই কাজ কারতে পারে না। তাই পরিবারের কাছে গোপন রাখে। তবে এই বয়সে গোপনীয়তা থাকবে এটাই স্বাভাবিক, সে ক্ষেত্রে সন্তানের গোপনীয়তাকে মূল্য দিতে হবে এবং তার সঙ্গে তাদের আচরণও খেয়াল রাখতে হবে। সন্তানরা মূলত যে বিষয়গুলো বেশি বাবা-মায়ের কাছে গোপন রাখে সেগুলো তুলে ধরা হলো-

নিজের লুকায়িত কষ্টের কথা

কৈশোরে এমন কিছু বিষয় আছে যেগুলো নিজেকে খুব কষ্ট দেয়, এই কষ্টের কথাগুলো এ সময় বাবা-মায়ের কাছে লুকিয়ে রাখে। কিছুটা বললেও খোলামেলাভাবে বলতে চায় না, সংকোচবোধ করে। নিজের কষ্ট নিজের কাছেই রেখে দিয়ে দুঃখ অনুভব করে, যা শরীরের উপর বিশেষ প্রভাব পড়ে। তাই এক্ষেত্রে বাবা-মায়ের উচিত সন্তানের সঙ্গে ফ্রি হওয়া।

প্রেমের সম্পর্ক

কৈশোরে প্রেমের সম্পর্ক থাকাটা খুবই স্বাভাবিক একটা বিষয়। ভয়ে অনেক ছেলেমেয়ে তাদের এই সম্পর্কের কথা বাবা-মায়ের কাছে গোপন রাখে। এই বিষয়টি প্রায় সব সন্তানেরা লুকানোর চেষ্টা করে। এই সমস্যা সমাধানের একমাত্র উপায় হলো, সন্তানদের স্বাধীনতা দিন, যেন যে কোনও বিষয় আপনাদের সঙ্গে সহজেই তারা বলতে পারে।

গোপন পার্টি

যখন মা-বাবারা বাসায় থাকেন না তখনই ছেলেমেয়েদের মাথায় আসে পার্টি দেওয়ার কথা। এমনকি বাইরেও মাঝে মাঝে পার্টি দেয় সন্তানরে। পার্টির কথাটা বাবা-মায়ের কাছে গোপন রাখে। কারণ অনেক বাবা-মা পার্টি করতে পছন্দ করেন না। কারণ কিশোর বয়স আর গোপন পার্টির যোগসূত্র বহুলকাল আগে থেকেই। তারা যদি মনে করে তাদের স্বাধীনতা নষ্ট করা হচ্ছে তাহলে তারা কোনোকিছুই তাদের মা-বাবার কাছে খুলেও বলবে না। আর পার্টির কথা তো একেবারেই না।

ক্লাস ফাঁকি দেওয়া

সাধারণত কিশোররা অকারণেই ক্লাস ফাঁকি দেয়। কিন্তু বিষয়টি তারা তাদের পরিবারকে জানাতে চায় না। তাই মা-বাবার অবশ্যই বিষয়টিতে খেয়াল রাখা উচিত। ক্লাস ফাঁকি দিয়ে তারা কী করে এই বিষয়ে তাদের সতর্ক হওয়া উচিত। সন্তানদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণই একমাত্র এই সমস্যার সমাধান করতে পারে।

প্রযুক্তির অপব্যবহার

কিশোর-কিশোরীরা আজকাল সারাক্ষণ ফোন, ফেসবুক, চ্যাটিং নিয়েই ব্যস্ত থাকে। কিন্তু তাদের কারা কারা বন্ধু, কাদের সঙ্গে চ্যাটিং করছে- এসব বিষয় কখনোই মা-বাবাকে বলে না। প্রত্যেক মা-বাবারই এই বিষয়ে নজর রাখা উচিত। কারণ এই ছোট ছোট গোপন কথাগুলোর মাঝেই বড় বিপদের আশঙ্কা রয়েছে।

কিছু বন্ধুর কথা লুকানো

সব বন্ধুই যে ভালো হবে এমনটা ভাবা কিন্তু ঠিক না। ভালো-মন্দ দেখে তো আর বন্ধুত্ব হয় না। কিন্তু মা-বাবারা সন্তানদের কিছু বন্ধু থেকে সব সময় এড়িয়ে চলতে বলেন। যা সন্তানদের জন্য খুবই কষ্টসাধ্য একটি বিষয়। কারণ হুট করেই তো আর বন্ধুত্ব নষ্ট করা যায় না। এ ধরনের পরিস্থিতিতে তারা তাদের মা-বাবার কাছ থেকে সে সব বন্ধুর কথা লুকানোর চেষ্টা করে।

খারাপ অভ্যাস

কৈশোরে ছেলেমেয়েরা সবসময়ই নতুন কিছু নিয়ে পরীক্ষা করতে আগ্রহী থাকে। এই বয়সেই তাদের বিভিন্ন নেশা জাতীয় দ্রব্যের প্রতি আসক্তি হতে পারে। যা যে কোনও মূল্যেই সন্তানরা তাদের মা-বাবার কাছ থেকে লুকাতে চায়। তাই সন্তানদের সঙ্গে বেশি সময় কাটানোর চেষ্টা করুন। তাদের বুঝিয়ে খারাপ পথ থেকে বিরত রাখুন। না হলে একসময় অনেক বড় সমস্যায় পড়ে যেতে পারে আপনার সন্তান।

সূত্র: বোল্ডস্কাই

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.