গর্ভপাত নিষিদ্ধ আইন ঠেকাতে ‘যৌন ধর্মঘটে’র ডাক দিলেন অভিনেত্রী অ্যালিসা মিলানো
অভিনেত্রী ও মি টু অ্যাক্টিভিস্ট অ্যালিসা মিলানো গর্ভপাত বিষয়ক একটি আইনের প্রতিবাদ স্বরূপ নারীদের ‘সেক্স স্ট্রাইক বা যৌন ধর্মঘটে’ অংশ নেয়ার আহবান জানিয়েছেন।
এক টুইট বার্তায় তিনি লিখেছেন, “মেয়েদের নিজের শরীরের ওপর আইনগত অধিকার না পাওয়া পর্যন্ত আমরা গর্ভধারণের ঝুঁকি নিতে পারিনা”।
যুক্তরাষ্ট্রের রাজ্যগুলোর মধ্যে সর্বশেষ জর্জিয়া গর্ভপাতের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করে আইন প্রণয়ন করেছে।
কিন্তু এর প্রতিবাদে যৌন সম্পর্ক থেকে বিরত থাকার যে আহবান মিস মিলানো জানিয়েছেন তা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া যাচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
অবশ্য #সেক্স স্ট্রাইক টুইটারে যুক্তরাষ্ট্রে অনেকে তাদের টুইটে দিতে শুরু করেছেন।
কথিত ‘হার্ট-বিট বিল’ জর্জিয়ার গভর্নর ব্রায়ান ক্যাম্প মঙ্গলবার স্বাক্ষর করেছেন।
আগামী বছরের প্রথম দিন থেকে আইনটি কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে।
অ্যালিসা মিলানো তার টুইটে লিখেছেন, “আমাদের প্রজনন অধিকার বিলুপ্ত হতে যাচ্ছে। যতদিন শরীরের ওপর নারীর আইনগত নিয়ন্ত্রণ না আসবে ততদিন আমরা গর্ভধারণের ঝুঁকি নিতে পারিনা। শরীরের স্বায়ত্তশাসন ফিরে না পাওয়া পর্যন্ত যৌন সম্পর্ক করা থেকে বিরত থেকে আমার সাথে যোগ দিন”।
বিলটিতে কী আছে? কেন এই বিল নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে?
নতুন এ আইনে মায়ের গর্ভধারণের পর ভ্রূণের হার্ট-বিট পাওয়ার পর গর্ভপাত নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
সাধারণত গর্ভধারণের ছয় সপ্তাহ পর গর্ভজাত শিশুর হার্ট-বিট তৈরি হয়।
যদিও অনেক সময় নারীরা কিছুটা লক্ষ্মণ ছাড়া ছয় সপ্তাহে টেরই পাননা যে তিনি গর্ভধারণ করেছেন।
এমনকি মর্নিং সিকনেস নামে গর্ভধারণের পর যে শারীরিক লক্ষ্মণ প্রকাশ পায় তাও নয় সপ্তাহ সময় লাগে।
নতুন এ আইনটি অবশ্য আদালতে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে।
এর আগে কেন্টাকিতে একজন বিচারক এমন একটি আইন আটকে দিয়েছিলেন।
মিসিসিপি রাজ্যেও এমন আইন পাশ হয়েছে তাও আদালতে চ্যালেঞ্জ হচ্ছে।
যৌন ধর্মঘট বলতে কী বোঝায়?
মিস মিলানো শনিবার টুইটটি করেছেন। এরপর তিনি নিজে ও তার তৈরী হ্যাশট্যাগ সেক্স স্ট্রাইক টুইটারে অনেকটা ট্রেন্ডিং হয়ে উঠেছে।
প্রায় ৩৫ হাজার লাইক আর ১২ হাজার বার রি-টুইট হয়েছে তার টুইট।
অভিনেত্রী বেটি মিডলারও মিস মিলানোকে সমর্থন করে টুইট করেছেন।
তিনি লিখেছেন, “আমি আশা করি জর্জিয়ার নারীরা যৌন সম্পর্ক করা থেকে বিরত থাকবেন এমন লজ্জার বিষয়টি বাতিল না হওয়া পর্যন্ত”। যদিও অনেকে আবার এ ধারণার সমালোচনাও করছেন।
এর আগে আইনটি পাশের সময় ৫০ জন অভিনেতা ওই রাজ্যে ফিল্ম ও টেলিভিশন প্রডাকশন বয়কটের প্রস্তাব দিয়েছেন।
অন্য অভিনেতারাও বিষয়টি নিয়ে সোচ্চার হচ্ছেন।
যদিও অনেকেই আবার এর বাইরে রয়েছেন।
মোশন পিকচার্স এসোসিয়েশন এর মুখপাত্র ক্রিস অর্টম্যান এক বিবৃতিতে বলেছেন জর্জিয়ায় ফিল্ম ও টেলিভিশন প্রডাকশনের সাথে ৯২ হাজার চাকরীর বিষয় জড়িত।
গভর্নরের অফিসের তথ্য অনুযায়ী রাজ্যের ফিল্ম ও টেলিভিশন প্রডাকশন ইন্ডাস্ট্রি ২০১৮ সারে দুই দশমিক সাত বিলিয়ন ডলার আয় করেছিলো।
বিবিসি বাংলা