‘গান এখন অনেক সহজ হয়ে গেছে’

আছেন আমার মোক্তার আছেন আমার ব্যারিস্টার, জন্ম থেকে জ্বলছি, একবার যদি কেউ ভালবাসতো, এমনওতো প্রেম হয়সহ নিজের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে অসংখ্য জনপ্রিয় গান উপহার দিয়েছেন কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী সৈয়দ আবদুল হাদী। পাঁচ পাঁচ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন স্বীকৃতিস্বরূপ। একুশে পদকও পেয়েছেন এ বরেণ্য শিল্পী। বর্তমানে গান খুব বেছে বেছে করছেন হাদী। পাশাপাশি নিজের ষাট ও সত্তরের দশকের গানগুলো নিয়ে অ্যালবাম করছেন। তার বর্তমান সময় ও গানের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আজকের ‘আলাপন’ এ কথা বলেছেন সৈয়দ আবদুল হাদী। তার সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন ফয়সাল রাব্বিকীন
কেমন আছেন?
বেশ ভালো আছি। সুস্থ আছি সবার দোয়ায়। আর সুস্থ থাকাটাই সবচেয়ে বড় বিষয়।
বর্তমান সময় কিভাবে কাটছে?
এখন কাজ অনেক কমিয়ে দিয়েছি। বেছে বেছে অনুষ্ঠানগুলোতে গান পরিবেশন করছি। এর বাইরে চলচ্চিত্রেও প্লেব্যাক করছি। আর অ্যালবামের কাজও এগিয়ে নিচ্ছি।
নতুন অ্যালবাম প্রসঙ্গে বলুন। কাজ কতদূর?
অ্যালবাম নতুন। তবে গান কিন্তু পুরোনো। ষাট ও সত্তরের দশকে আমার গাওয়া অনেক গানই হারিয়ে যেতে বসেছে সংরক্ষণের অভাবে। সরকারি কিংবা বেসরকারিভাবে গানগুলো সংরক্ষণের কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। তাই সেগুলো অল্প অল্প করে নিজেই সংরক্ষণের কাজ করছি। এরই মধ্যে ১০-১২টি গানের রেকর্ডিংয়ের কাজ শেষ হয়েছে। খুব শিগগিরই তা একটি অথবা দুটো সিডিতে প্রকাশ করবো।
অনেকেই বলছেন এখনকার গান স্থায়িত্ব পাচ্ছে না। বেশি দিন টিকছে না। এর কারণ কি বলে মনে করেন?
আসলে গান এখন অনেক সহজ হয়ে গেছে। আমি বলবো অনেক তরল হয়ে গেছে। তাই তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যায়। আর গান স্থায়িত্বের জন্য তৈরি হচ্ছে না। এখানে সময়ের একটা প্রভাব আছে। গান তৈরি হচ্ছে সাময়িক আনন্দের জন্য। যার কারণে এখনকার গান তেমন একটা স্থায়িত্ব পাচ্ছে না। তবে ঢালাওভাবে সব গানকে আমি এমন মনে করি না।
এখান থেকে বেরিয়ে আসার উপায় কি?
এটা খুব কঠিন বিষয়। তবে সময়ের সঙ্গে চলতে আমার আপত্তি নেই। আপত্তি হলো গান এখন পুরোপুরি বিনোদন হয়ে গেছে। তবে আমার মূল আপত্তি হলো ভাষা, উচ্চারণ বিকৃতি ও নকল গানে। এটা অসহনীয় একটি বিষয়। এর মাধ্যমে মাতৃভাষাকে অপমান করা হচ্ছে। এটা অনেকেই এখন করছেন। এখান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। অতীতেও কিন্তু কোন কিছুর ছায়া অবলম্বন করে সেটাকে নতুনভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। দেখা গেছে সেটা আরও বেশি ভাল হয়েছে। কিন্তু হুবহু নকল করতে গিয়ে সেটা কোন জাতের মধ্যেই পড়ছে না।
আপনার এ বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে কার উৎসাহ সবচেয়ে বেশি পেয়েছেন?
আমার স্ত্রী আমাকে সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা ও উৎসাহ যুগিয়েছেন। তার সহযোগিতা ছাড়া আমার পক্ষে এ পর্যায়ে আসা সম্ভব হতো না। আর গানের জীবনের অনুপ্রেরণা ছিলেন আমার বাবা। তার গলা খুব সুন্দর ছিল। বাবা-মা আমাকে অনেক অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন সব সময়।
ক্যারিয়ারের এ পর্যায়ে এসে এখন কি স্বপ্ন দেখেন?
ভালোর স্বপ্ন দেখি। ভালো দেশ, ভালো মানুষ, ভালো গান আমার স্বপ্ন। সব দিকে ভালোর জয়জয়কার দেখে যেতে পারলেই আমার শান্তি।

সূত্র: মানবজমিন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.