‘চন্দ্রাবতী চরিত্রে অভিনয় করতে পেরে আমি গর্বিত’
মৈমনসিংহ গীতিকা অবলম্বনে এন রাশেদ চৌধুরী নির্মাণ করছেন চলচ্চিত্র ‘চন্দ্রাবতী কথা’। এতে কবি চন্দ্রাবতী চরিত্রে অভিনয় করবেন মডেল ও অভিনেত্রী দিলরুবা হোসেন দোয়েল। চরিত্রটির সঙ্গে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে বর্তমানে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। এজন্য বাকি সব কাজ থেকে নিয়েছেন টানা তিন মাসের বিরতি। নবাগত এ অভিনেত্রী টকিজকে জানালেন তার চন্দ্রাবতী হয়ে ওঠার গল্প—
ক্যারিয়ারের শুরুটা যেভাবে…
কখনো মডেল হব, ক্যামেরার সামনে দাঁড়াব, এমনটি মাথাতেই ছিল না। অনেকটা গল্পের ছলেই একটি প্রচ্ছদে মডেল হয়ে যাই। এর পরই আড়ংসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের মডেল হই। এভাবেই বিজ্ঞাপনচিত্রে, র্যাম্পে হাঁটা, ফটোশুটে অংশ নেয়া।
কবি চন্দ্রাবতী হয়ে ওঠার গল্পটি বলুন।
কবি চন্দ্রাবতী চরিত্রে অভিনয় করব, এমনটি যখন চূড়ান্ত হলো, তখন ব্যাপারটিকে অবিশ্বাস্য বলেই মনে হচ্ছিল। ভয় লাগছিল এই ভেবে, আগে কখনো বড় পর্দায় চন্দ্রাবতীকে দেখিনি। ফলে তার মতো কথা বলা, তার অভিব্যক্তি, হাঁটাচলা এমনকি তিনি কোন ধরনের পোশাক পরতেন, সেগুলোর কিছুই কল্পনা করতে পারছিলাম না। তবে নির্মাতার অভয় আমাকে শক্তি জুগিয়েছে।
ছবিটির কাজ এখন কোন পর্যায়ে?
সরকারি অনুদান ও বেঙ্গল ক্রিয়েশনসের সহযোগিতায় নির্মিত এ চলচ্চিত্রের শুটিং শুরু হবে চলতি মাসের মাঝামাঝিতে। লোকেশন হিসেবে বেছে নেয়া হয়েছে কিশোরগঞ্জকে। কয়েক মাস টানা রিহার্সেল করছি। আর চন্দ্রাবতী চরিত্রে নিজেকে মানানসই করে তুলতে চুল বড় করছি, এমনকি ভ্রুতেও হাত দিতে পারছি না। তিন মাস ধরে তো মডেলিংও করছি না।
ক্যারিয়ারের শুরুতেই ঐতিহাসিক একটি চরিত্রে অভিনয় করছেন চ্যালেঞ্জ মনে হচ্ছে না?
অবশ্যই এটি আমার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। তাছাড়া ক্যারিয়ারের শুরু হতে না হতেই এমন একটি গল্পের, এত উঁচু মানের একটি চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পাওয়াটাও তো ভাগ্যের ব্যাপার। আমার কাছে মনে হচ্ছে, এ সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। ভালো অভিনয় করে দর্শকের প্রত্যাশা পূরণ করার একটা প্রবল আগ্রহ তৈরি হয়েছে আমার ভেতর। এত দিন ধরে এ চরিত্র নিয়ে কাজ করার পর এখন মনে হচ্ছে আমি পারব।
নিজেকে কবি চন্দ্রাবতী হিসেবে দেখতে কেমন লাগছে?
চন্দ্রাবতী চরিত্রে অভিনয় করতে পেরে আমি গর্বিত। কয়েক মাস ধরে চন্দ্রাবতীকে নিয়ে ভাবছি, তাকে নিয়ে পড়ছি। সব মিলিয়ে আমার ভেতর এখন চন্দ্রাবতীই ভর করে আছে। মনে হয়, সত্যি, চন্দ্রাবতী হতে পারলে জীবন পূর্ণ হয়ে যেত।
আপনার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র ‘আলফা’ কবে নাগাদ মুক্তি পাবে?
নাসিরউদ্দিন ইউসুফ পরিচালিত এ চলচ্চিত্রের শুটিং শেষ। এখন ডাবিংসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক কাজ চলছে। আশা করছি, অচিরেই এটি মুুক্তি পাবে। এ চলচ্চিত্রেও আমাকে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যাবে।
অভিনয়ের অনুপ্রেরণা কীভাবে পেলেন?
আমার বড় বোন গান করতেন। তাছাড়া ছোটবেলা থেকেই আমি বিভিন্ন অনুষ্ঠান দেখতাম আর ভাবতাম, ইশ! যদি অভিনেত্রী হতাম। এই পথে আসার জন্য সবচেয়ে বড় উৎসাহ হলো, আমার পরিবার। কারণ এ জগতের সঙ্গে তাদের কারো সংশ্লিষ্টতা না থাকলেও তারা ঠিকই আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে।
নিজেকে যে জায়গায় দেখতে চান…
আমার প্রথম কথা, ভালো ভালো কাজ করে প্রতিষ্ঠিত হওয়া। আমি জানি, শেখার কোনো শেষ নেই। তাই প্রতিনিয়ত শেখার মধ্য দিয়ে এগিয়ে যেতে চাই।
কোনটিতে থিতু হওয়ার ইচ্ছা?
শুরুটা হয়েছিল মডেলিং দিয়ে। এখন চলচ্চিত্রে অভিনয় করছি। এত দিন ধরে কাজ করে মনে হচ্ছে বড় পর্দায় অভিনয় করার মজাই আলাদা। বিশ্বাস করি, আরেকটু চেষ্টা করলে চলচ্চিত্রে প্রতিষ্ঠিত হতে পারব।
পড়াশোনার কী অবস্থা?
আমার বাড়ি রংপুরে হওয়ায় উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা সেখানেই দিয়েছি। এর পর ঢাকায় বিবিএ শেষ করেছি। তবে একটু ব্যস্ততা থাকায় মাস্টার্সে এখনো ভর্তি হইনি। বণিক বার্তা।