চাকরি কি আপনাকে নিয়ে যাচ্ছে মৃত্যুর দুয়ারে?

চাকরি করতে হলে প্রতিদিন আপনাকে অফিসে যেতেই হবে। আর অফিসে একেকটি দিন কাটানো অর্থ হার্ট অ্যাটাক, স্থূলতা, ডায়াবেটিস, হতাশা রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ানো। নির্মম হলেও সত্য আপনার চাকরি আপনাকে অকাল মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। বদ্ধ অফিসের দূষিত বাতাস, কাজের চাপ, লম্বা সময়ের একটানা পরিশ্রম এবং অপুষ্টিকর খাদ্য অজান্তেই আপনার শরীরে মৃত্যুর বীজ ছড়িয়ে দিচ্ছে। একটানা অনেকক্ষণ বসে কাজ করাটা ধূমপানের মত ক্ষতিকর। আর কম্পিউটার মনিটরের সামনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে কাজ করা তো আরো মারাত্মক। কম্পিউটারে বসে কাজ করা ব্যক্তিদের ৯০% মাথাব্যথা, চোখে সমস্যা, এমনকি চোখ নষ্ট হওয়ার মতো সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন।
আমেরিকার একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, একটানা বসে থাকলে ক্যান্সার, হৃদরোগ, স্থূলতা ও ডায়াবেটিসের মতো মারাত্মক রোগের ঝুঁকি বাড়ে। অফিস ক্যান্টিনের উপাদেয় কিন্তু অপুষ্টিকর খাবারও আপনাকে একটু একটু করে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এক গবেষণায় দেখা যায়, যারা ডেস্কে বসে খাদ্য গ্রহণ করে তাদের মধ্যে ৬৪% লোক স্থূলতায় আক্রান্ত হন। এর সাথে সাথে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার হারও বৃদ্ধি পাচ্ছে। অতিরিক্ত মিষ্টি ও পোড়া তেলে ভাজা স্ন্যাকস আপনার বদহজম, ফুডপয়জনিং ও পাকস্থলিতে সমস্যা সৃষ্টির কারণ হতে পারে। আরেকটি বড় সমস্যা হলো মানসিক চাপ। বিশেষ করে বেসরকারি চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে এ ধরনের সমস্যা বেশি হয়। ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানে বসের মর্জি বুঝে চলতে না পারলেই ধরিয়ে দেয় বরখাস্তের চিঠি। চাকরি হারানোর আতঙ্ক, কাজের ধকল, বসের দুর্ব্যবহার, গালিগালাজ হজম, অফিস রাজনীতি এসব কারণে একজন ব্যক্তি যে মানসিক অত্যাচারের স্বীকার হন ভুক্তভোগীমাত্রই তা কেবল বুঝতে পারবেন। অধিকাংশ অফিসগুলোই বহুতল ভবনে অবস্থিত। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বলে এসব অফিসে বাহিরের বাতাস প্রবেশ করতে দেয়া হয় না। কিন্তু এই বদ্ধ পরিবেশে একটানা লম্বা সময় অতিবাহিত করলে ফুসফুসের উপর মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। গবেষকরা বলেছেন, উন্মুক্ত পরিবেশে বুক ভরে শ্বাস নিতে পারলে হৃদরোগের ঝুঁকি এড়ানো যায়। যারা একটানা অনেকক্ষণ কাজ করেন তাদের জন্য একটি দুঃসংবাদ হলো- মৃত্যু আপনার দিকে দ্রুত বেগে ধেয়ে আসছে। সপ্তাহে ৪৮ ঘণ্টার বেশি পরিশ্রম আপনাকে শারিরীকভাবে অক্ষম করে দিতে পারে এবং স্থায়ী পঙ্গুত্ব বরণ করাও অস্বাভাবিক নয়। আরেকটি মৃত্যদূত, আপনার অফিসের চেয়ার। আপনার চেয়ারটি কি আরামদায়ক? যদি আরামদায়ক না হয়ে থাকে তাহলে জরুরি ভিত্তিতে আপনার চেয়ারটি বদলে ফেলুন। কেননা দিনে অন্তত ৮ ঘণ্টা আপনি যে চেয়ারটিতে বসে থাকবেন সেটি সুবিধাজনক না হলে আপনার মেরুদণ্ড স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে। বরণ করতে হবে পঙ্গুত্ব। এতকিছুর পরেও আপনাকে চাকরি করতেই হবে। আর বেঁচে থাকতে কে না চায়? তাই চাকরিক্ষেত্রে একটু সতর্কতা অবলম্বন করে চলতে পারলে মৃত্যু ঝুঁকি হ্রাস করা সম্ভব। সূত্র: ডেইলি মেইল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.