জন্মদিনে ভক্তের শুভেচ্ছা : জেমসের জন্য দেড় টনের কেক
তরুণ প্রজন্মের কাছে জেমস মানেই অন্যরকম উন্মাদনা। ব্যান্ডদল নগর বাউলের দীর্ঘ পথচলায় দেশের শিল্প-সাংস্কৃতিক অঙ্গনে তৈরি হয়েছে ভক্তগোষ্ঠী। শুধু অগণিত ভক্তই নয়; একের পর এক জনপ্রিয় গান উপহার দিয়ে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ বহু কিছু অর্জন করেছেন জেমস। আর তাইতো কিংবদন্তির জন্মদিনে ব্যতিক্রম কিছু ঘটবে এটাই স্বাভাবিক। জন্মদিনে এবার জেমসকে অন্যরকম শুভেচ্ছা জানিয়েছেন এক ভক্ত। প্রিয় শিল্পীর জন্মদিনে তাকে শুভেচ্ছায় সিক্ত করতে দেড় টন ওজনের একটি বিশাল কেক তৈরি করিয়েছেন। শুধু তাই নয়, রোববার দিনভর ঢাকার রাস্তায় সেটি প্রদর্শনও করেছেন। জেমসের এ ভক্তের নাম প্রিন্স মোহাম্মদ। ভক্তের কাছ থেকে এমন ভালোবাসা পেয়ে আনন্দিত জেমসও।
প্রিন্স মোহাম্মদ জানান, প্রিয় শিল্পীকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতেই এ কাজটি করেছেন। প্রিয় শিল্পীর জন্য ব্যতিক্রম এ আয়োজন করতে পেরে ভীষণ গর্বিত তিনি। ‘আমার জানা মতে, গুরু এখনও এসবের কিছুই জানেন না। তাকে সারপ্রাইজ দেয়ার জন্যই এ আয়োজন। বিকালে গাড়ি নিয়ে যাব তার বাসার সামনে। এছাড়া আরও কয়েকজন জেমস ভক্তকে সঙ্গে নিয়েছি। তারা গুরুর সঙ্গে দেখা করতে চান। আমি চাই তাদের ইচ্ছে পূরণ হোক’- বলেন প্রিন্স। তিনি আরও বলেন, একজন রকস্টারকে এর আগে বিশ্বের কেউ এমন কেক বানিয়ে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন কিনা তা আমার জানা নেই। গত এক মাস ধরে এটি বানানো হয়েছে।
প্রিন্স মোহাম্মদের এ ধরনের আয়োজন এবারই প্রথম নয়। দেশের ব্যান্ডসঙ্গীত জগতের অন্যতম জনপ্রিয় এ শিল্পীর জন্মদিন উপলক্ষে গত বছরের এ দিনে ঢাকায় বেশ কয়েকটি বিলবোর্ড টানিয়ে সবাইকে চমকে দিয়েছিলেন তিনি। এবারের জন্মদিনেও ব্যতিক্রমী কিছু একটা করার ইচ্ছা ছিল প্রিন্স মোহাম্মদের। সেই ইচ্ছা থেকেই এ আয়োজন। প্রিয় শিল্পীকে শুভেচ্ছা জানাতে একটি পিকআপকে সাজিয়েছেন কেকের আদলে। জেমসের সঙ্গে নিজের কয়েকটি ছবি দিয়ে সাজানো নকশায় লেখা ‘শুভ জন্মদিন গুরু জেমস। বেঁচে থাকুন অন্তত এক কোটি বছর।’
জানা গেছে, তিন টন ধারণক্ষমতাসম্পন্ন একটি পিকআপে সাড়ে ১৩ ফুট দৈর্ঘ্য, ছয় ফুট চওড়া এবং ১০ ফুট উচ্চতার একটি কেক বানিয়ে তা ঢাকা শহরের নানা সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেমসের বারিধারার বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। এ প্রসঙ্গে প্রিন্স বলেন, ‘গুরু আমাদের যা দিয়েছেন, তার তুলনায় এসব কিছুই না। আমি শুধু আমার প্রিয় শিল্পী ও গুরু জেমসকে জন্মদিনে সম্মান জানানোর একটা উপায় খুঁজছিলাম। তখন মাথায় এলো, কেক নিয়ে ঢাকা শহরটা প্রদক্ষিণ করি। সকাল থেকে গুরুর আরও অনেক ভক্তসহ ট্রাকে করে আমরা সারা শহর ঘুরেছি, সবাইকে কেক খাইয়েছি। সবাই গুরুর জন্য দোয়া করেছেন- এটাই শান্তি।’
গত বছর প্রিন্স মোহাম্মদের উদ্যোগে গঠিত জেমস ফ্যান ক্লাব রোববার সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু চত্বরে একত্রিত হয়। সেখান থেকে শুরু হয় কেক নিয়ে শোভাযাত্রা। পথে পথে জেমস ভক্তদের কেক খাওয়ানো হয়। শুধু ঢাকাতেই নয়, জেমস ফ্যান ক্লাব প্রিয় শিল্পীর জন্মদিনে সারা দেশের ভক্তদের একই ব্যানারে নিয়ে এসেছে। ঢাকার বিমানবন্দর সড়কের নানা জায়গায় এবং বিভিন্ন রুটের বাসে দেখা গেছে নগর বাউলের ছবি সংবলিত শুভেচ্ছাবার্তার পোস্টার। বিকাল সাড়ে ৪টা থেকে বারিধারায় নিজ স্টুডিওতে জেমস ভক্তদের সঙ্গে সরাসরি শুভেচ্ছা বিনিময় এবং জন্মদিন উদযাপন করেন। প্রিন্সসহ আরও অনেক ভক্তের এ উদ্যোগ প্রসঙ্গে জনপ্রিয় ব্যান্ডসঙ্গীতশিল্পী জেমস বলেন, ‘ওদের কারণেই তো আমি জেমস। ওদের কাছ থেকে এমন পাগলামি দেখে মনটা আনন্দে ভরে যায়। ওরা আমাকে ভালোবেসে যাচ্ছে, আমিও তাদের ভালোবেসে যাব।’
সৌজন্যে: দৈনিক যুগান্তর।