জীবনানন্দ পুরস্কার ২০১৫-১৬ পেলেন কবি মাসুদ খান এবং কথাসাহিত্যিক মহীবুল আজিজ

সাহিত্যে জীবনানন্দ পুরস্কার ২০১৫-১৬ পেলেন কবিতায় মাসুদ খান এবং কথাসাহিত্যে মহীবুল আজিজ। ধানসিড়ি সাহিত্য সৈকত ও দূর্বা’র যৌথ উদ্যোগে প্রবর্তিত এই পুরস্কার আজ ১৮ ফ্রেব্রুয়ারি কবি জীবনানন্দ দাশের জন্মদিনে ঘোষণা করা হয়েছে।
বাংলা সাহিত্যে বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ও প্রাবন্ধিক বিশ্বজিৎ ঘোষের সভাপতিত্বে পুরস্কার কর্তৃপক্ষ এই পুরস্কার চূড়ান্ত করেন। চূড়ান্তকরণ সভায় উপস্থিত ছিলেন ‘ধানসিড়ি’র সম্পাদক মুহম্মদ মুহসিন, ‘দূর্বা’র সম্পাদক গাজী লতিফ ও ‘ধানসিড়ি সাহিত্য সৈকত’-এর প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক কবি শামীম রেজা। পুরস্কারের অর্থমূল্য দশ হাজার টাকা ও সম্মাননা পত্র জীবনানন্দের প্রয়াণ দিবস আগামী ২২ অক্টোবর ২০১৬ তারিখে আনুষ্ঠানিকভাবে অর্পণ করা হবে।
এ পুরস্কারের রীতি হচ্ছে- ধানসিড়ি ও দূর্বার প্রযোজনায় পাঁচজন কবি ও পাঁচজন কথাসাহিত্যিক-এর একটি শর্টলিস্ট দেশের বিশিষ্ট ১০ জন সাহিত্যিক বা সাহিত্য সমঝদারের নিকট প্রেরণ করা হয়। উক্ত দশজনের নির্বাচনের বা ভোটের ভিত্তিতে একজন কথাসাহিত্যিক ও একজন কবিকে জীবনানন্দ পুরস্কার প্রদানের জন্য চূড়ান্তভাবে মনোনীত করা হয়।
২০০৭ সালে এ পুরস্কার প্রবর্তিত হয়েছে। এর আগে এ পুরস্কার পেয়েছেন- কবি খালেদ হোসাইন ও কথাসাহিত্যিক ইমতিয়ার শামীম (২০১৪), কবি খোন্দকার আশরাফ হোসেন ও কথাসাহিত্যিক শান্তুনু কায়সার (২০১৩), কবি কামাল চৌধুরী ও কথাসাহিত্যিক সুশান্ত মজুমদার (২০০৮) এবং কবি আসাদ মান্নান ও কথাসাহিত্যিক সালমা বাণী (২০০৭)। ২০১৪ সালে ঘোষণা দেয়া হয় যে পরবর্তী থেকে পুরস্কারটি বার্ষিকের পরিবর্তে দ্বিবার্ষিক ভিত্তিতে প্রদান করা হবে।
পুরস্কারপ্রাপ্ত মাসুদ খান কবি, লেখক ও অনুবাদক। জন্ম ২৯ মে ১৯৫৯, জয়পুরহাট জেলার ক্ষেতলালে। পৈতৃক বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলার মেছড়া গ্রামে। তিনি প্রকৌশলবিদ্যায় স্নাতক ডিগ্রিধারী তড়িৎ ও ইলেকট্রন প্রকৌশলী। পরবর্তীতে ব্যবসায় প্রশাসনে স্নাতকোত্তর। বর্তমানে ক্যানাডায় বসবাসরত। তাঁর প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয় বুয়েটের হল ম্যাগাজিনে, ১৯৭৯-তে। জাতীয় পর্যায়ে লেখা প্রকাশিত হতে শুরু করে মধ্য-আশি থেকে, বাংলাদেশের বিভিন্ন লিটল ম্যাগাজিন ও সাহিত্য পত্রিকায়। পরবর্তীকালে বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিকসমূহে এবং বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন সাহিত্য-পত্রিকায় ও কবিতা-সংকলনে তিনি এক সমাদৃত কবি। তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ: পাখিতীর্থদিনে (১৯৯৩), নদীকূলে করি বাস (২০০১), সরাইখানা ও হারানো মানুষ (২০০৬), আঁধারতমা আলোকরূপে তোমায় আমি জানি (২০১১), এই ধীর কমলাপ্রবণ সন্ধ্যায় (২০১৪) এবং দেহ-অতিরিক্ত জ্বর (২০১৫)।
পুরস্কারপ্রাপ্ত মহীবুল আজিজ কথাসাহিত্যিক, কবি ও প্রাবন্ধিক। জন্ম ১৯ এপ্রিল ১৯৬২, যশোরে। পৈতৃক নিবাস লক্ষ্মীপুর। স্থায়ী নিবাস চট্টগ্রামে। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক। তাঁর গ্রন্থ সংখ্যা ত্রিশের অধিক। উপন্যাস: ১. বাড়ব, ২. যোদ্ধাজোড়। গল্পগ্রন্থ : ১. গ্রাম উন্নয়ন কমপ্লেক্স ও নবিতুনের ভাগ্যচাঁদ, ২. দুগ্ধগঞ্জ, ৩. মৎস্যপুরাণ, ৪. আয়নাপাড়া, ৫. বুশম্যানের খোঁজে, ৬. নীলা মা হতে চেয়েছিল। কাব্যগ্রন্থ : ১. সান্তিয়াগো’র মাছ, ২. হরপ্পার চাকা, ৩. রৌদ্রছায়ার প্রবাস, ৪. পৃথিবীর সমস্ত সকাল, ৫. নিরানন্দপুর, ৬. এই নাও দিলাম সনদ, ৭. আমরা যারা স্যানাটরিয়ামে, ৮. আমার যেরকম প্রস্তুতি, ৯. অসুস্থতা থেকে এইমাত্র, ১০. বৈশ্য বিশ্বে এক শূদ্র, ১১. দৃশ্য ছেড়ে যাই, ১২. পালাবার কবিতা, ১৩. ট্যারানটেলা, ১৪. ওগো বরফের মেয়ে। প্রবন্ধ-গ্রন্থ : ১. কথাসাহিত্য ও অন্যান্য, ২. সাহিত্যের পরিপ্রেক্ষিত, ৩. সৃজনশীলতার সংকট ও অন্যান্য বিবেচনা, ৪. সাহিত্য ইলিয়াস ও অন্যান্য নক্ষত্র, ৫. অস্তিত্বের সমস্যা ও লেখালেখি, ৬. সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ ও অন্যান্য প্রবন্ধ, ৭. উপনিবেশ বিরোধিতার সাহিত্য ও অন্যান্য প্রবন্ধ।
গবেষণা-গ্রন্থ : ১. হাসান আজিজুল হক: রাঢ়বঙ্গের উত্তরাধিকার, ২. বাংলাদেশের উপন্যাসে গ্রামীণ নিম্নবর্গ, ২. ঔপনিবেশিক যুগের শিক্ষা ও সাহিত্য।
অনুবাদ-গ্রন্থ : শোশা (আইজাক বাশেভিস সিঙ্গারের উপন্যাস)।
সৌজন্যে- বাংলা টিব্রিউন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.