জেতা ম্যাচ হেরে গেল বাংলাদেশ

দারুণ খেলছিলেন মুশফিকুর রহিম। তবে শেষদিকে তাকে যোগ্য সঙ্গ দিতে পারলেন না কেউ। নিজেও ফিনিশিং টানতে পারলেন না।ফলে তীরে এসে তরী ডুবলো সফরকারীদের। শেষ পর্যন্ত জেতা ম্যাচ হেরেই গেল তারা। প্রথম ম্যাচে দাপুটে জয়ের পর দ্বিতীয় ওয়ানডেতে মাত্র ৩ রানে হেরে গেল টাইগাররা। রোমাঞ্চকর এ জয়ে সিরিজে ১-১ সমতা টানল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
জবাবে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের শুরুটা হয় বেশ ভালো। ওপেনিং জুটিতে আসে ৩২ রান। ২৩ রান করে ফেরেন এনামুল হক। আবারো সাকিবকে নিয়ে দারুণ জুটি গড়ে তোলেন তামিম। ফলে এগোতে থাকে সফরকারীরা। তবে হঠাৎই ছন্দপতন। ২৫ ওভারে বিশুর স্ট্যাম্পিংয়ের শিকার হয়ে ফেরেন তামিম (৫৪)। ফেরার আগে দ্বিতীয় উইকেটে সাকিবের সঙ্গে ৯৭ রানের জুটি গড়েন ড্যাশিং ওপেনার। সঙ্গী হারিয়ে বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে পারেননি সাকিব (৫৬)। কিছুক্ষণ পরই নার্সকে অযাচিত শট খেলতে গিয়ে ফেরেন তিনি। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার ফিরলে দলের হাল ধরেন মুশফিক। তাকে যোগ্য সহযোদ্ধার সমর্থন দেন মাহমুদুল্লাহ। ধীরে দলকে জয়ের দিকে নিয়ে যেতে থাকেন তারা। কিন্তু এক ভুল বোঝাবুঝিতেই তাদের প্রচেষ্টা হার মানে। দলীয় ২৩২ রানে রানআউটে কাটা পড়েন মাহমুদুল্লাহ (৩৯)।

ভাইরা ভাই ফিরে গেলেও একপ্রান্ত আগলে রাখেন মুশফিক। তবে শেষদিকে তাকে কেউ যোগ্য সঙ্গ দিতে পারেননি। আবারো ফিনিশিং টাচ দিতে ব্যর্থ সাব্বির। ৪৯ ওভারের শেষ বলে হেটমায়ারকে ক্যাচ প্র্যাকটিস করিয়ে ফিরে যান তিনি। ফিনিশিং টানতে পারেননি মিস্টার ডিপেন্ডেবলও। ৫০ ওভারের প্রথম বলে সময়ের দাবি মেটাতে গিয়ে হোল্ডারে শিকার হন তিনি। এতে বৃথা যায় তার ৬৭ বলে ৫ চার ও ১ ছক্কায় সাজানো ৬৮ রানের লড়াকু ইনিংস। তবু সুযোগ ছিল। শেষ ৫ বলে লাগত ৮ রান। তবে এ সহজ সমীকরণ মেলাতে পারেননি মাশরাফি-মোসাদ্দেক।শেষ পর্যন্ত ২৬৮/৬ রানে থামে টাইগারদের দৌড়। গায়ানার প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে এদিনও টস জেতেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। তবে ব্যাটিং নয়, নেন বোলিং। বোলিংয়ে বাংলাদেশের শুরুটাও হয় দুর্দান্ত। লুইসকে (১২) এলবিডব্লিউ করে শুভসূচনা এনে দেন মাশরাফি। ধুঁকতে থাকা গেইলকেও (৩৮) দ্রুত ফিরিয়ে দেন মিরাজ। ৫৫ রানে দুই বিধ্বংসী ওপেনারকে ফিরিয়ে উচ্ছ্বাসে মাতে টাইগাররা। সেটি আরো বাড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১০২ রানে ৪ উইকেট হারালে। কোণঠাসা ক্যারিবীয়দের প্রতিরোধ গড়ে ওঠে হেটমায়ার-পাওয়েলের পঞ্চম উইকেট জুটিতে। দুজনের দারুণ বোঝাপড়ায় ১১০ বলে গড়ে ওঠে ১০৩ রানের জুটি। এই জুটিটাই স্বাগতিকদের চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়তে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। পাওয়েল ৪৪ রানে আউট ফিরলেও একপ্রান্ত আগলে থেকে যান ‘লোকাল হিরো’ হেটমায়ার। দ্রুতগতিতে রান তুলে এগিয়ে যান সেঞ্চুরির পথে। শেষ পর্যন্ত তিন অঙ্কের ম্যাজিক্যাল ফিগার স্পর্শ করেই ছাড়েন তিনি। খেলেন ৯৩ বলে ৭ ছক্কা এবং ৩ চারের ১২৫ রানের মহাকাব্যিক ইনিংস। এ নিয়ে ঘরের মাঠে সর্বকনিষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে সেঞ্চুরি হাঁকানোর কীর্তি গড়েছেন হেটমায়ার। অবশ্য হেটমায়ারের সেঞ্চুরিতে অবদান আছে সাকিবেরও। ৪৩ ওভারে রুবেলের বলে তার সহজ ক্যাচ হাতছাড়া করেন তিনি। তখন এ ক্যারিবীয় ব্যাটারের রান ছিল ৭৯। শেষ পর্যন্ত ৪৯.৩ ওভারে অলআউট হওয়ার আগে ২৭১ রান সংগ্রহ করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বাংলাদেশের হয়ে ৩ উইকেট নেন রুবেল। দুটি করে উইকেট ভাগাভাগি করেন সাকিব-মোস্তাফিজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.