জয় দিয়ে বছর শুরু বাংলাদেশের!
প্রত্যাশিত জয় দিয়েই শুরু হলো বাংলাদেশের ক্রিকেটের যাত্রা, মুশফিকুর রহীম তার অফিসিয়াল ফেসবুকে তাংক্ষণিক ভাবে মাত্র একটি বাক্যই লিখেছেন -’ জয় দিয়ে বছর শুরু বাংলাদেশের’! তাই অভিনন্দন বাংলাদেশ, অভিনন্দন বাংলাদেশের প্রতিটি খেলোয়াড়কে। শুভ হোক তোমাদের পথচলা।
ক্রিকেট একটি আনপ্রেডিক্ট্যাবল গেইম। কখন কি হয় কিছুই বলা দায়। আর টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট তো আরোই। প্রতি বলেই বদলে যেতে পারে যে কোনো ম্যাচের চিত্র। আর তাইতো এখানে ফেভারিট বলতে কেউই থাকেনা। মাঠে ম্যাচের অবস্থা বুঝে ধারনা করতে হয় এগিয়ে আছে কে। তারপরও দুই/তিন বলেই অনেক ক্ষেত্রেই পরিবর্তন হয়ে যায় খেলার অবস্থা।
আর ঠিক এমনই এক ম্যাচ সরাসরি উপভোগ করলো আজ খুলনাবাসী। উত্তেজনাকর ম্যাচটি কঠিন হতে হতেও বেশ সহজভাবেই ৮ বল হাতে রেখে ৪ উইকেটে জিতে নিলো বাংলাদেশ।
দুপুরে টসে জিতে ব্যাট করতে নামে জিম্বাবুয়ে। আর ইনিংস শুরু থেকেই ব্যাট চালিয়ে খেলা শুরু করে দুই ওপেনার সিবান্দা ও মাসাকাদজা। এবং দূর্দান্ত ব্যাটিংয়ে মাত্র ১১ ওভারেই শতরান পূর্ণ করে ফেলেন এই দুইজন। দুই ওপেনারের সামনে রীতিমত অসহায় ছিলেন সাকিব, মাশরাফি, আলামিনরা। দলীয় ১০১ রানে সিবান্দা ব্যক্তিগত ৪৬ রানে আউট হলেও মাসাকাদজা নিজের ফিফটি তুলে নেন। শেষপর্যন্ত ৭৯ রানে আউট হন তিনি।
তবে এই দুই ব্যাটসম্যান ছাড়া আর কোন ব্যাটসম্যানই দাঁড়াতে পারেনি ক্রিজে। একসময় মনে হচ্ছিলো হয়তোবা ২০০ রানের মাইলফলক পার করে ফেলবে জিম্বাবুয়ে। তবে তা হতে দেননি মুস্তাফিজুর রহমান। ৪ ওভার বল করে মাত্র ১৮ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন তিনি। এছাড়া আলামিন ২ উইকেট নেন ২৪ রানের বিনিময়ে। এই দুই জনের বোলিং দৃঢ়তায় নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে জিম্বাবুয়ের ইনিংস দাঁড়ায় ৭ উইকেটে ১৬৩ রান।
১৬৪ রানের জবাবে চড়াই-উৎরাইয়ের মধ্যে দিয়ে শুরু হয় বাংলাদেশের ইনিংস। শুরু থেকেই মারমুখী ভূমিকায় ব্যাট চালাতে থাকেন তামিম ও সৌম্য। তবে দলীয় ৩১ রানে সৌম্য ব্যক্তিগত ৭ রান করে রান-আউট হলে একটু বিব্রতকর অবস্থায় পরে বাংলাদেশ। এরপর সাব্বিরকে সাথে নিয়ে ইনিংসের হাল ধরেন তামিম।
তবে দলীয় ৫৮ রানে ব্যক্তিগত ২৯ রানে তামিম ও দলীয় ৭৪ রানে নবাগত শুভাগতও আউট হলে চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ।
এরপর ক্রিজে আসা মুশফিক ও সাব্বির দলের ইনিংসের হাল ধরেন শক্ত করে। এই দুজনের ব্যাটিং দেখে মনে হচ্ছিলো ম্যাচটি বেশ সহজেই জিতে নেবে বাংলাদেশ।
কিন্তু ভাগ্যের খেলা টি-টোয়েন্টি। দলীয় ১১৮ রানে ব্যক্তিগত ৪৬ রান করে সাব্বির আউট হলেও ম্যাচ জিততে বাংলাদেশের খুব একটা অসুবিধা হবে বলে মনে হচ্ছিলো না। কিন্তু সাব্বিরের সাথে সাথেই মুশফিক ও মাহমুদুল্লাহও আউট হলে বেশ চাপে পড়ে বাংলাদেশ।
তবে নবাগত সোহানের বুদ্ধিদীপ্ত ব্যাটিং আর অভিজ্ঞ সাকিবের ব্যাটিং দৃঢ়তায় শেষ পর্যন্ত ৮ বল হাতে রেখেই ৪ উইকেটে ম্যাচ জিতে নেয় বাংলাদেশ।
তবে সাকিব-সোহানের চেয়ে বাংলাদেশের জয়ে বেশি ভূমিকা পালন করে জিম্বাবুইয়ান বোলারদের দেওয়া ওয়াইড বল। ১৭ ও ১৮ তম ওভারে ভিটোরি ও লুক জংগুইয়ের করা দুইটি ওয়াইড বল চারে রূপান্তরিত হলে কঠিন হতে থাকা বল ও রানের সমীকরণ মুহূর্তেই সহ হয়ে যায় বাংলাদেশের জন্য। আর এই অতিরিক্ত থেকেই শেষপর্যন্ত জয়সূচক রান আসে বাংলাদেশের জন্য।
বাংলাদেশের পক্ষে সাব্বির সর্বোচ্চ ৪৬ রান করেন। এছাড়া তামিম ২৯, মুশফিক ২৬ ও সাকিব ২০ রান করে অপরাজিত থাকেন। জিম্বাবুয়ের পক্ষে ক্রেমার ২টি উইকেট পান।
দল হারলেও ব্যক্তিগত ৭৯ রান করে ম্যান অফ দি ম্যাচ নির্বাচিত হন হ্যামিল্টন মাসাকাদজা।
স্কোর :
জিম্বাবুয়ে : ২০ ওভারে ১৬৩/৭ (মাসাকাদজা ৭৯, সিবান্দা ৪৬; মুস্তাফিজ ২/১৮, আলামিন ২/১৪)
বাংলাদেশ : ১৮.৪ ওভারে ১৬৬/৬ (সাব্বির ৪৬, তামিম ২৯, মুশফিক ২৬, সাকিব ২০*; ক্রেমার ২/৩২)
ফলাফল : বাংলাদেশ ৪ উইকেটে জয়ী।
এই জয়ের মাধ্যমে ৪ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ। সিরিজের ২য় টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি অনুষ্ঠীত হবে ১৭ জানুয়ারি একই ভেন্যুতে।