টেক্সুয়াল রিলেশনশিপের সুবিধা অসুবিধা

আপনি হয়তো ভাবছেন টেক্সুয়াল রিলেশনশিপ, এটা আবার কেমন ধরনের সম্পর্ক? প্রযুক্তির সহায়তায় কেবল মেসেজ আদান-প্রদান করেই একটি প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠাকে টেক্সুয়াল রিলেশনশিপ বলা হয়। এতে একজন আরেকজনের সাথে শুধুমাত্র টেক্সট আদানপ্রদান করেই সম্পর্কটি গড়ে তোলেন। তা হতে পারে ফোনে, হতে পারে ফেসবুকে বা বিভিন্ন ডেটিং সাইটে।
মানুষ এখন অনেক বেশি আধুনিক। তাদের চিন্তাভাবনা আর কাজকর্মে এসেছে সময় বাঁচানোর তাগিদ। আজকাল একটি কাজ যতটা সম্ভব কম সময়ে করা যায় ততই ভালো। সংক্ষিপ্তের এই যুগে মানুষের সাথে মানুষের সম্পর্কগুলোতেও এসেছে সংক্ষেপের বার্তা। আর তাই প্রেমিক প্রেমিকারা সম্পর্ক ধরে রাখতে ব্যবহার করছেন ফেসবুক আর মোবাইল ফোন। নিজেদের আবেগের বহিঃপ্রকাশ করছেন টেক্সট মেসেজের মাধ্যমে। জেনে নিন একবিংশ শতাব্দীর এই প্রযুক্তিনির্ভর যুগে টেক্সুয়াল রিলেশনের সুবিধা-অসুবিধাসমূহ।
সুবিধা
● প্রযুক্তিনির্ভর এই টেক্সুয়াল রিলেশনে যখন তখনই আবেগের বহিঃপ্রকাশ সম্ভব। কেননা আগের যুগের সম্পর্কে যোগাযোগ হত কম, ফলে আবেগগুলোর সঠিক সময়ে সঠিক প্রকাশটা হত না। ডিজিটাল এই যুগে যখন যে ধরনের অনুভূতি হয় সেই অনুভূতিই খুব সহজেই প্রিয়জনের কাছে পৌঁছে দেয়া সম্ভব।
● মানুষের সময় কম খরচ হচ্ছে। শুধুমাত্র প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রিয়জনের খোঁজখবর নিতে পারছেন প্রেমিক প্রেমিকারা। যেকোনো খবর কয়েক সেকেন্ডের মাঝে প্রিয়জনের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারছেন। ফলে সময়ের খুব কমই ব্যয় হচ্ছে।
● টেক্সুয়াল রিলেশনে প্রেমিক-প্রেমিকারা তাৎক্ষণিকভাবে যোগাযোগ করতে পারছেন। ফলে অপেক্ষা করতে হচ্ছে কম।
● এই ধরনের রিলেশনে প্রেমিক-প্রেমিকাদের মাঝে দূরত্ব কম হয়। সবসময় টেক্সট পাঠিয়ে যোগাযোগ করা সম্ভব বলে প্রিয় মানুষটি সবসময় কাছেই আছেন বলে মনে হয়।
টেক্সুয়াল রিলেশনশিপের সুবিধা অসুবিধা

অসুবিধা
● টেক্সুয়াল রিলেশনের সুবিধার পাশাপাশি অনেক অসুবিধাও রয়েছে। এই ধরনের রিলেশন একজনকে আবেগশূন্য করে তোলে। প্রযুক্তি যতই দ্রুতগতিসম্পন্ন হোক না কেন তা মানুষের আবেগকে পুরোপুরি ধরতে পারে না। তাই মানুষগুলো প্রায় আবেগশূন্য হয়ে পড়ছে বলে গবেষকরা জানিয়েছেন।
● এই ধরনের রিলেশন দুজনের মাঝে আপাতদৃষ্টিতে দূরত্ব কমালেও মনের দূরত্ব বাড়িয়ে তুলছে। কেননা একটা মানুষ যখন শুধুমাত্র টেক্সটে নির্ভরশীল হয়ে পড়ে তখন তার দেখা করার চাহিদাকে নিমেষেই গ্রাস করে ফেলে। ফলে দুজনের মনের দূরত্ব বেড়ে যায়।
● টেক্সুয়াল রিলেশনে দৈহিক চাহিদা হ্রাস পায়। আমরা জানি, একটি রিলেশনে দৈহিক চাহিদার বিষয়টিও অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। শুধুমাত্র টেক্সট বিনিময়ে প্রেমের সম্পর্ক দৈহিক সম্পর্কটা সেভাবে গড়ে ওঠে না। ফলত সম্পর্কের স্থায়িত্ব হুমকির সম্মুখীন হয়। এমনকি এক্ষেত্রে ফোন সেক্সের বিষয়টির আধিক্যও বেড়ে যায়।
● শুধুমাত্র এই টেক্সুয়াল রিলেশনে পরকীয়ার প্রবণতাও অনেক বেশি বেড়ে যায়। কেননা একজন খুব সহজেই অনেক জনের সাথে এই ধরনের রিলেশনে জড়িয়ে যেতে পারে। এতে করে সম্পর্গুলো নষ্ট হয়ে যায়।
● এই ধরনের রিলেশনের কারণে সম্পর্কগুলোর স্থায়িত্ব সর্বেোপরি হুমকির সম্মুখীন হয়। কেননা এতে আবেগতাড়িত ভালোবাসা থাকে না, থাকে প্রযুক্তিগত ভালোবাসা।
তথ্যসূত্র: হাফিংটনপোস্ট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.