নির্ঝঞ্ঝাট ভ্রমণে
নির্ঝঞ্ঝাট ভ্রমণে
সানজীদা রিপা
ঈদ আনন্দ শতভাগ উপভোগ করতে শহুরে কোলাহল পেরিয়ে নাড়ির টানে ঘরে ফিরছে মানুষ। পরিবারের সবার সঙ্গে আনন্দটা ভাগ করে নেয়াই যেন পরম পাওয়া। কেউবা আবার প্রকৃতির নিখাদ বৈচিত্র্যময় সৌন্দর্য অবলোকন করতে কয়েকটা দিনের জন্য বেরিয়ে পড়ছেন শহর থেকে একটু দূরে কিংবা দেশের বাইরে। তবে উদ্দেশ্য যা-ই হোক, ভ্রমণে অযাচিত কোনো ঘটনা কারোরই কাম্য নয়। ভ্রমণক্ষণ স্মরণীয় করে রাখতে নিজেকে যেমন কৌশলী হতে হয়, তেমনি সবকিছু গুছিয়ে সাজিয়ে করা চাই
ভ্রমণের আগের রাতে খুব ভালো ঘুম হওয়া দরকার। তাহলে ভ্রমণের সময়টা কাটবে বেশ ঝরঝরে। এ সময় ভরপেট না খেয়ে চেষ্টা করুন হালকা খাবার খাওয়ার।
যাত্রাটা খুব সকালে হলেই ভালো। তাহলে শহুরে ভিড় শুরু হওয়ার আগেই পৌঁছে যেতে পারবেন আপনার গন্তব্যে। এমনকি সকালের ফুরফুরে হাওয়ায় স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথাবার্তা বলেও বেশ মজা পাবেন।
এ সময় ধৈর্য বা সহিষ্ণুতা খুব বেশি প্রয়োজন। হতে পারে আপনি বাস মিস করেছেন। কিন্তু তাতে ক্ষতি কী, পরের বাসে আসার চেষ্টা করুন। এমনও হতে পারে, এটিএম বুথ থেকে টাকা তোলা যাচ্ছে না, তাহলে অন্য কোনো বুথ খুঁজে নিন। আসলে সব ধরনের পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকা চাই।
যেখানে যাচ্ছেন সেখানকার পরিবহন ব্যবস্থা সম্পর্কে ভালোভাবে খোঁজখবর নিন। দেশের বাইরে হলে অনেক সময় দেখা যায়, ট্রেন বা বাসের চেয়ে কান্ট্রি ইনবাউন্ড এয়ারফেয়ার টিকিট অনেক বেশি সাশ্রয়ী হয়।
হ ভ্রমণের সময় অনেক বেশি ব্যাগপত্র না রাখাই ভালো। প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো নেয়ার চেষ্টা করুন। অনেক সময় দেখা যায়, ক্যাপ, সানগ্লাস, টিস্যু পেপার, আয়না, চিরুনি, টুথব্রাশ কিংবা টুথপেস্টের মতো ছোটখাটো জিনিস নেয়ার কথা মনে থাকে না। তাই এগুলো আলাদা করে একটা ব্যাগে গুছিয়ে নিতে পারেন।
দূরে কিংবা কাছে যেখানেই যান না কেন, ক্যামেরা কিন্তু সঙ্গে থাকা চাই-ই চাই। তার সঙ্গে অতিরিক্ত ব্যাটারি, চার্জার এগুলো নিয়ে নিন। প্রচুর ছবি তুলুন, না হয় পরে আফসোস করবেন।
দীর্ঘ ভ্রমণে পা দুটো যতটা সম্ভব ছড়িয়ে বসুন। মাঝে মধ্যে পা নাড়াচাড়া করুন, যাতে রক্ত চলাচল ঠিক থাকে। একটানা বেশিক্ষণ না বসে মাঝে মধ্যে হাঁটুন। আর জুতার বিষয়ে বাড়তি মনোযোগ দেয়া প্রয়োজন। আরামদায়ক কেডস নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবার জন্যই ভালো। হিল জুতা ব্যবহার না করাই ভালো। ভ্রমণের সময়টায় একঘেয়েমি কাটাতে বই বা খবরের কাগজ নিয়ে নিতে পারেন।
টাকা ছাড়া সবকিছুই অচল। তাই ভ্রমণের সময় নিজের সঙ্গে প্রচুর টাকা না রাখলেও জরুরি অবস্থা মোকাবেলার ব্যবস্থা রাখুন। এটিএম কার্ড হাতে রাখলে সবকিছুই ভালোভাবে ম্যানেজ করতে পারবেন।
ভ্রমণ স্থানে প্রচলিত খাবারগুলো খাওয়ার চেষ্টা করুন। কারণ একটি জায়গার সংস্কৃতি পুরোপুরি জানতে সেখানকার খাবার একবার হলেও চেখে দেখা উচিত।
একসঙ্গে অনেক বেশি জায়গায় ঘোরার পরিকল্পনা করবেন না। তাহলে কোনো জায়গাই ভালো করে দেখা হবে না।
মুখ ভার করে নয়, বেড়ানোর সময়টায় অনেক বেশি হাসিখুশি থাকার চেষ্টা করুন। জটিল কিছু না ভেবে গা ভাসিয়ে দিন জীবনটাকে উপভোগে।
ভ্রমণে নিরাপত্তার জন্য দলবদ্ধভাবে যেতে পারেন। অনেকের সঙ্গে বেড়ানো আনন্দ যেমন বাড়িয়ে দেয়, তেমনি খরচের বোঝাও হালকা হয়।