পরিবর্তন হল বাংলা ক্যালেন্ডারের

বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সঙ্গে জড়িত ঐতিহাসিক দিনগুলিকে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের সঙ্গে সমন্বয় করতে পরিবর্তন আনা হল বাংলা ক্যালেন্ডারের ৷ এই পরিবর্তন শুধুমাত্র বাংলাদেশের জন্যই করা হয়েছে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গে যেখানে বাংলাই প্রধান ভাষা তার কোনও পরিবর্তন করা হয়নি। বিবিসি বাংলায় এমনই প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে৷

এরফলে বাংলাদেশে নতুন বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী এবার থেকে বাংলা বছরের প্রথম ছয়টি মাসই হবে ৩১ দিনের। এতদিন বৈশাখ, জ্যৈষ্ঠ, আষাঢ়, শ্রাবণ, ভাদ্র—বছরের প্রথম এই পাঁচটি মাস ছিল ৩১ দিনের। এবার থেকে আশ্বিন মাসও ৩০ বদলে ৩১ দিনের হয়ে যাচ্ছে ৷ অন্যদিকে বছরের বাকী ছয় মাসের ফাল্গুন মাস ছাড়া অন্য পাঁচ মাসই ৩০ দিন ধরা হবে। ফাল্গুন মাস হবে ২৯ দিনের, কেবলমাত্র অধিবর্ষ বা লিপইয়ারের ক্ষেত্রে সেই বছরে ফাল্গুন হবে ৩০ দিনের ৷

বাংলা বর্ষপঞ্জির এই পরিবর্তনের কাজটি করেছে বাংলা আকাডেমির গবেষণা, সংকলন এবং অভিধান ও বিশ্বকোষ বিভাগ। এই বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ মোবারক হোসেন জানিয়েছেন, ২১শে ফেব্রুয়ারি, ১৬ই ডিসেম্বর, ২৬শে মার্চের মত গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় দিনগুলি সমূহ বাংলা ক্যালেন্ডার অনুযায়ী যে দিনে অনুষ্ঠিত হয়েছিল, সেই দিনেই পালন করা হবে।
যেমন ২১শে ফেব্রুয়ারি অর্থাৎ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসটি পালিত হয় ১৯৫২ সালে ভাষার দাবিতে নামা মিছিলে গুলি চালানোর ঘটনার জন্য ৷ সেবার ওই দিনটি ছিল ৮ ফাল্গুন। কিন্তু বছর ঘুরে অধিকাংশ সময়ই আবার ২১শে ফেব্রুয়ারি গিয়ে পড়ে ৯ ফাল্গুনে৷ যা নিয়ে বিভিন্ন সময় লেখক, কবি, সাহিত্যিকসহ অনেকে আপত্তি জানিয়েছিলেন। তেমনই আবার বাংলাদেশের বিজয় দিবস ১৬ই ডিসেম্বর, ১৯৭১ সালের ঐ দিনটি ছিল পয়লা পৌষ, কিন্তু বাংলা পঞ্জিকায় দিনটি পড়ত দোসরা পৌষ।
একই রকম ভাবে রবীন্দ্রজয়ন্তী ও নজরুলজয়ন্তী এবং তাঁদের মৃত্যুদিনও বাংলা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী যে দিনে হয়েছিল, তার সঙ্গে গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জির দিন মেলে না। কিন্তু নতুন নিয়মে দুই বর্ষপঞ্জির মধ্যে দিন গণনার সমন্বয় করা হয়েছে।