পরীক্ষামূলক বায়োমেট্রিক পদ্ধতির উদ্বোধন আজ

সিম নিবন্ধন

পরীক্ষামূলক বায়োমেট্রিক পদ্ধতির উদ্বোধন আজ

সেলফোন অপারেটরদের সিম নিবন্ধনে বায়োমেট্রিক (আঙুলের ছাপ) পদ্ধতির পরীক্ষামূলক কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হচ্ছে আজ। প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন। গতকাল সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।

সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বুধবার ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ পরিদর্শনকালে বায়োমেট্রিক পদ্ধতির পরীক্ষামূলক কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা। আগামী ১ নভেম্বর থেকে অপারেটরদের গ্রাহক সেবাকেন্দ্র থেকে পরীক্ষামূলক এ কার্যক্রমের আওতায় বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন করতে পারবেন গ্রাহকরা।

তারানা হালিম জানান, পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শেষে চূড়ান্তভাবে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু হবে আগামী ১৬ ডিসেম্বর। এরই মধ্যে বিষয়টি নিয়ে অপারেটরদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। নির্ধারিত সময়ে এটি শুরুর বিষয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছে সব অপারেটরই।

আঙুলের ছাপ নিতে ব্যবহার করা হবে বিশেষ ডিভাইস। সেলফোন অপারেটরদের ডিভাইস সংগ্রহ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন। বায়োমেট্রিক ফিঙ্গারপ্রিন্ট রিডার বা স্ক্যানার নামে পরিচিত এ ডিভাইসের মাধ্যমে সংরক্ষণ করা হবে প্রত্যেক গ্রাহকের আঙুলের ছাপ। গ্রাহকের অন্যসব তথ্যের সঙ্গে সংরক্ষণ করা হবে এটি। এতে পরিচয় জালিয়াতির আশঙ্কা কমবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

প্রতিবেশী দেশ ভারতে বিভিন্ন কার্যক্রমে আঙুলের ছাপ শনাক্ত করার এ ব্যবস্থা চালু রয়েছে। আর দেশে ব্যাংকিং খাতের লেনদেনে এটি চালু হয়েছে আগেই।

সেলফোন সংযোগ ব্যবহার করে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে ২০১২ সালের এপ্রিলে সেলফোন সংযোগ কেনার ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদর্শন বাধ্যতামূলক করে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। পরবর্তীতে একই বছরের আগস্টে প্রি-অ্যাক্টিভেটেড সিম বিক্রি বন্ধে তিন মাস সময় বেঁধে দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা। এ সময়ের মধ্যে যথাযথ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে নির্দেশ দেয়া হয় তাদের। ওই বছরের ১২ অক্টোবর থেকে প্রি-অ্যাক্টিভেটেড সিম ও রিম বিক্রি বন্ধ করা হয়। তবে এর পরও ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে অনেকেই একাধিক সংযোগ ব্যবহার করছেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি সিম নিবন্ধন কার্যক্রমকে আরো নির্ভরযোগ্য করে তুলতে নির্বাচন কমিশনের ডাটাবেজ ব্যবহারের পাশাপাশি বায়োমেট্রিক ব্যবস্থা চালুর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

এর আগে ২০০৮ ও ২০১০ সালে দুই দফায় অপারেটরদের চিঠি দিয়ে সিম নিবন্ধন নিশ্চিত করার নির্দেশ দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা। অনিবন্ধিত ও প্রি-অ্যাক্টিভেটেড সিম বিক্রি করা হলে সিমপ্রতি ৫০ ডলার করে জরিমানা করার বিষয়টিও উল্লেখ রয়েছে নির্দেশনায়।

গতকালের সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী জানান, আগামী বছর এপ্রিলের পর থেকে অনিবন্ধিত সিমের জন্য অপারেটরদের জরিমানার বিধান কার্যকর করা হবে। সঠিক প্রক্রিয়ায় সিম নিবন্ধনের জন্য জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্য?ন্ত তাদের সময় দেয়া হচ্ছে। এর পর এক্ষেত্রে ব্যত্যয় পাওয়া গেলে জরিমানার বিধান কার্যকর করা হবে।

তিনি বলেন, গ্রাহকের পরিচয় নিশ্চিত করতে অপারেটররা যে সুযোগ চেয়েছিল, তা দেয়া হয়েছে। ডিসেম্বর থেকে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধনের জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র তথ্যভাণ্ডারে প্রবেশাধিকার দেয়া হচ্ছে অপারেটরদের।

নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রকাশিত সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, আগস্ট শেষে দেশের ছয় সেলফোন অপারেটরের গ্রাহক সংখ্যা ১৩ কোটি ৮ লাখ ৪৩ হাজার ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে গ্রামীণফোনের সংযোগ সংখ্যা ৫ কোটি ৫০ লাখ ৪০ হাজার, বাংলালিংকের ৩ কোটি ২৮ লাখ ৭৯ হাজার, রবির ২ কোটি ৮৩ লাখ ১৬ হাজার, এয়ারটেলের ৯৩ লাখ ৯২ হাজার, টেলিটকের ৪০ লাখ ৭৯ হাজার ও সিটিসেলের ১১ লাখ ৩৮ হাজার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.