প্রথমবারের মতো ফুটল ই-গোলাপ

প্রযুক্তির উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে সাইবারনেটিক অর্গানিজম বা সাইবর্গের (জৈব ও বায়োমেকাট্রনিক যন্ত্রাংশের সমন্বয়) নাম বেশ পরিচিত হয়ে উঠেছে। এর সঙ্গে এখনো উদ্ভিদ জগতের তেমন সম্পর্ক গড়ে ওঠেনি। তবে এখন পরিস্থিতির পরিবর্তন হচ্ছে। প্রথমবারের মতো সুইডেনের বিজ্ঞানীরা গোলাপ গাছের সংবহন নালিতে সার্কিট সংযোজন করে ফুল ফুটিয়েছেন, যা ‘ই-গোলাপ’ নামে পরিচিতি লাভ করেছে। খবর সিনেট ও পিটিআই।

এ গবেষণার মাধ্যমে গাছের অভ্যন্তরীণ রাসায়নিকের প্রবাহ ও এর নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য উদ্ঘাটন করা সম্ভব হয়েছে। এর ফলাফল সালোক সংশ্লেষণভিত্তিক ফুয়েল সেল তৈরিতে নতুন দিগন্তের উন্মোচন করবে বলে আশা করছেন বিজ্ঞানীরা। এ গবেষণার ফলাফল সম্প্রতি সায়েন্স অ্যাডভান্সেস জার্নালে প্রকাশ হয়েছে।

সুইডেনের লিনকোপিং বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ম্যাগনাস বারগেনের নেতৃত্বে গবেষণাটি সম্পন্ন হয়েছে। এতে গোলাপ গাছের সংবহনতন্ত্রে সার্কিট প্রতিস্থাপন করা হয়। গবেষণায় তার ও ডিজিটাল লজিক ব্যবহার করা হয়েছে এবং বিভিন্ন উপাদান প্রদর্শনেরও ব্যবস্থা ছিল। বিজ্ঞানীরা জানান, গাছ হচ্ছে জটিল জীবন্ত সত্তা, যা আয়োনিক সংকেত ও হরমোনের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম সম্পাদন করে। গাছের জীবনচক্র খুব ধীরগতি হওয়ায় এ বিষয়ে গবেষণাও বেশ কঠিন। তবে এখন গবেষণায় ইলেকট্রনিক কার্যক্রমের ব্যবহার শুরু হওয়ায় গাছের রাসায়নিক প্রক্রিয়া ইলেকট্রিক সংকেতে প্রকাশ করা যাবে।

এ গবেষণার সহলেখক ও উমেয়া প্লান্ট সায়েন্স সেন্টারের অধ্যাপক ওভে নিলসন বলেন, ‘আগে জীবন্ত গাছের বিভিন্ন আণবিক প্রক্রিয়া পরিমাপে কোনো যন্ত্রপাতি ছিল না। এখন যেসব উপাদান গাছের বৃদ্ধি ও উন্নয়নে ভূমিকা রাখে, সেগুলো প্রভাবিত করা সম্ভব হচ্ছে।’ গবেষণায় গোলাপ গাছের বিভিন্ন অংশে পরিবাহী পলিমার দেয়ার চেষ্টা করা হয়। তবে পিইডিওটি-এস নামের একটি মাত্র পলিমার এর কোষে কাজ করে। এটি অনেকটা তার হিসেবে কাজ করছে, যাতে পানি ও অন্য খনিজ পদার্থ পরিবাহিত হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.