প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর প্রথম রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে বিশাল জনসমাগম

গতমাসে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনীতিতে যোগ দেয়ার ঘোষণা দেয়ার পর প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর প্রথম গণসংযোগে হাজারো মানুষ উপস্থিত হয়েছিলেন।
উত্তরাঞ্চলের শহর লখনৌতে এক জনসমাবেশে প্রিয়াঙ্কা তাঁর ভাই এবং ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের প্রেসিডেন্ট রাহুল গান্ধীর সাথে অংশ নেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এবছরে হতে যাওয়া নির্বাচনের আগে কংগ্রেসের জন্য নতুন শক্তি হিসেবে কাজ করবে প্রিয়াঙ্কার রাজনীতিতে আসা।
প্রিয়াঙ্কাকে তুলনা করা হচ্ছে ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাথে – যিনি সম্পর্কে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর মাতামহী হন।
উত্তর প্রদেশের লখনৌয়ের রোড শো’তে উপস্থিত থাকা বিবিসি প্রতিবেদক জানান, রাজীব গান্ধী ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে স্বাগত জানাতে লাখ লাখ মানুষ পথে নেমে আসেন এবং তাদের সমর্থনে স্লোগান দিতে থাকেন।
প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর রাজনীতিতে যোগদান কংগ্রেসের রাজনীতিতে এবং আসন্ন নির্বাচনে কংগ্রেসের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

লখনৌ থেকে বিবিসি প্রতিবেদক জানান, “কংগ্রেসের কর্মী এবং সমর্থকরা প্রিয়াঙ্কার যোগদানে যথেষ্ট উদ্দীপ্ত। পরের নির্বাচনে কংগ্রেস মোদি সরকারের পতন ঘটাবে, এমন আত্মবিশ্বাস ছিল তাদের কর্থাবার্তায়।”
গান্ধী পরিবারের দুই ভাই বোনের মধ্যে প্রিয়াঙ্কাকে সবসময়ই বেশি জনপ্রিয় হিসেবে ধারণা করা হয়েছে। ২০১৪ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত রাজ্য পর্যায়ে বিভিন্ন নির্বাচনে কংগ্রেসের পরাজয়ের পেছনে রাহুল গান্ধীর ছন্নছাড়া নেতৃত্বকেই দায়ী মনে করেন অনেকে।
এর আগের নির্বাচনগুলোতে ভাই রাহুল গান্ধী এবং মা সোনিয়া গান্ধীর হয়ে প্রচারণা চালালেও আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো রাজনৈতিক পদ গ্রহণ করতে বরাবরই অস্বীকৃতি জানিয়ে এসেছেন প্রিয়াঙ্কা।
তবে ২৩শে জানুয়ারি উত্তর প্রদেশের পূর্বাঞ্চলের জন্য কংগ্রেসের সাধারন সম্পাদক হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণা করা হয়।

তবে কংগ্রেসের চরম দুর্দিনে যখন প্রিয়াঙ্কাকে দলের দায়িত্ব দেওয়ার প্রস্তাব উঠেছে, যে কোনও কারণেই হোক তা বাস্তবায়িত হয়নি।
অথচ এখন ভারতে সাধারণ নির্বাচনের যখন মাত্র তিন মাস বাকি, গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য উত্তরপ্রদেশের পূর্বাঞ্চলে – যেটা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও যোগী আদিত্যনাথের গড় বলে পরিচিত – সেই তাকেই দলের দায়িত্বে নিয়ে এলেন তার বড় ভাই রাহুল গান্ধী।
রাহুল গান্ধী এদিন আমেথিতে জানিয়েছেন, “কংগ্রেস আক্রমণাত্মক রাজনীতি করবে বলেই একটা নির্দিষ্ট দায়িত্ব দিয়ে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বা জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার মতো তরুণ নেতাদের সামনে নিয়ে আসা হয়েছে।”
তারা যে “মাত্র দুমাসের জন্য আসেননি, বরং লম্বা সময়ের জন্য মিশন নিয়ে নেমেছেন” – সেটাও স্পষ্ট করে দেন তিনি।

সাম্প্রতিক সময়ে রাজ্য পর্যায়ে শেষ কয়েকটি নির্বাচনে কংগ্রেস কিছু সফলতা লাভ করলেও আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে বিজেপিকে হারিয়ে ক্ষমতায় ফিরতে কঠিন চ্যালেঞ্জের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে কংগ্রেসকে।
তবে ভারতের রাজনৈতিক ল্যান্ডস্কেপে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর যোগদানে শুধু কংগ্রেস নয়, বিজেপি-সহ অনেক দলকেই যে নতুন করে রাজনৈতিক স্ট্র্যাটেজি কষতে হচ্ছে তাতে কোনও সংশয় নেই। বিবিসি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.