বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিমের জন্য আমাদের শ্রদ্ধা
বন্দে মায়া লাগাইছে, পিরিতি শিখাইছে এমনই ধরণের অসংখ্য জনপ্রিয় গানের স্রষ্টা শাহ আবদুল করিমের জন্মদিন ১৫ ফেব্রুয়ারি- মৃত্যুবরণ করেন ১২ সেপ্টেম্বর ২০০৯, তার জন্য আমাদের শ্রদ্ধা। আসুন জেনে নেই সেই বাউল সম্রাটের জীবনের কিছু অংশ।
বাউল গানের কিংবদন্তী শাহ আবদুল করিমের জন্ম হয় ১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯১৬ সালে সুনামগঞ্জ জেলার কালনী নদীর তীরে দিরাই উপজেলার তাড়ল ইউনিয়নের ধল আশ্রম গ্রামে। তাঁর বাবার নাম ইব্রাহিম আলী ও মায়ের নাম নাইওরজান বিবি। স্ত্রীর নাম ছিল আফতাবুন্নেসা, যাকে তিনি আদর করে ডাকতেন সরলা। আদি বাসস্থান ধল আশ্রম গ্রামে হলেও ১৯৫৭ সালে তাঁরা ধল আশ্রমের পার্শ্ববর্তী পাড়া উজান ধল গ্রামে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। দিনমজুর ইব্রাহিম আলীর ৬ সন্তানের মধ্যে করিমই হচ্ছেন একমাত্র ছেলে। শাহ্ আব্দুল করিমের পিতা ইব্রাহিম আলী ১০৩ বছর বয়সে ১৯৮৪ সালে মারা যান। ১৯৮৮ সালে ৮০ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন মা নাইওরজান বিবি।
দিনমজুর পরিবারে জন্ম হওয়ায় অভাবের মধ্যেই তিনি বেড়ে উঠেন এবং সারা জীবন অভাবের ভেতরেই বাস করেছেন। এ কারণেই স্কুল-কলেজের শিক্ষা লাভের সুযোগ তাঁর হয়নি। তবুও যে শিক্ষায় তিনি শিক্ষিত হয়েছেন তা আমরা খুব কম জনেই পেরেছি – সাধারণ মানুষকে ভালবাসার শিক্ষা। রাখালের চাকরি নিয়ে সারাদিন মাঠে গরু চড়াতেন আর গান গাইতেন। এই গানই এক সময় তাঁকে অসামান্য করে তোললো। রাখালের কাজ করেই কাটিয়েছেন কৈশোর ও যৌবন কাল।
১৪ বছর বয়স পর্যন্ত অক্ষরজ্ঞান ছিল না তাঁর, ১৫ বছর বয়সে গ্রামের নৈশ বিদ্যালয়ে মাত্র ৮দিন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেন তিনি। ৮ দিন চালু থাকার পর সে বিদ্যালয়টি বন্ধ হয়ে যায়। অক্ষর জ্ঞান সম্পন্ন কাউকে দেখলেই বই মেলে জানতে চাইতেন অক্ষরগুলোর নাম। গরু রাখার কঞ্চি দিয়েই মাটিতে লিখতেন অ, আ, ক, খ প্রভৃতি। শৈশব থেকেই একতারা তাঁর সঙ্গী ছিল। কৃষিশ্রমে জীবন কেটেছে সাদাসিধে ভাবে। বাউল ও আধ্যাত্মিক গানের তালিম নেন কমর উদ্দিন, সাধক রশিদ উদ্দিন, শাহ ইব্রাহীম মোস্তান বকশ এর কাছ থেকে। দীর্ঘ সঙ্গীত জীবনে বাউল ও আধ্যাত্মিক গানের পাশাপাশি ভাটিয়ালি গানেও বিচরণ ছিল তাঁর। লালন শাহ, পাঞ্জু শাহ ও দুদ্দু শাহ এর দর্শনে অনুপ্রাণিত ছিলেন আব্দুল করিম।
১৯৫৪ সারে যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে মাওলানা ভাসানী, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন মুসলিম লীগের বিরুদ্ধে বৃহত্তর সিলেটে গণসংযোগে আসতেন তখন তাদের সফরসঙ্গী হতেন বাউল আব্দুল করিম। ১৯৬৯ সালে সুনামগঞ্জের জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ে মাঠে করিমের গণসঙ্গীত শুনে আবেগে আপ্লুত হয়ে শেখ মুজিব মাইকে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, শেখ মুজিব বেঁচে থাকলে করিম ভাইও বেঁচে থাকবেন, করিম ভাই যেখানে শেখ মুজিব সেখানে। ১৯৭০ সারের নির্বাচনে শেখ মুজিবের ভাটি অঞ্চল নির্বাচনী প্রচারাভিযানে একমাত্র মধ্যমনি ছিলেন শাহ আব্দুল করিম। ২০০১ সালে তৎকালীন পররাষ্ট্র মন্ত্রী আব্দুস সামাদ আজাদ সুনামগঞ্জ সার্কিট হাউজে এক কর্মী সভায় বলেছিলেন, সুনামগঞ্জে আওয়ামিলীগের প্রতিষ্ঠাতা শাহ আব্দুল করিমের ভূমিকা অন্যতম। শাহ আব্দুল করিম ৫৪’র নির্বাচন, ৬৯’র গণঅভ্যুত্থান, ৭১’র মুক্তিযুদ্ধ, ৯০’র গণ আন্দোলনসহ প্রতিটি পর্যায়ে স্বরচিত গনসঙ্গীত পরিবেশন করে জনতাকে দেশ মার্তৃকার টানে উদ্বুদ্ধ করতে চেষ্টা করেছেন। তাঁর গণসঙ্গীতে মুগ্ধ হয়ে মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী তাঁর পিটে হাত রেখে বলেছিলেন- বেটা, গানের একাগ্রতা ছাড়িও না, তুমি একদিন গণ মানুষের শিল্পী হবে। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী গণসঙ্গীত শুনে একশ পঁচাশি টাকা দেন, শেখ মুজিব ১১ টাকা দিয়ে বলেন – তোমার মতো শিল্পীকে উপযুক্ত মর্যাদা দেয়া হবে।
স্বল্পশিক্ষিত বাউল শাহ আব্দুল করিম এ পর্যন্ত প্রায় দেড় সহস্রাধিক গান লিখেছেন এবং সুরারোপ করেছেন। বাংলা একাডেমীর উদ্যোগে তাঁর ১০টি গান ইংরেজিতে অনূদিত হয়েছে। কয়েক বছর আগেও এসব গান শুধুমাত্র ভাটি অঞ্চলের মানুষের কাছেই জনপ্রিয় ছিল। সাম্প্রতিককালে এ সময়ের বেশ কয়েকজন শিল্পী বাউল শাহ আব্দুল করিমের গানগুলো নতুন করে গেয়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করলে তিনি দেশব্যাপী পরিচিতি লাভ করেন। আব্দুল করিম একজন বাউল হিসেবে শুধু দেহতত্ত্ব, মুর্শিদি ও মারফতি গানই রচনা করেননি, চারণ কবি হিসেবে মানুষের সুখ-দুঃখ, অভাব-অভিযোগ, অত্যাচার ও শোষন-নির্যাতন নিয়েও গান রচনা করেছেন।
বাউল শাহ আবদুল করিমের এ পর্যন্ত ৬টি গানের বই প্রকাশিত হয়েছে। বইগুলো হলো- আফতাব সংগীত, গণ সংগীত, কালনীর ঢেউ, ভাটির চিঠি, কালনীর কূলে এবং দোলমেলা। ১৯৪৮ সালে প্রথম প্রকাশিত হয় আফতাব সংগীত, ১৯৫৪ সালে প্রকাশিত হয় গণ সংগীত, ১৯৮১ সালে কালনীর ঢেউ, ১৯৯০ সালে দোলমেলা, ১৯৯৮ সালে ভাটির চিঠি, ২০০৯ সালে প্রকাশিত হয় শাহ আব্দুল করিম রচনা সমগ্র। ২০০০ সালে তিনি কথাসাহিত্যিক আবদুর রউফ চৌধুরী পদক পান। ২০০১ সালে তিনি একুশে পদক লাভ করেন। তাঁর পাওয়া অন্যান্য পদক ও সম্মাননার মধ্যে রয়েছে- রাগীব-রাবেয়া সাহিত্য পদক ২০০০, আইডিয়া সংবর্ধনা স্মারক ২০০২, লেবাক অ্যাওয়ার্ড ২০০৩, মেরিল-প্রথম আলো আজীবন সম্মাননা ২০০৪, অভিমত সম্মাননা ২০০৬, সিলেট সিটি কর্পোরেশন সম্মাননা ২০০৬। এছাড়া দ্বিতীয় সিটিসেল চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে আজীবন সম্মাননা এবং ‘অটোবি’র আজীবন সম্মাননায় ভূষিত হন আব্দুল করিম।
তিনি ৩ বার লন্ডন ভ্রমণ করেন। ১৯৬৪ ও ১৯৮৫ সালে ইস্টার্ন ফিল্ম ক্লাবের আমন্ত্রণে ছুটে যান লন্ডনে। বাউল গান গেয়ে মুগ্ধ করেন শ্রোতাদের। সেখানে উপার্জিত টাকা দিয়ে দেশে এসে সামান্য কিছু ধানি জমি কেনেন তিনি। ওই জমি বিক্রি করেই তার গানের বই ‘কালনীর ঢেউ’ ছাপার খরচ মেটান। তিনি ২০০৭ সালে তার ছেলে শাহ নূরজালালকে নিয়ে লন্ডনে পাড়ি জমান। বৃদ্ধ বয়সে দীর্ঘ ভ্রমণ সহ্য করতে না পেরে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে লন্ডনের রয়েল হসপিটালে ভর্তি করা হয়। দীর্ঘ একমাস চিকিৎসা শেষে তিনি দেশে ফিরে আসেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় পথে পথে ঘুরে গান গেয়ে গণজাগরণ সংগীতে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন তিনি। জীবনবাদী এই সাধক শাহ আবদুল করিম বাংলার অন্যান্য সাধকদের থেকে ছিলেন একেবারে ব্যতিক্রম। তিনি সাধনসঙ্গীতের পাশাপাশি রচনা করেছিলেন জনমানুষের অধিকার আদায়ের গান ‘গণসঙ্গীত।’
জীবনের শেষ প্রান্তে এসেও তাঁর তীক্ষ্ণ রসবোধ কমেনি একটুও – গান তৈরী করেছেন নিজের বার্ধক্যকে উপহাস করে –
আগের বাহাদুরি এখন গেল কই
চলিতে চরণ চলেনা
দিনে দিনে অবশ হই।
উত্তর প্রজন্মের কণ্ঠে করিমের মারফতি, মুর্শিদি, দেহতত্ব, বিরহ-বিচ্ছেদ এবং গণসংগীত সফল তালে ধ্বনিত হচ্ছে সিলেট, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা ও আসাম ত্রিপুরা অঞ্চলে।
শাহ আবদুল করিমের জনপ্রিয় কিছু গান:
বন্দে মায়া লাগাইছে, পিরিতি শিখাইছে; আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম; গাড়ি চলে না; আমি কূলহারা কলঙ্কিনী; কেমনে ভুলিবো আমি বাঁচি না তারে ছাড়া; কোন মেস্তরি নাও বানাইছে; কেন পিরিতি বাড়াইলারে বন্ধু; বসন্ত বাতাসে সইগো; আইলায় না আইলায় নারে বন্ধু; মহাজনে বানাইয়াছে ময়ুরপংখী নাও; আমি তোমার কলের গাড়ি; সখী কুঞ্জ সাজাও গো; জিজ্ঞাস করি তোমার কাছে; মানুষ হয়ে তালাশ করলে; আমি বাংলা মায়ের ছেলে; রঙ এর দুনিয়া তরে চায় না।
১২ সেপ্টেম্বর বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিমের মৃত্যু দিবস। দীর্ঘদিন বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগে ভুগে ২০০৯ সালের এই দিনে তিনি সিলেটের নুরজাহান জেনারেল হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। শাহ আব্দুল করিমের ইচ্ছা অনুযায়ী তাঁকে উজান ধল গ্রামে তার স্ত্রীর কবরের পাশে সমাহিত করা হয়।
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
শাহ আবদুল করিম
Shah Abdul Karim
প্রাথমিক তথ্য
ধরন বাউল গান
সংগীত শিল্পী
শাহ আবদুল করিম (১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯১৬ – ১২ সেপ্টেম্বর ২০০৯) হলেন বাংলা বাউল গানের একজন কিংবদন্তী শিল্পী। সুনামগঞ্জের কালনী নদীর তীরে বেড়ে উঠা শাহ আব্দুল করিমের গান ভাটি অঞ্চলে জনপ্রিয় হলেও শহরের মানুষের কাছে জনপ্রিয়তা পায় মাত্র কয়েক বছর আগে। মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তিনি প্রায় দেড় সহস্রাধিক গান লিখেছেন।
পরিচ্ছেদসমূহ
১ জীবনচরিত
২ সঙ্গীত সাধনা
৩ প্রকাশিত বই
৪ শাহ আবদুল করিমের জনপ্রিয় কিছু গান
৫ সম্মাননা
৬ মৃত্যু
৭ তথ্যসূত্র
৮ বহি:সংযোগ
জীবনচরিত
শাহ আবদুল করিম ১৯১৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সুনামগঞ্জের দিরাই থানার উজানধল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। দারিদ্র ও জীবন সংগ্রামের মাঝে বড় হওয়া বাউল শাহ আবদুল করিমের সঙ্গীত সাধনার শুরু ছেলেবেলা থেকেই। বাউল সম্রাটের প্রেরণা তার স্ত্রী আফতাবুন্নেসা; যাকে তিনি আদর করে ‘সরলা’ নামে ডাকতেন।
ভাটি অঞ্চলের মানুষের জীবনের সুখ প্রেম-ভালোবাসার পাশাপাশি তার গান কথা বলে সকল অন্যায়,অবিচার,কুসংস্কার আর সাম্প্রদায়িকতার বিরূদ্ধে। তিনি তার গানের অনুপ্রেরনা পেয়েছেন প্রখ্যাত বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ, পুঞ্জু শাহ এবং দুদ্দু শাহ এর দর্শন থেকে। যদিও দারিদ্র তাকে বাধ্য করে কৃষিকাজে তার শ্রম ব্যায় করতে কিন্তু কোন কিছু তাকে গান সৃষ্টি করা থেকে বিরত রাখতে পারেনি। তিনি আধ্যাত্নিক ও বাউল গানের দীক্ষা লাভ করেছেন কামাল উদ্দীন, সাধক রশীদ উদ্দীন, শাহ ইব্রাহীম মাস্তান বকশ এর কাছ থেকে। তিনি শরীয়তী, মারফতি, নবুয়ত, বেলায়া সহ সবধরনের বাউল গান এবং গানের অন্যান্য শাখার চর্চাও করেছেন।
সঙ্গীত সাধনা
স্বল্পশিক্ষিত বাউল শাহ আব্দুল করিম এ পর্যন্ত প্রায় দেড় সহস্রাধিক গান লিখেছেন এবং সুরারোপ করেছেন। বাংলা একাডেমীর উদ্যোগে তাঁর ১০টি গান ইংরেজিতে অনূদিত হয়েছে। শিল্পীর চাওয়া অনুযায়ী এ বছরের প্রথম দিকে সিলেট বিভাগীয় কমিশনারের উদ্যোগে বাউল আব্দুল করিমের সমগ্র সৃষ্টিকর্ম নিয়ে একটি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়। কিশোর বয়স থেকে গান লিখলেও কয়েক বছর আগেও এসব গান শুধুমাত্র ভাটি অঞ্চলের মানুষের কাছেই জনপ্রিয় ছিল। সাম্প্রতিককালে এ সময়ের বেশ কয়েকজন শিল্পী বাউল শাহ আব্দুল করিমের গানগুলো নতুন করে গেয়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করলে তিনি দেশব্যাপী পরিচিতি লাভ করেন।
প্রকাশিত বই
বাউল শাহ আবদুল করিমের এ পর্যন্ত ৬টি গানের বই প্রকাশিত হয়েছে। বইগুলো হলো- আফতাব সংগীত, গণ সংগীত, কালনীর ঢেউ, ভাটির চিঠি, কালনীর কূলে এবং দোলমেলা। সম্প্রতি সিলেট জেলা মিলনায়তনে তাঁর রচনাসমগ্র (অমনিবাস)-এর মোড়ক উন্মোচিত হয়েছে।
শাহ আবদুল করিমের জনপ্রিয় কিছু গান
বন্দে মায়া লাগাইছে, পিরিতি শিখাইছে
আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম
গাড়ি চলে না
আমি কূলহারা কলঙ্কিনী
কেমনে ভুলিবো আমি বাঁচি না তারে ছাড়া
কোন মেস্তরি নাও বানাইছে
কেন পিরিতি বাড়াইলারে বন্ধু
বসন্ত বাতাসে সইগো
আইলায় না আইলায় নারে বন্ধু
মহাজনে বানাইয়াছে ময়ুরপংখী নাও
আমি তোমার কলের গাড়ি
সখী কুঞ্জ সাজাও গো
জিজ্ঞাস করি তোমার কাছে
মানুষ হয়ে তালাশ করলে
আমি বাংলা মায়ের ছেলে
রঙ এর দুনিয়া তরে চায় না
সম্মাননা
বাউল শাহ আব্দুল করিম ২০০১ সালে একুশে পদক লাভ করেন। বাংলা একাডেমি তার দশটি গানের ইংরেজি অনুবাদ প্রকাশ করে। এছাড়া দ্বিতীয় সিটিসেল-চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ডস অনুষ্ঠানে এই বাউল সম্রাটকে আজীবন সম্মাননায় ভূষিত করা হয়। এছাড়াও ২০০০ সালে কথা সাহিত্যিক আবদুর রউফ চৌধুরি পদক পান। বাউল সাধক শাহ আবদুল জীবনের একটি বড় অংশ লড়াই করেছেন দরিদ্রতার সাথে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন সময় তার সাহায্যার্থে এগিয়ে এলেও তা যথেষ্ট ছিল না।উল্লেখ্য, ২০০৬ সালে সাউন্ড মেশিন নামের একটি অডিও প্রকাশনা সংস্থা তার সম্মানে ‘জীবন্ত কিংবদন্তীঃ বাউল শাহ আবদুল করিম’ নামে বিভিন্ন শিল্পীর গাওয়া তার জনপ্রিয় ১২ টি গানের একটি অ্যালবাম প্রকাশ করে। এই অ্যালবামের বিক্রি থেকে পাওয়া অর্থ তাঁর বার্ধক্যজনিত রোগের চিকিৎসার জন্য তার পরিবারের কাছে তুলে দেয়া হয়।
মৃত্যু
২০০৯ সালের ১২ই সেপ্টেম্বর বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিম মৃত্যু বরণ করেন।[১] সেই দিন শনিবার সকাল ৭টা ৫৮ মিনিটে সিলেটের একটি ক্লিনিকে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। সিলেটের নুরজাহান পলি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন আব্দুল করিমকে ১১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার দুপুর থেকেই লাইফসাপোর্ট দিয়ে বাঁচিয়ে রাখা হয়ে ছিল।
তথ্যসূত্র
ইন্টারনেট