বাংলাদেশে এখন কোটিপতির সংখ্যা প্রায় ১১ হাজার

মীর মনিরুজ্জামান ও বদরুল আলম |

বাংলাদেশে কোটিপতি রয়েছেন বর্তমানে প্রায় ১১ হাজার, যাদের নিট সম্পদ ৭ কোটি ৮০ লাখ টাকার (১০ লাখ ডলার) বেশি। এছাড়া হাজার কোটি টাকার নিট সম্পদের মালিক রয়েছেন ১৫ জন। তবে স্বীকৃত কোনো বিলিয়নেয়ার বাংলাদেশে নেই বলে জানিয়েছে অতি ধনীদের সম্পদ নিয়ে গবেষণাকারী সংস্থা যুক্তরাজ্যভিত্তিক নাইট ফ্রাংক।

‘দ্য ওয়েলথ রিপোর্ট ২০১৬: দ্য গ্লোবাল পারসপেক্টিভ অন প্রাইম প্রপার্টি অ্যান্ড ওয়েলথ’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি গতকাল প্রকাশ করেছে নাইট ফ্রাংক। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৪ সালে বাংলাদেশে কোটিপতির যে সংখ্যা ছিল, ২০১৫ সালে তার সঙ্গে আরো ৮০০ জনের নাম যুক্ত হয়েছে। ২০১৪ সালে দেশে কোটিপতির সংখ্যা ছিল ৯ হাজার ৮০০। ২০১৫ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৬০০ জনে।

আগামী এক দশকে বাংলাদেশে কোটিপতির সংখ্যা কেমন হতে পারে, তারও একটা ধারণা দিয়েছে নাইট ফ্রাংক। সংস্থাটি বলছে, ২০২৫ সালে দেশে কোটিপতির সংখ্যা দাঁড়াবে প্রায় ২১ হাজার। এছাড়া ২০২৫ সালে হাজার কোটি টাকার নিট সম্পদের মালিকের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ২৯।

এদিকে দেশে ১ কোটি ডলারের ওপরে নিট সম্পদের মালিকের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৪০। ২০১৪ সালে এ পরিমাণ সম্পদের মালিক ছিলেন ৩১০ জন। আর ২০০৫ সালে সংখ্যাটি ছিল ১৪০। নাইট ফ্রাংক বলছে, ২০২৫ সালে বাংলাদেশে ১ কোটি ডলারের ওপরে নিট সম্পদের মালিকের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ৬৬০।

উল্লেখ্য, একজন ব্যক্তির স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ছাড়াও নগদ ও ব্যাংকে জমাকৃত অর্থ, বিভিন্ন কোম্পানিতে শেয়ারসহ সব সম্পদের সমষ্টিই হচ্ছে মোট সম্পদ। এ থেকে ঋণ ও অন্যান্য দায় বাদ দিলে যা থাকে, তা-ই ওই ব্যক্তির নিট সম্পদ।

নাইট ফ্রাংকের হিসাবে, ৩ কোটি ডলারের বেশি নিট সম্পদের প্রায় ২৫০ কোটি টাকার নিট সম্পদের মালিকের সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। ২০১৪ সালে দেশে প্রায় ২৫০ কোটি টাকা নিট সম্পদের মালিক ছিলেন ১৩৪ জন। ২০১১৫ সালে তা ১৪৫ জনে উন্নীত হয়েছে। ২০২৫ সালে এ সংখ্যা আরো বেড়ে হবে ২৮৩।

১০ কোটি ডলারের ওপরে বা হাজার কোটি টাকার বেশি নিট সম্পদের মালিকের তালিকায় নতুন যোগ হয়েছেন একজন। নাইট ফ্রাংকের হিসাবে, ২০১৪ সালে হাজার কোটি টাকার বেশি নিট সম্পদের মালিক ছিলেন দেশে ১৪ জন। ২০১৫ সালে তা ১৫ জনে উন্নীত হয়েছে। তবে আগামী ১০ বছরে সংখ্যাটি ২৯-এ দাঁড়াবে বলে মনে করছে সংস্থাটি।

সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, দেশে কোটিপতির সংখ্যা আরো বেশি হওয়া অস্বাভাবিক নয়। তবে কর ফাঁকি দিতে অনেকেই সম্পদের হিসাব গোপন করছেন। কারণ নিট সম্পদ ২ কোটি ২৫ লাখ টাকা হলে মোট আয়করের ওপর ১০ শতাংশ অতিরিক্ত অর্থ সরকারের কোষাগারে জমা দিতে হয়। আর নিট সম্পদ ১০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেলে মোট আয়করের ওপর ১৫ শতাংশ সারসার্জ দিতে হয়। এছাড়া অনেকে আবার নানাভাবে বিদেশে অর্থ পাচারও করছেন। বণিক বার্তা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.