বায়ুদূষণ থেকে বাড়তে পারে ডায়াবেটিস

সারাদেশে ডায়াবেটিসে আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিনই বাড়ছে, শুধু বাংলাদেশই নয় সারা  বিশ্বেই ডায়াবেটিসে আক্রান্তের সংখ্যা ভয়াবহ ভাবে বাড়ছে। এতদিন গবেষকরা অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাপনকেই মূল কারন হিসেবে চিহিৃত করলেও সম্প্রতি পরিবেশ বা বায়ুদূষণকেও ডায়াবেটিসে আক্রান্তের অন্যতম আর একটি কারণ হিসেবে চিহিৃত করেছে।

আমাদের প্রতিবেশী দেশ  ভারতে ২০৩০ সালের মধ্যে  ডায়াবেটিসে আক্রান্তের সংখ্যা ১০০ মিলিয়ন ছাড়াবে। এমনটাই জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা হু। ২০০২ সালেও ভারতে ডায়াবেটিসে আক্রান্তের সংখ্যা ৩২ মিলিয়ন ছিল। কিন্তু, ২০১৩ সালের মধ্যে তা ৬২ মিলিয়নে পৌছে গিয়েছে।

এই মুহূর্তে ভারতে বছরে কম করেও ৭৫,৯০০ জন পুরুষের মৃত্যুর কারণ ডায়াবেটিস। মহিলাদের ক্ষেত্রে এই পরিসংখ্যানটা ৫১,৭০০ হাজার।

আর এর মধ্যে ভারতের কপালে ভাঁজ দিতে পারে এমনই এক তথ্য সামনে এনেছে জার্মানির কোঅপারেটিভ হেলথ রিসার্চ ইন দ্য রিজিওন অগসবার্গ কন্ডাক্টেড ইন জার্মানি বা কোরা। ২০০৬ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত ডায়াবেটিস নিয়ে চলা এই পরীক্ষা-নিরীক্ষায় দেখা যাচ্ছে বায়ু দূষণ ডায়াবেটিসের জন্ম-ই শুধু দেয় না, সেই সঙ্গে প্রত্যেকের টাইপ-টু ডায়েবেটিসের মাত্রাকে বাড়িয়ে তোলে।

একদল শহরবাসী মানুষের শারীরিক পরীক্ষার রিপোর্টকে একদিকে রাখা হয়। অন্যদিকে, আপাতভাবে গ্রামাঞ্চলের দিকে থাকা মানুষদের আলাদা একটি শারীরিক রিপোর্ট তৈরি করা হয়। গ্লুকোজ টেস্টে দেখা যায়, যাঁরা শহুরে আবহাওয়ায় বাস করছেন, তাঁদের ইনসুলিন মাত্রা ঊর্ধ্বমুখী। কিন্তু, গ্রামাঞ্চলে বাসরতদের রক্তে ইনসুলিন সেভাবে বিপদসীমা পার করেনি।

growth-st

শহরে বসবাসকারীদের রক্তে কেন ইনসুলিনের মাত্রা বৃদ্ধি পেল? এর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে জার্মানির ন্যুহেরবার্গের রিসার্চ সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল হেলথের গবেষক অধ্যাপক আন্নেত্তে পিটার্স জানিয়েছেন, শহুরে এলাকায় বাযুদূষণের মাত্রা অনেক বেশি। বিশেষ করে, যান-বাহনের গিজগিজে ভিড় বাতাসকে প্রবলভাবে দূষিত করে। গাড়ি থেকে নির্গত নাইট্রোজেন ডাইঅক্সাইড বাতাসের সঙ্গে মিশে যে বিষবায়ু তৈরি করছে, তাতে নিঃশ্বাস নিয়ে মানুষের শরীরে নানা রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিচ্ছে, যার মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক টাইপ টু ডায়াবেটিস।

স্বাভাবিকভাবেই উন্নত দেশগুলির থেকে উন্নয়নশীল দেশগুলিতে দূষণের মাত্রা অত্যন্ত বেশি। বিশেষ করে, ভারতের সব মেট্রোপলিসেই বায়ুদূষণের মাত্রা উদ্বেগে ফেলার মতো। গত কয়েক বছরে ভারতের শহরগুলিতে যান-বাহন থেকে তৈরি হওয়া দূষণকে অনেকটা কমানো গেলেও তা এখনও নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আসেনি। সুতরাং, জার্মানির গবেষকদের করা এই সমীক্ষা ভারতের কাছে যথেষ্টই চিন্তার।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.