বিশ্বের ৯০ শতাংশ মানুষ দূষিত বায়ুতে আক্রান্ত: ডব্লিউএইচও
ঢাকা, ০২ মে (ইউএনবি)- বিশ্বের প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৯ জন ব্যক্তিই শ্বাস-প্রশ্বাসে উচ্চ মাত্রার দূষিত বায়ু গ্রহণ করেন বলে জাতিসংঘের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নতুন তথ্য-উপাত্তে দেখা গেছে।
বুধবার জেনেভা থেকে প্রকাশিত ডব্লিউএইচওর বার্তায় বলা হয়, ঘরে ও বাইরে বায়ু দূষণের কারণে প্রতি বছর ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। তবে বিশ্বের সব জায়গায় মৃত্যুর হার সমান নয়। দূষণের কারণে বেশির ভাগ মৃত্যুর ঘটনাই ঘটে গরিব দেশগুলোতে।
ডব্লিউএইচও জানায়, দূষণ সংক্রান্ত মৃত্যুগুলোর মধ্যে ৯০ শতাংশের বেশিই মূলত এশিয়া ও অফ্রিকা এবং তার পরে পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল, ইউরোপ ও আমেরিকার নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলোতে ঘটে।
এ বিষয়ে ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক ডা. টেডরস আধানম গেবিয়াসেস বলেন, বায়ু দূষণ আমাদের সবাইকে হুমকি দিচ্ছে। কিন্তু সবচেয়ে গরিব ও প্রান্তিক মানুষেরা এই বোঝার চাপ বহন করছেন। এটা অগ্রহণযোগ্য যে ৩০০ কোটির অধিক মানুষ- যাদের মধ্যে বেশির ভাগই নারী ও শিশু- তারা এখনো বাড়িতে ব্যবহৃত দূষণসৃষ্টিকারী স্টোভ ও জ্বালানি থেকে প্রতিদিনের শ্বাস-প্রশ্বাসে মারাত্মক ধোঁয়া গ্রহণ করছেন।
ডব্লিউএইচওর হিসাব অনুযায়ী, দূষিত বায়ুতে থাকা সূক্ষ্ম কণা ফুসফুস এবং কার্ডিওভাসকুলার ব্যবস্থার গভীরে প্রবেশ করে স্ট্রোক, হৃদরোগ, ফুসফুসে ক্যান্সার, ফুসফুসে দীর্ঘস্থায়ী রোগ এবং নিউমোনিয়াসহ শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ রোগের সৃষ্টি করছে। যার ফলে প্রতি বছর প্রায় ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে।
এককভাবে ঘরের বাইরে বায়ু দূষণের কারণে ২০১৬ সালে ৪২ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে দূষিত জ্বালানি ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে রান্নার কারণে সৃষ্ট বায়ু দূষণ থেকে প্রায় ৩৮ লাখ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
ঘরের ভেতর বায়ু দূষণের মূল উৎস হচ্ছে এই রান্না। এখনো বিশ্বের প্রায় ৩০০ কোটি মানুষ বা ৪০ শতাংশের অধিক বিশ্ববাসী তাদের ঘরে রান্নার জন্য পরিচ্ছন্ন জ্বালানি ও প্রযুক্তি পাচ্ছেন না। তবে এই পরিস্থিতির উন্নয়ন হচ্ছে। কিন্তু বিশ্বের অনেক অংশে, বিশেষ করে সাব-সাহারা অঞ্চলে জনসংখ্যা বৃদ্ধির গতির সাথে সমান তালে উন্নতি হচ্ছে না।
ডব্লিউএইচও অসংক্রামক রোগের জন্য বায়ু দূষণকে সংকটপূর্ণ ঝুঁকি উপাদান হিসেবে চিহ্ণিত করেছে। এই কারণে প্রাপ্ত বয়স্কদের মৃত্যুর মধ্যে ২৪ শতাংশ হৃদরোগে, ২৫ শতাংশ স্ট্রোকে, ৪৩ শতাংশ ফুসফুসে দীর্ঘস্থায়ী রোগে এবং ২৯ শতাংশ ফুসফুসে ক্যান্সারে মারা যাচ্ছেন।