বিষণ্নতাকে বিদায় দিন

‘সহজ কথা যায় না বলা সহজে’— কবিগুরুর এ কথার সত্যতা মানুষের জীবনে হরহামেশাই দেখা যায়। বেশির ভাগ মানুষ তিক্ত অভিজ্ঞতা কিংবা মনের ওপর চাপ সৃষ্টিকারী ঘটনাগুলো চেপে যান। এসব চেপে রাখা অভিজ্ঞতাই পরবর্তীতে জন্ম দেয় বিষণ্নতার। অথচ অভিজ্ঞতাটি যদি সহজভাবে কাছের মানুষের কাছে উপস্থাপন করা হয়, তাহলে মাথা থেকে ভার নেমে যায়। আর মন ফুরফুরে থাকলে তো শরীরও সুস্থ থাকে।

ধরা যাক, আপনার সঙ্গে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে, যা হয়তো চাইলেও মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলতে পারেননি। সে কথাটি খুব কাছের মানুষকেও বলা হয়নি কিংবা ইচ্ছা হয়নি তাকে খুলে বলার। সব কথা মনের মধ্যে পুষে রেখেছেন অনেক দিন। কিন্তু ভেবে দেখেছেন কি অনেক দিনের জমিয়ে রাখা সেই অভিমান, রাগ কিংবা কষ্ট ধীরে ধীরে কাল হয়ে দাঁড়াচ্ছে আপনার জন্য। অন্তর্মুখী মানুষের ক্ষেত্রে বিষণ্নতার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। কারণ অন্তর্মুখীরা অধিকাংশ ক্ষেত্রে খুব আপনজনের সঙ্গেও মনের কথা খুলে বলতে পারেন না। এতে একটা সময় তিনি নিজেকে একা ভাবতে শুরু করেন। আর তখনই গ্রাস করে বিষণ্নতা। তাই যতটা সম্ভব মনের কথা খুলে বলুন কাছের মানুষের কাছে।

দুঃখ চেপে যাওয়ার কোনো সুবিধা নেই। আবার দুঃখবোধ ঝেড়ে ফেলাও তো আর চাট্টিখানি কথা না! কিন্তু যদি একটু সাহস করে নিজের কষ্টের অনুভূতিগুলো আপন মানুষের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নেন, তাহলে নিজেকে অনেক হালকা মনে হবে। প্রচণ্ড কষ্ট পেলেও যারা কান্না চেপে থাকেন, তাদের বিষণ্নতায় ভোগার আশঙ্কা বেশি। তাই দুঃখ পেলে কান্না চেপে রাখা ঠিক নয়।

অতিরিক্ত ঘুম যেমন ভালো নয়, তেমনি সুস্থ থাকার জন্য পর্যাপ্ত ঘুমেরও প্রয়োজন রয়েছে। অনেকেই ঘুমের ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন নন। কিন্তু একটু ভেবে দেখুন, খুব ভালো ঘুমের পর নিজেকে কতটা সতেজ মনে হয়। পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমালে মস্তিষ্ক বিশ্রাম পায়, তাই শরীরে ফুরফুরে ভাব কাজ করে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেন, প্রতিদিন ৫-৬ ঘণ্টা নিশ্ছিদ্র ঘুমের প্রয়োজন রয়েছে। আমেরিকার এক গবেষণায় দেখা গেছে, যাদের প্রতিদিনের ঘুমে ঘাটতি রয়েছে, তারা অন্যদের তুলনায় বেশি বিষণ্নতায় ভোগেন। তাই বিষণ্নতা কাটাতে প্রয়োজন পর্যাপ্ত ঘুম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.