বেতন বৈষম্য দূরীকরণে মন্ত্রিসভার কমিটি পুনর্গঠন

বেতন বৈষম্য দূরীকরণে মন্ত্রিসভার কমিটি পুনর্গঠন
বেতন বৈষম্য দূরীকরণে মন্ত্রিসভার কমিটি পুনর্গঠন‘বেতন বৈষম্য দূরীকরণ সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি’ পুনর্গঠন করেছে সরকার, যার প্রধান হিসেবে থাকছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

অষ্টম বেতন কাঠামো অনুমোদনের পর বেতন বৈষম্য পর্যালোচনা করে সুপারিশ দিতে এই কমিটি গঠন করা হয়। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন ও মর্যাদা নিয়ে আপত্তি বিবেচনা করে তা মীমাংসার দায়িত্বও দেওয়া হয়েছে এই কমিটিকে।

অর্থমন্ত্রীর এক মন্তব্যে ক্ষিপ্ত শিক্ষকরা এই কমিটি থেকে তাকে বাদ দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন। তবে বুধবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ যে  আদেশ জারি করেছে, তাতে কমিটির আহ্বায়ক পদে অর্থমন্ত্রীকেই বহাল রাখা হয়েছে। পুনর্গঠিত এ কমিটিতে সদস্য হিসেবে থাকবেন শিল্প, বাণিজ্য, আইন ও শিক্ষা মন্ত্রী, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রী এবং অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী।

আদেশে বলা হয়, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, অর্থ বিভগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব, সচিব বা ভারপ্রাপ্ত সচিব এই কমিটিকে সহায়তা করবেন। আর অর্থ বিভাগ কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দেবে।

জাতীয় বেতন স্কেল বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ‘অনিষ্পন্ন বিষয়গুলো’ পর্যালোচনা করা এবং বেতন স্কেলের বিষয়ে ওঠা অভিযোগগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় সুপারিশ দিতে বলা হয়েছে এই কমিটিকে।

অর্থমন্ত্রীকে আহ্বায়ক করে ২০১৪ সালের ২৪ এপ্রিল সরকার যে ‘বেতন বৈষম্য দূরীকরণ সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি’ গঠন করেছিল, তাতে তথ্য ও শিক্ষা মন্ত্রী, অর্থ প্রতিমন্ত্রী এবং জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীকে সদস্য করা হয়েছিল।

সপ্তম বেতন কাঠামোতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলেকশন গ্রেড প্রাপ্ত অধ্যাপকরা সচিবের সমান গ্রেড-১ স্কেলে বেতন পেতেন। জ্যেষ্ঠ অধ্যাপকরা বেতন বৈষম্য দূরীকরণে মন্ত্রিসভার কমিটি পুনর্গঠনগ্রেড-২ এবং অধ্যাপকরা গ্রেড-৩ এ বেতন পেতেন।

অষ্টম বেতন কাঠামোতে ‘সিলেকশন গ্রেড প্রাপ্ত অধ্যাপক’ পদটি বিলুপ্ত করে সিলেকশন গ্রেড প্রাপ্ত অধ্যাপক ও জ্যেষ্ঠ অধ্যাপকদের সচিবদের সমান গ্রেড-১ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে জ্যেষ্ঠ সচিবদের জন্য নতুন একটি বিশেষ গ্রেড তৈরি করা হয়েছে।

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বলছেন, আমলারা নিজেদের জন্য বিশেষ গ্রেড তৈরি করলেও শিক্ষকদের সিলেকশন গ্রেড প্রাপ্ত অধ্যাপক পদটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। ফলে অধ্যাপকরা আমলাদের নিচের স্কেলে থাকছেন।

বেতন বৈষম্য দূর, মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়া ও স্বতন্ত্র বেতন-স্কেলসহ চার দফা দাবিতে দেশের ৩৭টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা কর্মবিরতিসহ বিভিন্ন কর্মসুচিও পালন করে আসছেন।

গত ৭ সেপ্টেম্বর মন্ত্রিসভা অষ্টম বেতন স্কেল অনুমোদন করার পর মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভুঞা জানান, শিক্ষকদের দাবির বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য ‘বেতন বৈষম্য দূরীকরণ সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি’কে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

এরপরও শিক্ষকরা আন্দোলন চালিয়ে গেলে অর্থমন্ত্রী তাদের সমালোচনা করেন এবং তাতে তীব্র প্রতিক্রিয়া হলে তিনি ওই বক্তব্য প্রত্যাহারও করেন।

এরপর বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন বৈষম্য দূরীকরণ কমিটি থেকে মুহিতকে বাদ দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানায়।

– See more at: http://www.dainikamadershomoy.com/2015/09/16/48653.php#sthash.eD976YXb.dpuf

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.