ভারতকে হারিয়ে সাফ কিশোরী ফুটবলে প্রথম চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ

সাউথ এশিয়ান ফুটবল ফেডারেশন (সাফ) অনূর্ধ্ব-১৫ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে চ্যম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশের মেয়েরো। রাউন্ড রবিন লিগে টানা তৃতীয় জয় তুলে নিয়ে ফাইনালে নেমেছিল ‘অপরাজিত’ বাংলার বাঘিনীরা। ফাইনালে গোলাম রব্বানী ছোটনের দল ভারতকে ১-০ গোলে হারিয়ে সাফের শিরোপা নিজেদের করে নিয়েছে।

রোববার কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় দুপুর দুইটায় শুরু হয় ম্যাচটি। ফাইনালের আগে এই ভারতকেই ৩-০ গোলে হারায় লাল-সবুজের দলটি। তবে, তারও আগে এক ম্যাচ হাতে রেখে প্রথম দুই ম্যাচ জিতে বাংলাদেশ-ভারত ফাইনাল নিশ্চিত করেছিল।

টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচ থেকে গোলাম রাব্বানি ছোটনের শিষ্যরা যেমন অ্যাটাকিং ফুটবল শুরু করেছিলেন এ ম্যাচেও ঠিক তেমনই ফুটবল উপহার দেয় তারা।

প্রথমার্ধে বেশ কয়েকবার সুযোগ পেয়েও গোল করতে সক্ষম হয়নি মারিয়া মান্ডার দল। ৩২ মিনিটে সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। নেপালের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করা তহুরা খাতুন জোরালো শট নেন ভারতের জাল লক্ষ্য করে। তবে, বল গোলবারের বাইরে দিয়ে বেরিয়ে যায়। একই মিনিটে অনুচিং-মনিকা জুটির দারুণ একটি সম্ভাবনা নষ্ট হয়। মনিকাকে ঠিকমতো বল বানিয়ে দিতে না পারায় গোলের দেখা পায়নি লাল-সবুজরা।

তবে ৪১ মিনিটে গোলটির দেখা পায় বাংলাদেশ দল। বল নিয়ে ভারতের বক্সে প্রবেশ করেন তহুরা। অনুচিং মারমার সঙ্গে বল দেয়া-নেয়া করে শটও নেন তিনি। তবে, ভারতের গোলরক্ষক প্রস্তুত থাকায় বল জালে জড়ায়নি। এক সেকেন্ডের হতাশা জমলেও ভারতের গোলরক্ষক বলটি ঠিকমতো গ্লাভসবন্দি করতে না পারায় আনন্দে মেতে উঠে বাংলাদেশ। পুনরায় বল পেয়ে তাতে শট নেন শামসুন্নাহার। জালে বল জড়ালে উল্লাসে ফেটে পড়ে পুরো স্টেডিয়াম। ১-০ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় মারিয়ার দল।

বিরতির পর প্রথম মিনিটেই ভারতকে কাঁপিয়ে দেয় বাংলাদেশ। অনুচিংয়ের জোরালো শট পোস্ট ঘেঁষে চলে যায়। প্রথম থেকেই দাপট দেখিয়ে খেলা অনুচিং ম্যাচের ৫৭ মিনিটের মাথায় আবারো জ্বলে উঠেন। ভারতের ডিফেন্ডারদের বোকা বানিয়ে শট নেন তিনি। ভারতের ডি-বক্সে প্রবেশ করে ডানপায়ের জোরালো শট নিলেও পোস্টে লেগে বল বাইরে চলে যায়।

৭২ মিনিটের মাথায় বাংলাদেশের বক্সে জটলা তৈরি করে ভারত। নিজেদের বক্সে দাঁড়িয়ে দারুণ এক ক্লিয়ার করে দলকে বিপদমুক্ত করেন পুরো টুর্নামেন্টে অসাধারণ খেলা আঁখি খাতুন। একের পর এক অফসাইডের বাঁশি বাজায় বেশ কয়েকবারই গ্যালারি থেকে রেফারিদের দুয়ো শুনতে হয়।

কারণ, বেশির ভাগই অফসাইটের কারণ ছিল না। ৭৭ মিনিটে আবারো ভারতের আক্রমণ, প্রস্তুত ছিলেন বাংলাদেশের গোলরক্ষক মাহমুদা। দ্বিতীয়ার্ধে এটি ছিল তার তৃতীয় সেভ। ৭৯ মিনিটে তহুরার আরেকটি দৃষ্টিনন্দন শট চলে যায় ভারতের গোলবারের ওপর দিয়ে। পরের মিনিটে মারজিয়ার জায়গায় কোচ গোলাম রব্বানী নামান রিতুপর্ণা চাকমাকে। ৮৫ মিনিটের মাথায় একটুর জন্য জোড়া গোলের দেখা পাননি শামসুন্নাহার। কর্নার থেকে উড়ে আসা বলে পা লাগাতে পারলেই নিজের ও দলের দ্বিতীয় গোলের দেখা পেয়ে যেতেন। ম্যাচের বাকি সময় আর কোনো গোল না পেলেও ১-০ গোলের জয় নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশের মেয়েরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.