ভারতের কারণে ব্রহ্মপুত্রে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বাংলাদেশ: চীন
বিভিন্ন কাজে ভারত যেভাবে ব্রহ্মপুত্র নদের ব্যবহার দিন দিন বাড়িয়ে তুলছে তাতে বাংলাদেশের স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে এক সম্পাদকীয়তে জানিয়েছে চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম গ্লোবাল টাইমস। ওই সম্পাদকীয়তে এটাও দাবি করা হয়, বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে ভারতের ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় কিছুই করতে পারছে না।
গ্লোবাল টাইমসের বরাত দিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া জানায়, বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে ভারত নির্ভর হওয়ায় ব্রহ্মপুত্র ইস্যুতে দেশটির সঙ্গে দরকষাকষিতে যেতে পারছে না।
গ্লোবাল টাইমসের ওই সম্পাদকীয়তে লেখা হয়, ‘ব্রহ্মপুত্রের পানি বিষয়ে তীরবর্তী রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে কোনো ধরনের সমঝোতায় যেতে রাজি নয় ভারত। কারণ এ ধরনের সমঝোতা ভারতকে নিজ ইচ্ছা মতো পানি পাওয়া থেকে বিরত রাখবে। আর এতে বাংলাদেশের স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’
জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে চীন ব্রহ্মপুত্রের একটি শাখায় বাঁধ দিচ্ছে- দেশটির সরকারের পক্ষ থেকে এমন সংবাদ জানানোর সপ্তাহের মধ্যেই এই সম্পাদকীয় প্রকাশ করলো চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমটি। ওই বাঁধের কারণে অরুণাচল এবং আসামে পানিপ্রবাহ কমে যেতে পারে বলে ধারণা ভারতের। তবে চীন জানিয়েছে, এতে ভারতের কোনো ক্ষতি হবে না। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে ভারতীয় বার্তা সংস্থা পিটিআই’র লেখা এক চিঠির জবাবে এ কথা জানায় তারা।
সোমবার প্রকাশিত ওই সম্পাদকীয়তে আরো বলা হয়, চীনের এই বাঁধ নির্মাণের সঙ্গে সম্প্রতি উরিতে হামলার পর পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের অবনতির কোনো সংযোগ নেই। ওই হামলার পর পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু পানি চুক্তি পুনর্বিবেচনার হুমকি দিয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি তিব্বতে ব্রহ্মপুত্র নদের একটি শাখায় বাঁধ দেয় চীন। এই নদে সবচেয়ে ব্যয়বহুল জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের উচ্চাভিলাসী প্রকল্পের অংশ হিসেবে চীন এটি করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে করে ভাটির দেশগুলোর পানিপ্রবাহ প্রভাবিত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ফলে চীনের এই পদক্ষেপে ভারত এবং বাংলাদেশের উদ্বেগের কারণ রয়েছে।
গত বছর চীন তিব্বতে ব্রহ্মপুত্র নদের উপর ১৫০ কোটি ডলারে নির্মিত জাম হাইড্রোপাওয়ার স্টেশন চালু করে। এই প্রকল্প নিয়ে ভারত বরাবরই উদ্বেগ জানিয়ে আসছে। তবে চীন বলছে, তারা ভারতের উদ্বেগ বিবেচনায় রেখেই প্রকল্প পরিকল্পনা করেছে। ব্রহ্মপুত্রের পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত করতে এই বাঁধ নির্মাণ করা হয়নি।
এদিকে চীনের দ্বাদশ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার রূপরেখায় উল্লেখ করা হয়েছে, স্বায়ত্ত্বশাসিত তিব্বতে ব্রহ্মপুত্র নদের উপর আরো তিনটি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করবে তারা।
সূত্র: বিবার্তা২৪.নেট।