মওলানা ভাসানীর ১৩৫তম জন্মবার্ষিকী আজ
জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ১৩৫তম জন্মবার্ষিকী আজ। এ উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ১৮৮০ সালের ১২ ডিসেম্বর তৎকালীন পাবনা, বর্তমানে সিরাজগঞ্জ জেলার ধানগড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম হাজী শরাফত আলী খান, মায়ের নাম মজিরন বিবি ও দাদার নাম কেরামত আলী খান। মওলানা ভাসানীর দীর্ঘ প্রায় ৮০ বছরের রাজনৈতিক জীবন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তাৎপর্যময় ও বৈচিত্র্যপূর্ণ। এ এক অবিশ্বাস্য রূপকথার কাহিনীর মতো। তিনি পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠন করেন। তিনি আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতিসহ অসংখ্য কল্যাণমুখী প্রতিষ্ঠানের জন্মদাতা। নির্যাতিত, নিপীড়িত, মজলুম মানুষের জন্য তিনি আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। তিনি ১৯৭৬ সালের ১৭ নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। গতকাল বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন এবং তার রুহের মাগফিরাত কামনা করেছেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও এ উপলক্ষে পৃথক বাণী দিয়েছেন। মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর জন্মবার্ষিকী দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে বিএনপি, ন্যাপ ভাসানী, ভাসানী গবেষণা পরিষদ, ভাসানী স্টাডি সেন্টার, ভাসানী স্টাডি সার্কেল, ভাসানী অনুসারী সংসদ, ভাসানী মুরীদগণ, খোদা-ই- খেদমতগার (রুব-রিয়াত) ও ভাসানী শুভানুধ্যায়ীদের পক্ষ থেকে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ) ভাসানীর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করেছে। এছাড়া বিভিন্ন জেলায় কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। বাণীতে খালেদা জিয়া বলেন, ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমল থেকে শুরু করে স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে সব স্বৈরশাসকের অপশাসনের বিরুদ্ধেসোচ্চার ভূমিকা এবং দেশের গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দেশপ্রেমিক মজলুম জননেতা ভাসানীর অবদান নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। রাজনৈতিক জীবনে তিনি আজীবন শোষিতের পক্ষ নিয়ে শাসকগোষ্ঠীকে দিকনির্দেশনা দিয়ে গেছেন। তিনি নিপীড়িত নির্যাতিত মানুষের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সব সময় থেকেছেন আপসহীন নেতৃত্বের ভূমিকায়। দেশ ও জনগণের জন্য নিবেদিতপ্রাণ ভাসানীর বলিষ্ঠ ও সাহসী ভূমিকা আমাদের চিরদিন একটি শক্তিশালী এবং আত্মনির্ভরশীল দেশ ও সমাজ বিনির্মাণে প্রেরণা ও উৎসাহ জোগাবে। তার প্রদর্শিত পথ ধরে চলতে পারলেই অভীষ্ট লক্ষে পৌঁছাতে কোনো কঠিন বাধাই আমাদের পথ আগলাতে সক্ষম হবে না। তিনি বাণীতে উল্লেখ করেন, বর্তমানে আমাদের দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব চরম সংকটাপন্ন। গণতন্ত্রকে কবরে পাঠানো হয়েছে। আধিপত্যবাদ আজও ডানা বিস্তার করে রেখেছে। কারণ ৫ জানুয়ারির তামাশার নির্বাচন করে গণতন্ত্রবিনাশী আধিপত্যবাদের উৎপীড়ক শাসকশ্রেণি জনমতকে রক্তাক্ত পন্থায় দমন করে ক্ষমতা জবরদখল করে রেখেছে। আমাদের জাতীয় স্বাধীনতার প্রথম তুর্যবাদক মওলানা ভাসানীর উদ্যম ও সাহসিকতাকে আঁকড়ে ধরে রাখতে পারলেই আগ্রাসী শক্তিকে আমরা রুখতে সক্ষম হব। ২০ দলীয় জোটের শরিক ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ, ভাসানী) চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মোঃ আজহারুল ইসলাম দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশের মানুষ এবং বিশ্বের মজলুম জনতাকে শুভেছা জানিয়ে বলেন, স্বাধীনতার স্বপ্নদ্রষ্টা এই মহান নেতা আঃ হামিদ খান ভাসানীকে আল্লাহ্ যেন বেহেস্ত নসিব করেন। তিনি বলেন, বর্তমানে দেশের এই কঠিন ও ভয়াবহ সময়ে জাতিগতভাবে একত্রিত হয়ে এই মহাসংকট কাল উত্তরণের জন্য সঠিক পন্থা বের করে গণ-জাগরণ সৃষ্টি না করলে ইতিহাস আমাদের ক্ষমা করবে না। তাই সময়ের দাবি হচ্ছে, দেরি না করে ক্ষমতার লোভ পরিহার করে অতি তাড়াতাড়ি জাতীয় মহা সম্মেলন আহ্বান করা।