মনে আছে সেই মার্কিন তরুণীর কথা?
মির্জা মেহেদী তমাল: মনে আছে সেই মার্কিন তরুণীর কথা? ২৪ বছর আগে যিনি শরীরের সঙ্গে সাড়ে তিন কেজি হেরোইন বেঁধে বিমানবন্দর হয়ে দেশত্যাগের চেষ্টা করছিলেন। তিনি ছিলেন প্রথম কোনো মার্কিন নাগরিক, যাকে মাদক পাচারের অভিযোগে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। কারাগারে ছিলেন অন্তরীণ। হ্যাঁ, সেই নিষ্পাপ চেহারার মার্কিন অষ্টাদশী নাগরিক এলিয়েদা মেকর্ড লিয়ার কথাই বলা হচ্ছে। মার্কিন এই তরুণীর একসময় দুনিয়া ছিল ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার। কারাগারের পাথর দেয়ালের মধ্যে থেকে সেই এলিয়েদা স্বপ্ন দেখতেন। স্বপ্ন দেখতেন এই বন্দীশিবির থেকে তাকে কেউ একদিন মুক্ত করে নিয়ে যাবে। দুনিয়ার সবাই সত্যটা জানবে। তখন কেউ তাকে পাচারকারী বলতে পারবে না। যখন তখন তার মায়ের কাছে ছুটে যাবে। বুকের মধ্যে মাথাগুঁজে সুখ খুঁজবে। এলিয়েদার সেই স্বপ্ন বেশি দিন স্বপ্ন থাকেনি। তার স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিয়েছিল। এক সকালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটর বিল রিচার্ডসন তার মুক্তির ফরমান নিয়ে হাজির ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে। খবর দেওয়া হয় এলিয়েদাকে। কিন্তু এলিয়েদা যেন ঘুমের মধ্যে সেই স্বপ্নটাই দেখছিলেন। কারারক্ষীরা তাকে রেডি হতে বললেও তিনি ছিলেন নিস্তব্ধ। পরে সেই ঘোর কাটার পর বেরিয়ে আসেন জেল থেকে। এত তাড়াতাড়ি তাকে বেরিয়ে আসতে হয়েছে, জেলের ভেতর দীর্ঘ সাড়ে চার বছরে যাদের সঙ্গে মায়ার জালে আটকে গিয়েছিলেন, সেই তাদের সঙ্গেও বিদায় নিয়ে আসতে পারেননি। জেলখানা থেকে তাকে সোজা বিমানবন্দর। লন্ডনগামী ফ্লাইটে চড়ে হিথ্রো বিমানবন্দর। সেখান থেকে ওয়াশিংটন ডিসি। ওয়াশিংটন থেকে টেক্সাস ডুলে বিমানবন্দর। নিজের বাসা। মাত্র ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই ঢাকা জেল থেকে উড়ে একদম নিজভূম টেক্সাস। বাংলাদেশে এসে জীবনের এক চরম অধ্যায় পার করে গেলেও এই দেশকে ভুলতে পারবেন না বলে জানিয়েছিলেন এলিয়েদা। যাওয়ার সময় ঢাকা বিমানবন্দরে তিনি বলেছেন, ‘এ দেশের মানুষকে আমি কখনো ভুলব না। বাংলাদেশ সরকার আমাকে ক্ষমা করে দিয়ে নতুন জীবন দিয়েছে, আমি এর মর্যাদা দেব। পরিবর্তন হয়ে এই দেশে একদিনের জন্যে হলেও আসব।’ হিথ্রো বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘তৃতীয় বিশ্বের একটি দেশের জেলে থাকলেও আমাকে প্রথম শ্রেণির বন্দীর মর্যাদা দেওয়া হয়।’ এলিয়েদা তার নিজের কথা রেখেছেন। দেশে ফিরে যাওয়ার পর সেই এলিয়েদা নিজেকে পরিবর্তন করেছেন। দেশে ফিরেই লেখাপড়ায় মনোনিবেশ করেন। ১৯৯৯ সালে তিনি এসোসিয়েট ডিগ্রি এবং ২০০১ সালে ব্যাচেলর ডিগ্রি নেন। তিনি নাসার জনসন স্পেস সেন্টারে চাকরি নেন। পরে এইএস করপোরেশনেও চাকরি করেন। ২০০৯ সালের ন্যাশনাল জিওগ্রাফি চ্যানেলে জনপ্রিয় ‘লকড আপ এব্রোড’-এর একটি পর্ব হয় এলিয়েদাকে নিয়ে। এলিয়েদা সেই চ্যানেলে সাক্ষাত্কারে বলেছেন সেসব ঘটনার আদ্যোপান্ত। এলিয়েদা মেকর্ড লিয়া গ্রেফতারের পর ঢাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। পরবর্তীতে সেই চাঞ্চল্য আরও বেড়ে যায় যুক্তরাষ্ট্র সরকার যখন তাকে মুক্ত করতে নানা তত্পরতা শুরু করে। এক পর্যায়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটর বিল রিচার্ডসন এ বিষয়ে কাজ করেন। বাংলাদেশে এসে তিনি রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রার্থনার জন্য আবেদন করেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় তত্কালীন রাষ্ট্রপতি আবদুর রহমান বিশ্বাস সেই ফাইলে স্বাক্ষর করেন। পরবর্তীতে নতুন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার গঠনের পর ফাইল যায় প্রধানমন্ত্রীর দফতরে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই ফাইলে স্বাক্ষর করলে এলিয়েদা মুক্ত। তত্কালীন তদন্ত সংস্থা, প্রত্যক্ষদর্শী, কারা কর্মকর্তা ও ন্যাশনাল জিওগ্রাফি চ্যানেল থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। এলিয়েদা মেকর্ড এখন স্বামী ও এক পুত্র সন্তান নিয়ে টেক্সাসেই রয়েছেন। তিনি জিওগ্রাফি চ্যানেলে তরুণদের উদ্দেশে বলেছেন, কেউ কখনো রিস্ক নেবে না। একটি রিস্ক জীবন ধ্বংস করে দিতে পারে। যারা খারাপ কাজে জড়িত, তারা সেই রিস্কটাকে দেখে না। ওরা শুধু দেখে তাদের লাভ। কারা সূত্র জানায়, সাড়ে চার বছর কারাগারে বন্দী থাকাকালীন বাংলা ভাষা শিখেছেন এলিয়েদা। তিনি বাচ্চাদের সঙ্গে খেলতেন, নাচতেন ও গাইতেন। সবার প্রিয় হয়ে উঠেছিলেন মার্কিন এই সুন্দরী তরুণী। এ ছাড়া ধর্মীয় আলোচনাও করতেন খুব। বিশেষ করে তার খ্রিস্টান ধর্মের কথাই তিনি প্রত্যেককে বলতেন। কারাগারের এক কর্মকর্তা জানান, এলিয়েদার প্রেমে পড়েছিলেন অসংখ্য তরুণ। যারা প্রায়ই জেলগেটে এসে দেখা করতেন। এলিয়েদার চলে যাওয়াটা এতটাই আকস্মিক ছিল যে, কেউই জানত না। চলে যাওয়ার পর অনেকেই জেলগেটে এসেছিলেন। কয়েকজনকে কাঁদতেও দেখা গেছে। সেসব তরুণের কেউ কেউ এখনো এলিয়েদার ফেসবুকে সংযুক্ত রয়েছেন। এলিয়েদা যেভাবে পাচারে : এলিয়েদা মেকর্ড। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের হস্টনে তার বাবা মায়ের সঙ্গে থাকতেন। ১৮ বছর বয়সে তিনি বাসা ত্যাগ করেন। তার বন্ধু কিন্ডির সঙ্গে একটি অ্যাপার্টমেন্টে ওঠেন। কয়েক মাস পরই লিয়া অর্থকষ্টে পড়েন। বিশেষ করে তার বন্ধু যখন ইউরোপ সফরে যান সেই সময়ে লিয়ার অর্থনৈতিক অবস্থা বেশি খারাপ। বন্ধু কিন্ডি কিছুদিন পর ফিরে আসেন। লিয়াকে সে বলে, একটি গোপনীয় ব্যবসা করছে সে। আর এ জন্য ১০ হাজার ডলার সে পেয়েছে। ব্যবসার ধরন জানতে লিয়া চাপাচাপি করতে থাকে। এক পর্যায়ে কিন্ডি তাকে জানায়, ডায়মন্ড পাচার করে সে ১০ হাজার ডলার কামিয়েছে। কিন্ডি এ সময় লিয়াকে এ কাজে জড়িত হওয়ার পরামর্শ দেয়। লিয়া বিভিন্নভাবে খবর নিয়ে জানতে পারে, ডায়মন্ড নয়, তার বন্ধু মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত। আর এই পাচারের কাজে সে জড়িত হতে চাইলে তাকে বাংলাদেশে যেতে হবে। সেখান থেকে হেরোইন নিয়ে আসতে হবে। এ বিষয়টি জানতে পেরে তার বন্ধুকে সাফ জানিয়ে দেয়, সে পারবে না এ কাজ করতে। কারণ তার এক বন্ধু নেশায় আসক্ত হয়ে মারা গেছে। এ সময় তার বন্ধু কিন্ডি এবং পাচারকারী দলের একজন লিয়াকে বোঝানোর চেষ্টা করে। তাকে মনে করিয়ে দেয়, তার অর্থকষ্টের কথা। স্কুল খরচ থেকে শুরু করে পরিবারকে সাহায্য করার কথা। এক পর্যায়ে কিন্ডি তাকে আরও জানায়, এই মাদক আমেরিকায় নিয়ে আসতে হবে না। সুইজারল্যান্ডে নিয়ে যেতে হবে। সুইজারল্যান্ডে এই মাদক নিষিদ্ধ নয় বলে লিয়াকে তারা বোঝাতে থাকে। লিয়াকে এ সময় তারা ১০ হাজারের পরিবর্তে ২০ হাজার ডলার দেওয়ার লোভ দেখায়। লিয়া নিজেকে আর ঠিক রাখতে পারেনি। রাজি হয়ে যায়। লিয়া তার মা সিলভিয়াকে বিষয়টি জানায়। তার মা তাকে এ কাজে না জড়াতে অনুরোধ করেন। লিয়াকে বলেন, দেশের বাইরে যাওয়া চলবে না। কারণ এ ধরনের চক্র ভয়ঙ্কর হয়। ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। কিন্তু শোনেনি লিয়া। ফ্লাই ঢাকা এবং গ্রেফতার ১৯৯২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতেই এক মাসের শিক্ষা ভিসা নিয়ে ঢাকায় আসে লিয়া। তাকে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে একটি পাঁচ তারকা হোটেলে নিয়ে যান মাদক সরবরাহকারী নাইজেরিয়ার নাগরিক রবার্ট ব্লাংকসন টনি। টনি পরে তার সঙ্গে দেখা করবে বলে হোটেলে রেখে চলে যায়। এদিকে লিয়ার দিন কাটতে থাকে হোটেলের রুমে শুয়ে বসে। একে একে দিন যেতে থাকে, কিন্তু তার সঙ্গে কেউ আর দেখা করতে আসে না। এভাবেই প্রায় দুসপ্তাহ পেরিয়ে যাওয়ার পর অস্থির হয়ে পড়ে লিয়া। দেশের কথা তার মনে পড়ে। মনে পড়ে বাবা-মায়ের কথা। মনের ভেতর তখন থেকে তার অজানা আশঙ্কা। ২৪ ফেব্রুয়ারি রাতে লিয়া সিদ্ধান্ত নেয়, সে কাউকে কিছু না বলেই হোটেল থেকে বেরিয়ে দেশে ফিরে যাবে। পরদিন দুপুরে লিয়া ব্যাগ গুছিয়ে নেয়। নিজের রুম থেকে বেরিয়ে পড়ে। হোটেলের লবিতে যাওয়া মাত্র একজন বেল বয় তাকে সাহায্য করতে ছুটে আসে। ব্যাগ তাকে দিয়েই সামনে চোখ রাখতেই দেখেন মাদকের ডিলার টনিকে। টনি তার সামনে এসে দাঁড়ায়। প্রশ্ন করে, কোথায় যাচ্ছ? লিয়ার জবাব, আমি আর দেরি করতে পারছি না। নইলে আমি ফ্লাইট মিস করব। টনি এ সময় উত্তেজিত হয়ে পড়ে। তার হাত ধরে হোটেলের বাইরে নিয়ে যায়। গেটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি গাড়িতে জোর করে তুলে নেয়। টনি তাকে ভয় দেখিয়ে বলে, টেক্সাসে তার ছোট ভাইয়ের ক্ষতি হয়ে যাবে তার কথামতো না চললে। লিয়াকে নিয়ে যায় আরও একটি হোটেলে। সেখানেই টেপ দিয়ে লিয়ার শরীরের মধ্যে সাড়ে তিন কেজি হেরোইন পেঁচিয়ে দেয় টনি। সাড়ে তিন কেজি ওজনের হোরোইন শরীরে বেঁধে চলতে খুব সমস্যা হচ্ছিল লিয়ার। লিয়া এ সময় টনির কাছ থেকে ডলার দাবি করে। কিন্তু টনি তাকে আশ্বাস দেয়। বলে টেক্সাসে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ডলার পেয়ে যাবে। লিয়া বুঝতে পারেন তিনি প্রতারিত হয়েছেন। ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে লন্ডনের ফ্লাইটে উঠতে বোডিং পাস নিয়ে প্রস্তুত লিয়া। সে দেখতে পায় ওই ফ্লাইটের যাত্রীদের ব্যাগ এমনকি দেহ পর্যন্ত তল্লাশি চালানো হচ্ছে। কাস্টমস কর্মকর্তারা, প্রত্যেক যাত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন, দেহ, ব্যাগ তল্লাশি করছেন। এ দৃশ্য দেখে ঘামতে থাকেন লিয়া। প্রচণ্ড ভয় পায় সে। কি করবে বুঝে উঠতে পারছিল না সে। সে ছিল লাইনের শেষ দিকে। এক পর্যায়ে লিয়া সিদ্ধান্ত নেয়, টয়লেটে গিয়ে তার শরীরের বেঁধে রাখা জিনিসগুলো ফেলে দেবে। সে অনুযায়ী টয়লেটে যায় লিয়া। চেহারায় পানির ঝাপটা দেয়। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে থাকে কিছুক্ষণ। চেষ্টা করতে থাকে শরীরে বাঁধা জিনিসগুলো অপসারণ করতে। কিন্তু সে পারছিল না। টয়লেটে আরও লোকজনের আনাগোনায় সে সেই কাজটি করতে পারেনি। সে জানে, টয়লেট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরই তার দেহ তল্লাশি করা হবে। ভয়ে ভয়ে টয়লেট থেকে বেরিয়ে আসে। দেখতে পায় কাস্টমস কর্মকর্তারা একজন যাত্রীর ব্যাগ দেহ তল্লাশি করছে। তার দিকে খেয়াল নেই কারও। এমন সুযোগ পাওয়া যেন তখন তার হাতে চাঁদ পেয়ে যাওয়া। সে সব বাধা অতিক্রম করে ফেলল। এগিয়ে যাচ্ছে রানওয়েতে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়ির দিকে। সিঁড়ি দিয়ে নামছিল লিয়া। বাঁ-দিকে মোড় ঘুরতেই পেছন থেকে কেউ ডাকল, হ্যালো মিস! দাঁড়িয়ে গেল লিয়া। উপর দিকে তাকাতেই দেখল তাকে ইশারা করে এক মহিলা কর্মকর্তা ডাকছেন। লিয়া উপরে উঠে আসল। তার হাঁটা চলাতেই সন্দেহ আরও তীব্র হয় কর্মকর্তাদের। তাকে নেওয়া হলো একটি কক্ষে। মহিলা কর্মকর্তারা তার দেহ তল্লাশি চালাল। হাত দিয়ে পেয়ে গেলেন তারা চারটি হোরোইনের প্যাকেট। যাতে ছিল প্রায় সাড়ে তিন কেজি ওজনের হেরোইন। সেখানে তাকে জেরা করতে থাকে কর্মকর্তারা। পুলিশ আসে। পুলিশ তাকে জানায়, বাংলাদেশে হোরোইন পাচারের সর্বোচ্চ দণ্ড মৃত্যুদণ্ড। ভয় পায় ১৮ বছরের লিয়া। কাঁদতে থাকে। পুলিশ তাকে নির্ভয় দেয়। হোরোইন পাচারের মূল মালিকের নাম বলে দিলেই লিয়া বেঁচে যাবে বলে কথা দেয় পুলিশ কর্মকর্তারা। লিয়া তখন বলে, সে রাজি। কিন্তু তাকে তো ভালো করে চেনেই না। পুরো ঘটনা খুলে বলে লিয়া। পরদিন যশোর বেনাপোল এলাকায় আটক হয় মাদকের ডিলার রবার্ট ব্লাংকসন টনি। সীমান্ত দিয়ে দেশ ত্যাগের চেষ্টা করছিল। পুলিশ ছিল এলার্ট। তাকে ধরার জন্য রেড এলার্ট জারি করেছিল পুলিশ আগে থেকেই। টনিকে লিয়ার সামনা সামনি করা হয়। লিয়া দেখিয়ে দেয়, এই ব্যক্তিটিই তার শরীরে হেরোইন বেঁধে দিয়েছিল। টনি এ সময় লিয়াকে চেনে না বলে দাবি করে। পুলিশের জেরার মুখে অবশ্য স্বীকার করে টনি। হেরোইনসহ মার্কিন সুন্দরী তরুণী গ্রেফতারের খবরটি দেশ-বিদেশে ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়। দ্রুততম সময়ের মধ্যে এই মামলার বিচার কার্জ শেষ হয়। ১৯৯৩ সালের ৮ জুলাই এই মামলার বিচারের রায় ঘোষণা করেন আদালত। বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক আনসারউদ্দিন শিকদার তার রায়ে বলেন, এলিয়েদা মেকর্ড লিয়া পেশাদার মাদক পাচারকারী নয়। সে ঘটনার শিকার মাত্র। ‘মিসগাইডেড গার্ল’ আখ্যায়িত করে বিচারক বলেন, তার বয়স, ব্যবহার, শিক্ষার বিষয়গুলো বিবেচনায় এনে তাকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত না করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হলো। এলিয়েদা মেকর্ড লিয়াই প্রথম মার্কিন নাগরিক যাকে মাদক পাচারের অভিযোগে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। সৌজন্যে: বাংলাদেশ প্রতিদিন।