মহিলাদের তলপেটে চর্বি বা মেদ
মহিলাদের অনেকের তলপেটে এত বেশি চর্বি বা মেদ জমে যে, অনেক সময় গর্ভবতী বলে মনে হয়। এই তলপেটের জমানো মেদের সাথে হৃদরোগ ও ডায়াবেটিস-২ সম্পৃক্ত। তাই যেসব মহিলা খাওয়াদাওয়া নিয়ন্ত্রণ করেন না এবং জগিং বা ব্যায়ামও করেন না, তারা কিন্তু হৃদরোগ ও ডায়াবেটিস-২ ঝুঁকিতে রয়েছেন। Strength Training-এর মাধ্যমে তলপেটের চর্বি কমানো সম্ভব। ইউনিভার্সিটি অব মিনেসোটার এক সমীক্ষায় দেখেছে, বেশি ওজনবিশিষ্ট মহিলারা যদি ভারোত্তোলন ব্যায়াম করেন সপ্তাহে মাত্র দুই দিন, তাহলে তারা এই জমাটবদ্ধ তলপেটের চর্বি কমিয়ে ফেলতে পারেন। যারা এই ভারোত্তোলন ব্যায়াম কমপক্ষে দুই বছর সপ্তাহে দুই দিন নিয়মিত চালিয়ে যান, তাহলে নতুন মেদ জমতেও পারবে না, আবার পাশাপাশি জমানো মেদ গলে যাবে। এই লক্ষ্যে কোনো ব্যায়ামাগারে গিয়ে নির্দেশকের নির্দেশ অনুযায়ী এটা করা উচিত।
ভারোত্তোলন প্রশিক্ষণের উপকারিতা ভারোত্তোলন ব্যায়াম করে স্থূলদেহী পুরুষ ও নারীরা খুব সহজেই হালকা-পাতলা হতে পারেন। কারণ ভারোত্তোলনের ফলে দেহের অনাকাক্সিক্ষত জমানো চর্বি গলে যায়, পেশি গঠিত হয় এবং দেহ শক্তিশালী হয়। সাঁতার কাটা, সাইকেল চালানো, জগিং করা, অ্যারোবিক ব্যায়াম, নাচ প্রভৃতিও শরীরের চর্বি কমায় ও গলায় এবং হৃদক্রিয়া শক্তিশালী ও উন্নত করে। এ ব্যায়াম শক্তি এবং দেহে সৌন্দর্য দান করে। পুরুষকে করে সুদর্শন এবং নারীকে করে সুন্দরী ও আকর্ষণীয়। শুধু খাদ্য নিয়ন্ত্রণে ওজন কমে না। এতে পেশি ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়ে। ভারোত্তোলন ব্যায়াম করলে মেটাবলিজমও উন্নত হয় এবং হাড়কে শক্ত করে অস্টিওপোরোসিস প্রতিরোধ করে। কিভাবে এই ভারোত্তোলন ব্যায়াম শুরু করবেন সর্বপ্রথম কাজ হলো স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো, যদি আপনার বয়স হয় ৪৫-এর ঊর্ধ্বে।
-আপনার দেহের হাড়ের ডেনসিটি পরীক্ষা করে দেখতে হবে। তারপর যদি কোথাও হাড় ভাঙাচোরা থাকে বা হয় তাহলে চিকিৎসা করাতে হবে। কারণ মেয়েদের মেনোপজের পর এটা হয়।
-এরপর ধীরে ধীরে শুরু করুন। দ্রুত করবেন না। অনেকে তাড়াতাড়ি করে দ্রুত ফল পেতে, এটা ঠিক নয়। এমন তাড়াতাড়ি করলে কোনো আঘাত পেতে পারেন।
– প্রথমে হালকা ওজন উত্তোলন এবং বারবার করা যেমন- দেড় কেজি ওজনের একজোড়া ডাম্বেল নিয়ে দুই হাতে দুটো ধরুন। এবার ৮ থেকে ১২ বার উত্তোলন করুন এবং নামান। যদি ৮ বার উঠাতে পারেন, তাহলেও আপনার জন্য ভারী মনে হতে পারে। তাহলে সামান্য কম ওজনের ডাম্বেল নিন। যদি ১২ বার তোলা-নামানো কষ্টকর হয়, তাহলে সহজে যে ক’বার পারেন, করুন। যদি ১২ বার উঠানো-নামানো সহজ হয়, তাহলে আর একটু ভারী ওজনের ডাম্বেল নিন। মনে রাখবেন, যখনই কষ্টকর হয়, যদি নিঃশ্বাস ঘন হয়, তখন কয়েক মিনিট বিশ্রাম নিয়ে আবার শুরু করুন। যদি পেশিসবল করতে চান, তাহলে ভারী ডাম্বেল দিয়ে অভ্যাস করুন। কষ্টকর হলে ওজন ধীরে ধীরে কমিয়ে নিন। বারবার উঠানো-নামানো করুন। এভাবে নিয়মিত ব্যায়াম করুন আর নিশ্চিত করুন আপনার আকর্ষণীয় ফিটনেস।