মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টের কাছের মানুষের সাক্ষাৎকার
হুমায়ুন সাদেক চৌধুরী ।
ভারত মহাসাগরের নিঃসীম জলরাশির ওপর ভাসমান হাজার দ্বীপের দেশ মালদ্বীপকে একসময় ”পৃথিবীর বুকে এক টুকরো স্বর্গ” মনে করা হতো। সেই স্বর্গতুল্য দেশটিও এখন নানা সমস্যা-সংকটে আক্রান্ত। অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিরতা, পুরনো বন্ধু ভারতের সাথে ক্রমবর্ধমান দূরত্ব, পাকিস্তানের সাথে মাখামাখি এবং চীনের বিশাল বিনিয়োগ – সবকিছু দেশটিকে উত্তপ্ত আলোচনার মঞ্চে এনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে।
মালদ্বীপ ইনডিপেনডেন্ট ৮ সেপ্টেম্বর এসব নিয়ে কথা বলেছে সেদেশের মৎস্য ও কৃষিমন্ত্রী মোহামেদ শাইনী-র সঙ্গে। মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ ইয়ামিনের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত এ মন্ত্রীর প্রাণবন্ত আলাপচারিতায় উঠে এসেছে অনেক কথা, যা আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক রাজনীতিতে আগ্রহীদের কৌতূহল মেটাবে।
মালদ্বীপ ইনডিপেনডেন্ট : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার হুমকিকে সরকার ”হস্তক্ষেপ” ও ”ভীতি প্রদর্শন” বলে আখ্যায়িত করেছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র কেন এসব করতে চাইবে?
মোহামেদ শাইনী : আমি জানি না, কেন। কিন্তু আপনি যদি সময়টা দেখেন এবং দেশে কী হচ্ছে সেটা দেখেন তাহলে দেখবেন, একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে জাতিসংঘ ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের (ইইউ) সাথে যে চুক্তিতে উপনীত হয়েছিলাম তা থেকে আমরা এতটুকুও সরে আসিনি। যেদিন থেকে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হয়েছে তার পর থেকে একজন লোককেও গ্রেফতার করা হয়নি। তাহলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ঠিক এই সময়টায় এলো কেন, কেনই বা তারা উস্কানি দিচ্ছে আর প্রভাব খাটাতে চাইছে?
মালদ্বীপ ইনডিপেনডেন্ট : নির্বাচন নিয়ে বিরূপ মন্তব্য তো শুধু যুক্তরাষ্ট্র করছে না, নিষেধাজ্ঞা ফ্রেমওয়ার্ক ঘোষণার সময় ইইউ-ও করেছে।
মোহামেদ শাইনী : তাদেরকে খাওয়ানো হয়েছে যে এদেশে কোনো নির্বাচন হবে না। কলম্বোয় বসে-বসে এক-দু’জন রাষ্ট্রদূত এ কাজটি করে চলেছে। তারা যখন একটা কিছু বলে, বাকি দেশগুলো সেটা বিশ্বাস করে।
মালদ্বীপ ইনডিপেনডেন্ট : ওই রাষ্ট্রদূতরা কি ভুল বুঝছেন নাকি ইচ্ছা করেই নিজ দেশের সরকারকে ভাঁওতা দিচ্ছেন?
মোহামেদ শাইনী : তারা নিজ দেশের সরকারকে ভুল বোঝাচ্ছেন। এসব অভিযোগ নিজ দেশের সরকারকে জানানোর আগে তারা কখনোই আমাদের কাছে আসেন না। আমি নিজে জেমস ডরিসের (মালদ্বীপে ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত) সঙ্গে কথা বলেছি। জানতে চেয়েছি, (পার্লামেন্টের স্পীকারকে ইমপিচমেন্টের চেষ্টার সময়) তুমি কেন এসব বিবৃতি বাইরে পাঠাতে গেলে? তুমি কি একবারও সরকারের ব্যাখ্যা নিতে আমাদের কাছে এসেছিলে?
সে বলেছে, না। এসব আমি বিরোধীদের কাছ থেকে পেয়েছিলাম।
আমি বলেছি, এগুলো সত্য না মিথ্যা তা তো তুমি সরকারের কাছে জানতে চাইতে পারতে!
সে বললো, এগুলো আমি পত্রিকায় পড়েছি।
কিন্তু মালদ্বীপের বেশিরভাগ পত্রিকাই সরকারের বিরুদ্ধে। তারা এটাই (বিরোধিতা) করে থাকে। যে কোনো দায়িত্বশীল রাষ্ট্রদূতের উচিৎ কলম্বোতে আমাদের রাষ্ট্রদূত অথবা সরাসরি আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগাযোগ করে জেনে নেয়া যে ঘটনার উল্টো পিঠে কী আছে। কিন্তু কেউ কখনো তা করেনি।
এসব লোক কারা, তাও আমরা জানি। গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় এরা সক্রিয়ভাবে নাশিদের সাথে ছিল। নির্বাচনে নাশিদ হেরে গেলে এদের কেউ-কেউ নাকি কান্নাকাটিও করেছে। তারা ইমোশনালি ইনভলব। সরকারের ভুলটা হলো, আমরা এসব দেশে গিয়ে তাদেরকে ঘটনাগুলো বুঝিয়ে বলিনি। কারণ, আমরা দেশের উন্নয়নকাজ নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম।
ভারত প্রসঙ্গ
মালদ্বীপ ইনডিপেনডেন্ট : গত কয়েক মাস ধরে মালদ্বীপের সমালোচনায় ভারত সোচ্চার। তারা মালদ্বীপে ”গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার” ও ”আইনের শাসন” প্রতিষ্ঠার আহবান জানিয়েছে। এর কী জবাব দেবেন?
মোহামেদ শাইনী : ঘটনাপ্রবাহ যখন বিরোধীদের বিপক্ষে চলে যায় তখন তারা আইনের শাসন অনুপস্থিতির কথা বলে। ভারত ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আমাদের জরুরি অবস্থা জারির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। আমরা দেখিয়ে দিয়েছি, ১ ফেব্রুয়ারি যা ঘটেছিল তা একটি ক্যু। বিশ্বে এমন কোন দেশটি আছে যেখানে একটি ক্যু-র পরিকল্পনা ফাঁস হয়ে গেলেও সরকার তাকে উৎখাত না-করা পর্যন্ত চুপ করে বসে থাকবে? আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সুপ্রীম কোর্টের কাণ্ডটা দেখছে না, খালি বলছে, সুপ্রীম কোর্ট যদি আদেশ দিয়ে থাকে তবে তা মানা উচিত। কিন্তু সিস্টেম সচল রাখতে প্রেসিডেন্ট তা অমান্য করেন।
মালদ্বীপ ইনডিপেনডেন্ট : ভারত কিন্তু নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। আপনি তো পশ্চিমা দেশগুলোর সমালোচনা করেছেন যে তারা মালদ্বীপ থেকে অনেক দূরে, কিন্তু ভারতের তো এদেশে দূতাবাসই আছে এবং এখানে যা ঘটছে তার সবই তারা দেখতে পাচ্ছে। তো তারাও কেন একই মনোভাব দেখাচ্ছে?
মোহামেদ শাইনী : আপনি ও আমি দু’জনেরই জানা আছে যে এটা কোনো রাজনৈতিক ইস্যু নয়, ভূ-রাজনৈতিক ইস্যু। টুইটারের ফাঁস অয়ে যাওয়া বার্তা আমাদের দেখিয়ে দিয়েছে তাদের স্বার্থটা কী। আমি একবার ভারতের রাষ্ট্রদূত অখিলেশ মিশ্রকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, ”হোয়াট ইজ ইওর প্রবলেম?” তিনি জবাব দিয়েছিলেন, ”সমস্যাটা হচ্ছে চীন। কারণ, তারা এখানে সামরিক ঘাঁটি করেছে।”
আমি বলেছিলাম, আপনি মালদ্বীপের যেখানে যেতে চান সেখানেই যেতে পারবেন। শুধু আমাকে দেখাবেন কোথায় চীনের সামরিক ঘাঁটি আছে।
মালদ্বীপে কারো সামরিক উপস্থিতি যদি থেকে থাকে তাহলে তা হচ্ছে ভারতের। এদেশে এখনো ভারতের ৬০-৭০ জন সামরিক কর্মকর্তা আছেন।
মালদ্বীপ ইনডিপেনডেন্ট : আপনি বলতে চাইছেন, চলমান নির্বাচন প্রক্রিয়ায় ভারতের উদ্বেগ কোনো প্রভাব ফেলবে না?
মোহামেদ শাইনী : নির্বাচনে কোনো ভুল নেই। আমরা এর আগে তিনটা নির্বাচন করেছি। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা সেসব নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠ বলে সার্টিফাই করেছেন। তাহলে এবারের নির্বাচনের আগেই কেন বলা হবে, এ নির্বাচন অবাধ হবে না।
মালদ্বীপ ইনডিপেনডেন্ট : দু’ দেশের (মালদ্বীপ ও ভারত) সম্পর্কের টানাপোড়েন নিয়ে বেশ কথা হচ্ছে। সম্প্রতি ভারত সরকারের উপহার হিসেবে দেয়া চপার (হেলিকপ্টার) গ্রহণ করতে অস্বীকার করেছে মালদ্বীপ। অনেক ভারতীয়ের ভিসা প্রদান অথবা নবায়ন করা হয়নি।
মোহামেদ শাইনী : ভারতীয়দের আগে থেকেই মালদিভিয়ানরা এ সমস্যায় ভুগে আসছে। সীমান্তের দু’পাশেই এ পরিস্থিতির অবনতি ঘটে চলেছে। আপনি তো জানেনই, মালদ্বীপের একজন এমপিকে ভারতে ঢুকতে দেয়া হয়নি। এর সমাধান একটাই – একসঙ্গে বসা এবং আলোচনা করা।
মালদ্বীপ ইনডিপেনডেন্ট : আপনি মনে হচ্ছে সমস্যাটা স্বীকার করে নিচ্ছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত (দু’দেশের) সরকার সবসময় অস্বীকারই করে এসেছে।
মোহামেদ শাইনী : অস্বীকার করা হয়নি। আমাদের একজন এমপিকে সেদেশে ঢুকতে না-দেয়ার কথা ভারত অস্বীকার করতে পারবে? এটা ঘটেছে। হ্যাঁ, কিছু ওয়ার্ক ভিসার ক্ষেত্রে … এদেশে ভারতের বিপুলসংখ্যক কর্মী কাজ করে, প্রায় ২৯,০০০। তাদের সঙ্গে সদাচরণ করা হচ্ছে। কেবল আমাদের অভিবাসন নীতির কারণে নতুন কোনো ভিসা দেয়া হচ্ছে না। একটি টেকনিক্যাল কারণে আমরা কাউকেই ভিসা দিচ্ছি না, সেটাকেই যদি একটা বড় ইস্যু বানিয়ে ফেলা হয় তো ঠিক আছে, ওটা একটা ইস্যুই। কিন্তু এটা একতরফা হবে না। সমাধান হচ্ছে চুক্তি নবায়ন করা, যার প্রস্তাব আমরা ভারতকে দিয়েছি।
মালদ্বীপ ইনডিপেনডেন্ট : প্রস্তাবটি কি একটু বিস্তারিত বলা যাবে?
মোহামেদ শাইনী : এটা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিষয়। বিস্তারিত আমার জানা নেই।
পাকিস্তান ও চীন প্রসঙ্গ
মালদ্বীপ ইনডিপেনডেন্ট : মালদ্বীপের সাথে পাকিস্তানের ক্রমবর্ধমান সুসম্পর্কও ভারতের জন্য একটা পীড়াদায়ক ইস্যু। দু’দেশের ইতিহাসের দিকে তাকিয়ে আপনার কি মনে হয় না, এরকম একটা অবস্থা মালদ্বীপের ঘনিষ্ঠতম মিত্রকে উত্যক্ত করতে পারে?
মোহামেদ শাইনী : আমাদের প্রেসিডেন্ট প্রথম যে দেশটি সফরে যান সেটি হলো ভারত। তাহলে ভারতের প্রধানমন্ত্রী কেন আমাদের দেশ সফরে এলেন না? – এ প্রশ্নটি তো আপনি করতেই পারেন। এই একবিংশ শতাব্দীতে কখন কে আসবে আর আমাদের সাহায্য করবে সে আশায় মালদ্বীপ পেছনে বসে অপেক্ষায় থাকবে না। আমরা সব দরজায় টোকা দিয়ে দেখবো কে আমাদের সাহায্য করবে, আমাদের উন্নয়ন অংশীদার হবে। প্রথম অনুরোধটি ছিল ভারতের কাছে, কিন্তু সেটি রক্ষা হওয়াটা ছিল কঠিন।
মালদ্বীপ ইনডিপেনডেন্ট : আপনি বলছেন, মালদ্বীপে এখন চীনের কোনো সামরিক ঘাঁটি নেই। তাহলে চীনের সাথে কোনো প্রতিরক্ষা চুক্তি কি আছে?
মোহামেদ শাইনী : একেবারেই না।
মালদ্বীপ ইনডিপেনডেন্ট : চীন যে মালদ্বীপে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করছে, এগুলো পরিশোধ করবেন কিভাবে?
মোহামেদ শাইনী : এ নিয়ে আমরা একেবারেই দুশ্চিন্তা করছি না। আমরা জিএমআরকে ৩২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ তো শোধ করেছি। করিনি? তাহলে সভরিন গ্যারান্টিযুক্ত ৩০০ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করা কঠিন হবে কেন? এ ঋণ আবাসন প্রকল্পে কাজে লাগানো হয়েছে।
নির্বাচন ও বিরোধী দল প্রসঙ্গ
মালদ্বীপ ইনডিপেনডেন্ট : আগেরবারের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বীদের কেউই এবার নির্বাচনে নেই। আপনার কি মনে হয় না, নাশিদ ও জসিমকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে দিলে নির্বাচনটা আরো প্রাণবন্ত হতো, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সন্তুষ্ট এবং বিরোধী দলকে বিভক্ত রাখা যেত!
মোহামেদ শাইনী : সংবিধান অনুসারে জাসিম ও মামুন (আবদুল গাইয়ুম) নির্বাচনে দাঁড়াতে পারেন না, কারণ তাঁদের বয়স ৬৫ ছাড়িয়ে গেছে। তাদের নির্বাচনে আনার জন্য আমরা সংবিধান বদলাতে পারি না। নাশিদকে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ করে দিতে গত তিনটি নির্বাচনে আমরা বিধি শিথিল করেছি। কিন্তু তাতে কী এমন ভালোটা হয়েছে? এখনই কি নতুন রাজনীতিকদের সুযোগ দেয়ার সময় নয়? ইবু সলিহ ও ফয়সল নাসীম – এরাই তো রাজনীতির নতুন প্রজন্ম।
মালদ্বীপ ইনডিপেনডেন্ট : মামুনের কথা বলছিলেন। খবর রয়েছে যে, তাঁর স্বাস্থ্য ভেঙ্গে পড়ছে। তাঁকে কেন (জেল থেকে সরিয়ে) গৃহবন্দী করা হচ্ছে না?
মোহামেদ শাইনী : কারণ, তিনি অপরাধ করেছেন। অন্যদের মতো তিনিও একজন নাগরিকই। এবং আমাকে বিশ্বাস করুন, তাঁকে কারাগারে রাখা হয়নি। তিনি আছেন এক বেডরুমের একটি বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টে। সেখানে তাঁর যা কিছু প্রয়োজন সবই যোগান দেয়া হচ্ছে। তাঁর দেখাশোনা হচ্ছে খুব ভালোভাবে। তাঁকে সবরকম চিকিৎসাসুবিধাও দেয়া হচ্ছে।
নির্বাচনের পরে
মালদ্বীপ ইনডিপেনডেন্ট : পিপিএম (প্রগ্রেসিভ পার্টি অব মালদ্বীপ) কেমন ভোট পেয়ে বিজয়ী হবে বলে মনে করেন?
মোহামেদ শাইনী : আমরা তো আশা করছি ৭০%এর বেশি ভোট পাবো। তবে বিরোধীরা যদি লোকজনকে ঘুষ দিতে শুরু করে, তাহলে একটা সমস্যা হয়ে যাবে।
মালদ্বীপ ইনডিপেনডেন্ট : পুলিসের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে, সভা-সমাবেশের আগে তারা ব্যাপক ধরপাকড় করছে।
মোহামেদ শাইনী : না। কোনো সভা-সমাবেশের আগে কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। তবে প্রেসিডেন্টকে হত্যার হুমকি দেয়ার বিষয়ে তদন্ত চলছে, এতে কেউ-কেউ আটকও হয়েছে। তবে আমি আমাদের দলের অ্যাক্টিভিস্টদের কাছ থেকেও অভিযোগ পেয়েছি যে, তাদের গ্রেফতার বা আটক করা হয়েছে।
মালদ্বীপ ইনডিপেনডেন্ট : পুলিশ যে বিরোধীদের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলেছে, সে ব্যাপারে কি বলবেন?
মোহামেদ শাইনী : কেউ যদি বিনা অনুমতিতে কারো দেয়ালে পোস্টার লাগায়, আর সেই দেয়ালের মালিক যদি পুলিসে খবর দেন, পুলিস এসে সেগুলো তো ছিঁড়ে ফেলবেই। নির্বাচনী বিধি হচ্ছে, কারো দেয়ালে পোস্টার লাগাতে হলে বাড়ির মালিকের অনুমতি লাগবে।
মালদ্বীপ ইনডিপেনডেন্ট : আগামী পাঁচ বছর দেশ কেমন চলবে?
মোহামেদ শাইনী : যদি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আমাদেরকে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে দেয়, তাহলে যে-ই জয়ী হোক, দেশে শান্তি থাকবে। আমার যেটা দুশ্চিন্তা সেটা হলো, যদি ইবু প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন তাহলে নাশিদকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ফিরিয়ে আনার জন্য তাঁর ওপর চাপ থাকবে। আর তখনই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠবে এবং অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি হবে। তবে আমাদের বিচারে, ইনশাআল্লাহ, আমরাই জয়ী হবো। বর্তমান গতিতে এগোতে থাকলে দেশ আরো সমৃদ্ধ হবে।
.
মালদ্বীপ ইনডিপেনডেন্ট : যারা নির্বাসনে আছেন, তাঁদের কী হবে?
মোহামেদ শাইনী : যারা নির্বাসনে আছেন তাঁদের বেশিরভাগই নিজেরাই নির্বাসনে গেছেন। তাদের জন্য এটা একটা বিলাস। কেউ যদি বলে যে সে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার এবং আশ্রয় চায়, ইউরোপিয়ান দেশগুলোতে তাদের সুন্দরভাবে থাকার একটা ব্যবস্থা হয়েই যায়।
মালদ্বীপ ইনডিপেনডেন্ট : আর যারা কলম্বোতে নির্বাসিত আছেন?
মোহামেদ শাইনী : আমি মনে করি না যে ডেভিড ক্যামেরন সরকারের পতনের পর তারা আগের মতো খুব-একটা সহায়তা পাচ্ছে বলে আমি মনে করি না। এ কারণেই তারা কলম্বোতে থাকছে। তারা ইচ্ছা করলেই দেশে ফিরে আসতে পারেন। তবে তাদের কেউ যদি সাজাপ্রাপ্ত হয়ে থাকেন, সেটা তাদের ভোগ করতে হবে। আদালতের মোকাবিলা করতে হলে তা-ও করতে হবে। যাদের এ দু’টির কোনোটিই নেই এবং এখনো রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী হয়েই আছেন, তাদের জন্য আমাদের তেমন কিছু করার নেই।