যে কারণে মনিপুরের ভূমিকম্প

ভারতের মনিপুরে উৎপন্ন হওয়া তীব্র ভূমিকম্প ঝাঁকুনিতে কেঁপে উঠেছে সমগ্র ভারতসহ পার্শ্ববর্তী বাংলাদেশ-মিয়ানমার। রিখটার স্কেলে ৬.৭ মাত্রার ওই ভূমিকম্প নাড়িয়ে দিয়েছে উত্তর-পূর্ব ভারত ও বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। ভূবিজ্ঞানীরা বলছেন, ভারত-মিয়ানমার সীমান্তে মনিপুরের ইম্ফল থেকে প্রায় ৩৩ কিলোমিটার দূরের তামেনলং ছিল ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল। তবে এ ভূমিকম্পের কারণ ছিল গত বছর নেপাল ভূমিকম্পের উল্টো। ভূবিজ্ঞানীদের মতে, মনিপুরের এ অঞ্চলটি ভূমিকম্পপ্রবণ। এর তলায় বার্মিজ আর্ক আছে। আর আছে ভারতীয় প্লেট। একে আরাকান ইয়োমা সাবডাকশন জোন বলে। এর ফলে এ অঞ্চলে বারবার ৬-৬.৫ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে। ১৯৩০ সাল থেকে সংগৃহীত তথ্যে এমনটাই দেখা যাচ্ছে। নেপাল ভূমিকম্পের সঙ্গে এ কম্পনের একটা ফারাক রয়েছে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুগত হাজরা বলেছেন, ‘নেপালের ক্ষেত্রে একটি প্লেট আরেকটি প্লেটের তলায় ঢুকে গিয়েছিল। এ ক্ষেত্রে মনে হচ্ছে একটি প্লেট আরেকটি প্লেটের থেকে দূরে যাওয়াতেই এ ঘটনা।’ ভারতের ভূমিকম্পবিদ পিআর ভেইড বলেন, বার্মা প্লেটের ওঠানামার কারণে এ ভূমিকম্প হয়েছে। মৃত্তিকা বিজ্ঞান মন্ত্রণালয় জানায়, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল মনিপুরের তামেনলং জেলায়। মনিপুর বিশ্ববিদ্যালয় ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণের তথ্যানুযায়ী, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল নুংবা এলাকা। মাটির ৩৯ কিমি. গভীরে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। ভারতে ১৯৫০ সালে শক্তিশালী এক ভূমিকম্পে বেশ কয়েকটি গ্রাম ধ্বংস হয়। প্রলয়ংকরী ওই ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল তিব্বতে। ওই ভূমিকম্পে ভারতের আসাম রাজ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়। ৭.৬ মাত্রার ওই ভূমিকম্প, ভূমিকম্প-পরবর্তী কম্পন, ভূমিধস ও বন্যায় ১৫০০লোক প্রাণ হারান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.