শীতে শিশুর রোগবালাই

রাজধানী ঢাকায় সেভাবে শীত অনুভূত না হলেও সারা দেশে জেঁকে বসেছে। একই সঙ্গে বেড়ে চলেছে শীতকালীন বিভিন্ন অসুখ। দেশের বিভিন্ন জেলায় শিশু-বুড়ো সবাই প্রতিদিন আক্রান্ত হচ্ছেন শীতকালীন ডায়রিয়ায়। তাই এ সময় শিশুর প্রতি রাখতে হবে বাড়তি সতর্কতা। শীতে জীবাণু সংক্রমিত খাবার-দাবারের মাধ্যমে ডায়রিয়া হওয়ার আশঙ্কা কম থাকে। বরং এ সময় জীবাণু সংক্রমিত বাতাসের মাধ্যমেই ডায়রিয়া হয় বেশি। শীতে ভাইরাস দিয়ে সাধারণত ডায়রিয়া শুরু হয়। এ ডায়রিয়া জ্বর দিয়ে শুরু হয়। এর সঙ্গে সর্দি বা বমি থাকতে পারে। প্রতিদিন ৮-১০ বার সবুজাভ-হলুদ রঙের পায়খানা হয়। দেখতে অনেকটা বেলের শরবতের মতো। এতে গোটা দানা থাকে। অন্য যে কোনো সময়ের ডায়রিয়ার মতো শীতেও ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশুকে পানিশূন্যতা রোধ করার জন্য প্রতিবার পাতলা পায়খানার পর খাবার স্যালাইন খাওয়াতে হবে। অনেকে সোডিয়ামের পরিমাণ ঠিক রাখার জন্য ওরস্যালাইনের পরিবর্তে চালের স্যালাইন খাওয়ানোর পরামর্শ দেন। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া এ সময় কোনো শিশুকে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া উচিত নয়। যে শিশুরা বুকের দুধ খাচ্ছে, স্যালাইনের পাশাপাশি তা চালিয়ে নিতে হবে। ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশুর পায়খানা পরিষ্কার করতে গিয়ে তার যেন ঠা-া না লাগে, এদিকেও অভিভাবকদের বিশেষ সতর্ক থাকতে হবে। যদি তার চোখ কোঠরাগত হয়, অত্যধিক বমি হয়, জ্বরের তীব্রতা বাড়তে থাকে, শরীরের চামড়া ঢিলে হয়ে যায়, অবসন্ন হয়ে পড়ে ও পায়খানার সঙ্গে রক্ত যায়Ñ তাহলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো ভালো। হাসপাতালে পানিশূন্যতার ধরন অনুযায়ী শিশুর শিরায় স্যালাইন দেওয়ার সিদ্ধান্ত চিকিৎসক নিয়ে থাকেন। অযথা শিরায় স্যালাইন প্রয়োগে তার শরীরে পানি জমে যাওয়ার মতো দুঘর্টনা ঘটতে পারে। মল পরীক্ষায় ব্যাক্টেরিয়ার অস্তিত্ব ধরা পড়লে ওই অনুযায়ী অ্যান্টিবায়োটিক দিতে হবে।
লেখক : ডা. আবদুল্লাহ শাহরিয়ার

সহযোগী অধ্যাপক, শিশু বিভাগ
জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল শেরেবাংলা নগর, ঢাকা
চেম্বার : ল্যাবএইড, ধানমন্ডি, ঢাকা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.