সানির পর তাসকিনও নিষিদ্ধ: আইসিসি যে ব্যাখ্যা দিলো
আরাফাত সানির পর পেসার তাসকিন আহমেদের বোলিং অ্যাকশনও অবৈধ ঘোষণা করছে আইসিসি। আইসিসি তাদের ওয়েব সাইটে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। এতে জানানো হয়েছে পরীক্ষায় তাসকিন ও সানির বোলিং অ্যাকশনে ত্রুটি খুঁজে পাওয়া গেছে। আবার পরীক্ষা দিয়ে নিজেদের অ্যাকশন বৈধ প্রমাণিত না করা পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ থাকবেন এই দুই ক্রিকেটার। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম পর্বে হল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে আরাফাত সানির সঙ্গে তাসকিনের অ্যাকশন নিয়েও সন্দেহ তোলেন আম্পায়াররা। পরে গত ১৫ই মার্চ বোলিং কোচ হিথ স্ট্রিকের সঙ্গে চেন্নাইয়ে গিয়ে বোলিং অ্যাকশনের পরীক্ষা দেন তাসকিন। এর দুদিন আগে পরীক্ষা দেন সানি। ওই পরীক্ষার পর এ দুজনের বোলিং অ্যাকশন ত্রুটিপূর্ণ বলে জানায় আইসিসি। সংস্থাটির জানিয়েছে, আরাফাত সানির বেশকিছু ডেলিভারির সময় তার কনুই ১৫ ডিগ্রির বেশি বাঁকা হয় যাচ্ছিল। আর তাসকিনের ব্যাপারে বলা হয়েছে, তারও বেশ কিছু ডেলিভারি বৈধতার সীমা অতিক্রম করেছে। ইতিমধ্যে সানির জায়গায় দলে ঢুকতে আজ রাতেই বেঙ্গালুরু যাচ্ছেন আরেক বাঁহাতি স্পিনার সাকলাইন সজিব। বাংলাদেশ দলের ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সুজন বলেন, ‘আরাফাত সানিকে আইসিসি সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করেছে। তবে তারা এখনও মেইলের মাধ্যমে বিষয়টি আমাদের জানায়নি। তারা জানানোর পর আমরা বিকল্প খেলোয়াড়ের ব্যাপারে উদ্যোগ নেব।’ অন্যদিকে বিসিবি সূত্রের খবর তাসকিন নিষিদ্ধ হওয়ায় তার বদলে দলে যোগ দিতে যাচ্ছেন শুভাগত হোম। নিয়ম অনুযায়ী এই দুজন এখন তাদের বোলিং অ্যাকশন শুধরানোর কাজ করবেন। এরপর ফের তাদের আইসিসি অনুমোদিত ল্যাবে পরীক্ষা দিতে হবে। পরীক্ষায় ফলাফল ইতিবাচক হলে তারা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরতে পারবেন। বোলিং অ্যাকশন শুধরানোর বিষয়ে আইসিসির কোনও সময়সীমা নেই। বোলিং অ্যাকশন শুদ্ধ করে কখন পরীক্ষা দিতে হবে, সে সিদ্ধান্ত নেবেন সানি-তাসকিন ও তাদের কোচ।
সানি-তাসকিনের বিষয়ে আইসিসির ব্যাখ্যা
আরাফাত সানির বোলিং অ্যাকশন যে অবৈধ, তা আগেই জানা গিয়েছিল। বিভ্রান্তি ছড়িয়েছিল তাসকিন আহমেদের অ্যাকশন বৈধ না অবৈধ, তা নিয়ে। বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে প্রথমে প্রকাশিত হয়েছিল যে, তাসকিন সফলভাবেই উত্তীর্ণ হয়েছেন আইসিসির পরীক্ষায়। কিন্তু পরে দেখা যায় যে, সানির মতো তাসকিনকেও অবৈধ ঘোষণা করেছে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থা। বাংলাদেশের এই দুই বোলারের অ্যাকশন অবৈধ ঘোষণা করার পেছনে একটি ব্যাখ্যাও দিয়েছে আইসিসি। ক্রিকেটের নিয়ম অনুযায়ী বল ডেভিভারি দেওয়ার সময় কনুই ১৫ ডিগ্রির বেশি বাঁকানো যায় না। কিন্তু তাসকিন ও সানি দুজনেরই কনুই-ই নাকি সেই সীমা অতিক্রম করে গেছে। আইসিসি বলেছে, আরাফাত সানির বেশিরভাগ ডেলিভারির সময়ই কনুই বেঁকে গেছে ১৫ ডিগ্রির বেশি। আর তাসকিনের কিছু ডেলিভারি বৈধ হলেও কিছু ক্ষেত্রে তাঁর কনুইও ১৫ ডিগ্রির বেশি বেঁকে গেছে। এখন বোলিং অ্যাকশন শুধরে না নেওয়া পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বাইরেই থাকতে হবে তাসকিন ও সানিকে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পরবর্তী ম্যাচগুলোতে আর খেলতে পারবেন না এই দুই বোলার। আইসিসির অনুমোদিত পরীক্ষাগারে পুনরায় পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হতে পারলেই কেবল তাঁরা ফিরতে পারবেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। তবে বিসিবির অনুমোদ সাপেক্ষে তাসকিন ও সানি বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেট লীগে খেলতে পারবেন বলে জানিয়েছে আইসিসি। গত ৯ মার্চ ধর্মশালায় নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচের পরই সানি ও তাসকিনের বোলিং অ্যাকশন নিয়ে সন্দেহ পোষণ করেছিলেন আম্পায়াররা। ১২ মার্চ চেন্নাইয়ে বোলিং অ্যাকশনের পরীক্ষা দিয়েছিলেন সানি। তাসকিন পরীক্ষাগারে গিয়েছিলেন ১৫ মার্চ।