সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের প্রমাণ চান ভারতের বিরোধীদলগুলো

সোমবারই একটি ভিডিও-বার্তায় ঘুরিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের প্রমাণ চেয়েছিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিবাল। তাঁর যুক্তি ছিল, পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমের দাবিকে নস্যাৎ করতেই সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের প্রমাণ প্রকাশ্যে আনা উচিত কেন্দ্রীয় সরকারের।

পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের পরে ভারতের বিরোধীরাও সরকারের পাশে দাঁড়িয়েছিল। এমনকী, রাহুল গাঁধীর গলাতেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রশংসা শোনা গিয়েছিল। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে গোটা ভারতের মতো এদেশের রাজনীতিকরাও যে ঐক্যবদ্ধ, ইসলামাবাদকে সেই বার্তা দেওয়া গিয়েছিল। কিন্তু সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের কৃতিত্ব যে পুরোটাই নরেন্দ্র মোদীর সৌজন্যে বিজেপি-র ঘরে চলে যাচ্ছে, তা বুঝতে দেরি করেনি বিরোধী দলগুলি। তার উপরে আগামী বছরেই উত্তরপ্রদেশ-সহ কয়েকটি রাজ্যে নির্বাচন রয়েছে। ফলে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক নিয়ে এবারে দেশের মধ্যেও প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হচ্ছে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে। ফলে, সার্জিক্যাল স্ট্রাইক নিয়ে যথারীতি রাজনৈতিক তরজাও শুরু হয়ে গিয়েছে।

সোমবারই একটি ভিডিও-বার্তায় ঘুরিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের প্রমাণ চেয়েছিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিবাল। তাঁর যুক্তি ছিল, পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমের দাবিকে নস্যাৎ করতেই সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের প্রমাণ প্রকাশ্যে আনা উচিত কেন্দ্রীয় সরকারের। কারণ, পাকিস্তানের সরকারের মতো সেদেশের সংবাদমাধ্যমও দাবি করছে, ভারত কোনও সার্জিক্যাল স্ট্রাইকই করেনি। সোমবার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী এই দাবি করার পরেই এদিন পাকিস্তানের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে তাঁর বক্তব্যই শিরোনামে রয়েছে। সার্জিক্যাল স্ট্রাইক নিয়ে ভারতের মধ্যেই যে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে, কেজরিবালের বক্তব্য তুলে ধরে সেটাই প্রমাণ করতে চাইছে পাক সংবাদমাধ্যম।

 

শুধু কেজরিবালই নন, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী এবং কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরমও সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের প্রমাণ পেশ করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন। জোড়া চাপের সামনে পড়ে পাল্টা মুখ খুলেছে বিজেপি শিবিরও। বিজেপি নেতা এবং কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশংকর প্রসাদ এদিন সাংবাদিক সম্মেলন করে অরবিন্দ কেজরিবাল এবং পি চিদম্বরমের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন। সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের প্রমাণ চেয়ে পাকিস্তানের হাতে ভারতকে চাপে ফেলার অস্ত্র তুলে দেওয়া ছাড়াও সেনাবাহিনীর কৃতিত্ব নিয়েই বিরোধীরা প্রশ্ন তুলছেন বলে পাল্টা দাবি করেছে বিজেপি শিবির। গোটা দেশ যখন একসুরে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে, তখন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্য দুর্ভাগ্যজনক বলে ব্যাখ্যা করেছেন রবিশংকর প্রসাদ। শুধু তাই নয়, কেজরিবালের বক্তব্যে সেনাবাহিনীর মনোবলও ধাক্কা খাবে বলে দাবি করেছেন এই বিজেপি নেতা। আপ-এর মতো কংগ্রেসের বিরুদ্ধেও সরব হয়েছে বিজেপি। কংগ্রেস সভাপতি সোনিয়া গাঁধীর দিকে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী জানতে চেয়েছেন, চিদম্বরমের বক্তব্য কি তাঁর ব্যক্তিগত মত, না কি এটি কংগ্রেসেরই বক্তব্য? এই বিতর্কের মধ্যে কংগ্রেস নেতা সঞ্জয় নিরুপমের বক্তব্যেও চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। তিনি বলেছেন, দেশ অবশ্যই সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের পক্ষে, কিন্তু ভুয়ো কোনও হামলার পক্ষে নয়।

সার্জিক্যাল স্ট্রাইক নিয়ে ভারতেও রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়ে গিয়েছে। এর ফায়দা যে পাকিস্তান নেবেই, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সেনাবাহিনী-সূত্রে অবশ্য বারবারই দাবি করা হয়েছে, জঙ্গি শিবির গুঁড়িয়ে দেওয়ার জন্য যে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক হয়েছিল, তার পর্যাপ্ত প্রমাণ ভারতের হাতে রয়েছে। সূত্র: এবেলা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.