সোশ্যাল মিডিয়াকে জেলখানা বললেন ক্যাটরিনা

সমালোচনা নিয়ে আর মাথা ঘামান না ক্যাটরিনা কাইফ। সোশ্যাল মিডিয়াকে একটা জেলখানার মনে করেন। কিন্তু কেন? এসব প্রশ্রের জবাব দিয়েছেন ভারতের একটি দৈনিককে।
ছয় বছর আগে শাহরুখের সঙ্গে প্রথম কাজ করেছিলেন। ‘জ়িরো’ কি আপনার কাছে রিইউনিয়ন?

তা বলতে পারেন। শাহরুখের সঙ্গে ‘কৌন বনেগা ক্রোড়পতি’র সেটে প্রথম দেখা হয়েছিল। তখন আমার সঙ্গে সালমান ছিল। তার পরে ‘জব তক হ্যায় জান’-এর সেটে। তখন ভীষণ ভয় পেতাম, আড়ষ্ট থাকতাম। একে তো যশ চোপড়ার ছবি, সেখানে শাহরুখ খান হিরো— এটাতেই ভীষণ ভয় লাগত। ধীরে ধীরে জড়তা কেটেছে। অভিনেত্রী হিসেবে অনেক পরিণত হয়েছি। শাহরুখের সঙ্গেও আমি এখন অনেক সহজ।

ছবিতে আপনি সুপারস্টার। অভিনেত্রীর চরিত্রে অভিনয় করাটা কতটা কঠিন?

আমার কাছে ববিতা কুমারী একটা চ্যালেঞ্জ ছিল। আনন্দ স্যার যখন দু’বছর আগে আমাকে ববিতার চরিত্রটা শোনান, তখনই খুব ভালো লেগেছিল। দু’বছরের মধ্যে অনেক কিছু বদলালেও আমার চরিত্রটা একই আছে। আমার আর আনন্দ স্যারের আন্ডারস্ট্যান্ডিংও খুব ভালো। চরিত্রটার জন্য তৈরি হতে আমাকে সময়ও দিয়েছেন। আমার শুটগুলো হতো রাতের দিকে। ববিতা আমাকে একটা ডার্ক স্পেসের মধ্যে নিয়ে যেত। অনেক সময়ে মনে হতো, আর শুটিং করতে পারছি না। আনন্দ স্যারকে অনুরোধ করতাম। কিন্তু উনি হেসে বলতেন, ‘নেহি বেটা তুমকো কর না হোগা’। হয়তো আমি কোনো কারণে খুব খুশি রয়েছি। সেই ইমোশন চেপে রেখে ববিতার চরিত্রটা করতে হতো।

ডিপ্রেশন নিয়ে এখন অনেকেই কথা বলছেন। আপনি নিজেকে খুশি রাখার জন্য কী করেন?

আমার মনে হয়, আমরা সব সময়ে অজানা আনন্দের পিছনে ছুটছি। নিজেদের জীবনকে অযথা জটিল করছি। আমরা আসলে যা নই, সেটা হতে চাইছি। আর সেটা হতে গিয়ে আরও চাপে পড়ে যাচ্ছি। আর এটা হচ্ছে, সোশ্যাল মিডিয়া, ডিজিটাল মাধ্যমের আধিপত্যের জন্য। আজ থেকে দশ বছর আগে যখন ডান্স রিহার্সাল বা জিম থেকে বেরোতাম, তখন বাইরে হয়তো এক জন ফোটোগ্রাফার থাকতেন। আমি তাকে ছবি না তোলার অনুরোধ করলে তিনি শুনতেনও। এখন আর সেটা হয় না। উদয়পুরের বিয়ে বাড়ি থেকে খুব ক্লান্ত হয়ে ফিরেছিলাম। মনে হচ্ছিল, একটা ঢিলেঢালা পোশাক পরে ডিনারে চলে যাই। তখনই মনে হল, বাইরের গেলেই ফোটোগ্রাফাররা ছবি তুলতে শুরু করে দেবেন। সেটা ভেবে আর গেলাম না। সোশ্যাল মিডিয়া একটা জেলখানার মতো। আমরা সকলে জেনে বুঝে তাতে ফেঁসে গিয়েছি! আমার সন্তান হলে তাকে এ সব থেকে দূরে রাখব। জীবনটাকে আমরা জটিল বানাচ্ছি।

আনুশকার সঙ্গে আপনার কেমন বন্ধুত্ব?

আমাদের দু’জনের মধ্যে একটা বিশ্বাস আর ভালেঅ লাগার সম্পর্ক আছে। বিভিন্ন বিষয়ে আনুশকার আইডিয়া খুব ভালেঅ। ও যা বিশ্বাস করে সেটাই করে। এত অল্প সময়ের মধ্যে প্রোডিউসার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করা খুব কঠিন কাজ। নিজের ক্লোদিং লাইন নিয়ে এসেছে। এই সব কিছু করতে গিয়ে ওকে অনেক লড়াই করতে হয়েছে। তার কিছুটা আমি দেখেওছি। আনুশকার এই সাহস প্রশংসনীয়।

নিজেকে অভিনেত্রী বলবেন না কি স্টার?

এগুলো নিয়ে ভাবি না। এই মুহূর্তে আমি নিজেকে ডিসকভার করছি। জীবনে শান্তি পেতে চাই এবং আনন্দে থাকতে চাই। এখনও অনেকটা পথ চলা বাকি। পিছনে ফিরে তাকাতে চাই না।

‘ঠগস অব হিন্দোস্তান’-এ আপনার চরিত্র সুরাইয়া বেশ সমালোচিত হয়েছে। এটা নিয়ে কিছু বলবেন?

হ্যাঁ, আমি পড়েছি। কিন্তু ‘ঠগস…’ আমার প্রথম ছবি নয়, যেখানে আমি সমালোচিত হলাম। এই সব ক্রিটিসিজ়ম আমার সয়ে গিয়েছে। সব চরিত্রের জন্যই পরিশ্রম করি। সুরাইয়ার জন্যও করেছিলাম। তাই একটু হলেও খারাপ লেগেছে। আর এটা খুব বড় স্কেলের ছবি ছিল বলেই রাজি হয়েছিলাম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.