স্বাস্থ্যকর চর্বি হৃদরোগে মৃত্যুর ঝুঁকি কমায়
স্বাস্থ্যকর চর্বি গ্রহণের ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে। বহুদিন ধরেই গবেষকরা অস্বাস্থ্যকর চর্বির বদলে স্বাস্থ্যকর চর্বি গ্রহণে মানুষকে উত্সাহিত করে আসছেন। সম্প্রতি এক গবেষণায় এর স্বপক্ষের প্রমাণই আরো দৃঢ় হয়েছে। নতুন এ গবেষণায় দেখা গেছে, অলিভ অয়েল কিংবা মাছের চর্বি গ্রহণে উৎসাহিত করা গেলে বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর হৃদরোগে মৃত্যুর সংখ্যা ১০ লাখের বেশি কমানো সম্ভব। খবর লাইভ সায়েন্স।
বোস্টনের টাফটস ইউনিভার্সিটির ফ্রিডম্যান স্কুল অব নিউট্রিশন সায়েন্স অ্যান্ড পলিসির গবেষক ড. দারিয়ুশ মোজাফইরয়ানের নেতৃত্বে এক দল গবেষক সম্প্রতি গবেষণাটি করেন।
গবেষকদের মতে, স্বাস্থ্যকর চর্বির স্বল্পতায় সৃষ্ট হৃদরোগে মৃত্যুর সংখ্যা, অত্যধিক সম্পৃক্ত চর্বি গ্রহণে সৃষ্ট হৃদরোগে মৃত্যুর সংখ্যার ৩ গুণ। প্রসঙ্গত মাংস, পনির ও দুগ্ধজাত অন্যান্য খাবার এবং পাম ও নারকেল তেলের চর্বিই হচ্ছে সম্পৃক্ত চর্বি।
ড. দারিয়ুশ বলেন, কয়েক দশক ধরে হৃদরোগ প্রতিরোধে সম্পৃক্ত চর্বির ওপরই মূল মনোযোগ রাখা হয়েছিল। কিন্তু অধিকাংশ দেশেই আমরা দেখেছি, সম্পৃক্ত চর্বির আধিক্যের থেকে স্বাস্থ্যকর চর্বি গ্রহণের স্বল্পতাই বড় সংকট।
গবেষণায় ২০১০ সালে ১৮৬টি দেশের মানুষের খাদ্যাভ্যাস ও হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুহারের তথ্যকে কাজে লাগানো হয়েছে। এতে দেখা গেছে, ২০১০ সালে সারা বিশ্বে মোট ৭ লাখ ১১ হাজার ৮০০ জন স্বাস্থ্যকর চর্বির স্বল্পতায় সৃষ্ট হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। এ সংখ্যা ওই বছরে মোট মানুষের মৃত্যুর ১০ দশমিক ৩ শতাংশ। স্বাস্থ্যকর চর্বি বলতে ওমেগা-৬ পলিস্যাচুরেটেড ফ্যাটকে বোঝানো হয়, যা উদ্ভিজ্জ চর্বিতে পাওয়া যায়। এর বিপরীতে মাত্র এক-তৃতীয়াংশ মানুষ সম্পৃক্ত চর্বি বেশি গ্রহণের কারণে সৃষ্ট হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। ওই বছর এমন মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ২ লাখ ৫০ হাজার ৯০০, যা বিশ্বের মোট হৃদরোগে মৃত্যুর মাত্র ৩ দশমিক ৬ শতাংশ।
গবেষকরা বলছেন, সম্পৃক্ত চর্বি বা শর্করার বদলে ওমেগা-৬ পলিস্যাচুরেটেড ফ্যাট গ্রহণের ফলে কিছু বিশেষ উপকার হয়। এ ধরনের স্বাস্থ্যকর চর্বির ভালো উত্স হচ্ছে মাছ, উদ্ভিজ্জ তেল ও বাদাম।
ড. দারিয়ুশ বলেন, দুই টুকরো রুটি খাওয়ার বদলে অর্ধেক রুটি ও প্রচুর অলিভ অয়েল খাওয়া বা প্রচুর বাদাম কিংবা রান্নার তেল খাওয়াটা বেশি স্বাস্থ্যকর।
গবেষণায় দেখা গেছে, ১৯৯০ থেকে ২০১০ পর্যন্ত স্বাস্থ্যকর চর্বির স্বল্পতায় সৃষ্ট হৃদরোগে মৃত্যুর হার ৯ শতাংশ কমেছে। একই সময়ে সম্পৃক্ত চর্বি গ্রহণে মৃত্যুর হার কমেছে ২১ শতাংশ। বণিক বার্তা|