২০০৫ সনের ১০ই নভেম্বর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগের পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি সাংবাদিকতার ব্রতে অটল থাকেন’
ড. মীজানূর রহমান শেলী
তিনি ছিলেন ষাটের দশকের এক রৌদ্রকরোজ্জ্বল সময়ের প্রতীক। তাঁর কর্মমুখর জীবন ছিল মূলত ওই ঐতিহাসিক সময়ের রূপ ও মেজাজের মূর্ত প্রতিফলন। আমরা যারা ছিলাম তাঁর অনুজপ্রতিম তাদের কাছে ‘মিন্টু ভাই’ হিসাবে পরিচিত এনায়েতুল্লাহ খান ছিলেন এক ব্যতিক্রমী সাংবাদিক। তাঁর বৈশিষ্টময় ব্যক্তিত্বে রূপ পেয়েছে সেই উত্তাল সময়ের বিচিত্র বৈপরিত্য। অনেক দিক থেকেই সংকট ও সম্ভাবনার সেই কাল ছিল ‘আমাদের শ্রেষ্ঠ সময়, আমাদের নিকৃষ্ট সময়’, ‘আমাদের নিরাশার হিমশীতল ঋতু,আমাদের দৃপ্ত আশার উৎফুল্ল বসন্ত’। ‘দুই সময়ের মাঝখানের ঐ সময়ে’ অখণ্ড পাকিস্তানের সামরিক একনায়কতন্ত্রের শীর্ষ নেতা ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খান দোর্দণ্ড প্রতাপে দেশব্যাপী স্বৈরশাসন চালাচ্ছিলেন। সেই ব্যবস্থায় আজকের বাংলাদেশ, সে কালের পূর্ব পাকিস্তান ছিল পাকিস্তান শাসনাধীন এক অর্ন্তলীন উপনিবেশ। ১৯৬০-এর দশকে এই ভূখণ্ড থেকে গণতন্ত্র ছিল নির্বাসিত। ঐ দশকের শেষার্ধে যা ঘটে তার পরিণতিতেই আসে ১৯৭১ সনে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক মুক্তিযুদ্ধ, রক্তরঞ্জিত সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জিত হয় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।
নির্ভীক সাংবাদিক এবং রোমান্টিক বামপন্থী তরুণ হিসাবে সক্রিয় এনায়েতুল্লাহ গৌরবময় জাতীয় গণতান্ত্রিক চেতনার বিকাশে বিশিষ্ট ভূমিকা রাখেন। সেকালে যে স্বল্প সংখ্যক সাংবাদিক ও ভাষ্যকার তাঁদের লেখনীকে অগণতান্ত্রিক ও নিপীড়নমূলক স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে শাণিত অস্ত্রে রূপান্তরিত করেন তাঁদের মধ্যে এনায়েতুল্লাহ ছিলেন অন্যতম।
প্রাক ১৯৭১-এর পাকিস্তানে ষাটের দশকের শেষ পর্বে ঘটে এক বিপুল রাজনৈতিক ও সামাজিক ভূমিকম্প, যার মূল কেন্দ্র ছিল তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান। সেই বিশাল আলোড়ন আসলে ছিল বাংলাদেশের বাঙালির মহাজাগরণ। সে সময়ে যে লেখনী-সৈনিকেরা বাঙালির বৈচিত্রময় গণতান্ত্রিক উত্তরাধিকার রক্ষার জন্য সংগ্রামে অংশ নেন, তাঁদের মধ্যে নেতৃস্থানীয় ছিলেন এনায়েতুল্লাহ খান।
তিনি রাজনীতিবিদ ছিলেন না, কিন্তু প্রাণবন্ত জীবনের স্বপ্নের মূলে যে রাজনীতি সতত ক্রিয়াশীল তা তাঁর শিরায় ও ধমনীতে ছিল ফল্গুধারার মতো প্রবহমান। তাঁর জীবনাবসানের কিছু আগে তাঁর প্রতিষ্ঠিত সাপ্তাহিক ‘হলিডের’ এক বর্ষপূর্তি সংখ্যায় তিনি অন্যায়, অবিচার ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে এই সাময়িকীর দৃপ্ত ভূমিকা প্রসঙ্গে লেখেন, ‘আমরা এখনও দীর্ঘদেহী, সুন্দর এবং সংগ্রাম হিসাবে টিকে আছি’। এই সাহসী অভিব্যক্তি তাঁর জীবনের ও কর্মের সারাৎসার। তাঁর বিশাল ও বিচিত্র অভিজ্ঞতা তাঁর সংগ্রামী চেতনাকে আরও প্রখর করে। বহুদিক থেকেই তিনি ছিলেন দীপ্ত পৌরুষের প্রতীক। কিন্তু তাঁর সৌহার্দময় সামাজিক আচরণ ও ব্যবহারে সার-বস্তুহীন পৌরুষ দর্পের বাষ্পমাত্র দেখা যেত না। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে বুদ্ধিদীপ্ত ও সুরুচিসম্পন্ন মানুষের সাহচার্য তিনি পছন্দ করতেন। নিজেদেরকেই যারা একমাত্র ঠিক মনে করে এবং অন্ধভাবে বিশেষ কোনো তত্ত্ব বা মতের গোঁড়া অনুসারী হিসাবে জাহির করে তাদের সঙ্গে বিতর্ক তাঁর জন্য ছিল দুঃসহ ও বিরক্তিকর। সারা জীবন তিনি ব্যক্তি-পূজার প্রবল বিরোধিতা করে গেছেন। এসব বিষয় নিয়ে ভিন্ন পক্ষের ব্যক্তিদের সঙ্গে সামাজিক উপলক্ষে ও আনুষ্ঠানেও তিনি কোনো কোনো সময় তুমুল তর্কে জড়িয়ে পড়তেন। কিন্তু এর ফলে সৃষ্ট তিক্ততা তিনি মনে ধরে রাখতেন না। ঘটনার পর পর বা পরের দিন দুঃখ প্রকাশ করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিতেন। ক্ষমা চাইতে তিনি ভয় করতেন না কিন্তু ভয় পেয়ে কখনও ক্ষমা চাইতেন না।
আমরা যারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৩ সনে এম. এ পাশ করি ছাত্র হিসাবে তারা ছিলাম মিন্টু ভাইয়ের কয়েক বছরের কনিষ্ঠ। আমাদের আগের ও পরের যারা ছিল তাঁর অনুজপ্রতিম তাঁরা তাঁর মধ্যে খুঁজে পান তারুণ্যের অমিত শক্তির এক দ্রুতচারী স্রোতধারা। তিনি ছিলেন দর্শন শাস্ত্রের ছাত্র। কিন্তু দার্শনিক সুলভ বিচ্ছিন্নতা তাঁকে সমাজ থেকে আলাদা করে রাখতে পারেনি। তাঁর আচার-আচরণে প্রকাশ পেত রোমান্সের আবরণে ঢাকা এক জীবন-ঘনিষ্ঠ বাস্তবতা। সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে তিনি ছিলেন সক্রিয় এবং ষাটের দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ও সাহিত্যিক জীবনের এক কেন্দ্রীয় ব্যক্তিত্ব। সঙ্গীত ও সাহিত্য তাঁর সারা সত্তাকে মুখর করে রাখত। অথচ তাঁর ব্যক্তিত্ব ছিল প্রবল রাজনৈতিক মনস্কতায় আবিষ্ট। তৎকালীন বামপন্থী ছাত্র সংগঠন ইস্ট পাকিস্তান স্টুডেন্টস ইউনিয়ন, এপসু’র মনোনীত প্রার্থী হিসাবে ১৯৫৯-৬০ সনে এনায়েতুল্লাহ খান ঢাকা হল ইউনিয়নের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। আমরা অনেকে তৎকালীন প্রভাবশালী ছাত্র সংগঠন মধ্যপন্থী ‘ছাত্রশক্তি’র সদস্য হলেও তাঁর সৌহার্দ্যপূর্ণ ও স্নেহময় আচরণে তাঁর কাছের মানুষে পরিণত হই। সেকালে ছাত্রশক্তি বামপন্থী ছাত্র ইউনিয়ন ও আওয়ামী লীগ সমর্থক ছাত্র লীগের সঙ্গে এক অভিন্ন মোর্চায় সংঘবদ্ধ হয়ে সরকারি দল সমর্থিত এনএসএফ, জাতীয় ছাত্র ফেডারেশনের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল ইউনিয়নগুলোর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয় লাভ করত।
সে সময়ের রাজনীতিতে আজকের মতো প্রচ- মেরুকরণ ঘটেনি। ফলে মিন্টু ভাইয়ের পক্ষে রাজনৈতিক মতাদর্শের বিভাজন রেখা পার হয়ে বিভিন্ন মত ও পথের অনুসারীদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলা কঠিন হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জীবন শেষে তিনি সরাসরি রাজনীতিতে নামেননি, তাঁর সহপাঠী বা কনিষ্ঠদের অনেকের মতো উচ্চতম প্রশাসনিক সার্ভিসেও যোগ দেননি। বাস্তব সাফল্য অর্জনের এই সব চেনা পথ ছেড়ে তিনি স্বতঃস্ফূর্তভাবে সাংবাদিকতায় যোগ দেন। ২০০৫ সনের ১০ই নভেম্বর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগের পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি সাংবাদিকতার ব্রতে অটল থাকেন।
তাঁর সাংবাদিক জীবনের শুরু হয় তৎকালীন দৈনিক পাকিস্তান অবজারভারের তরুণ ও খ্যাতনামা এক স্টাফ রিপোর্টার হিসাবে। ১৯৬৫ সনে তিনি সাপ্তাহি হলিডে পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক হিসাবে সাপ্তাহিকটির প্রকাশনা শুরু করেন। এই ছিল তাঁর জীবনের ঐতিহাসিক বাঁক বদল। ‘হলিডে’র প্রথম চার দশকের ঘটনাবহুল অস্তিত্ব হয়ে ওঠে এনায়েতুল্লাহ খানের সমার্থক। স্বৈরাচার, অবিচার ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে হলিডের প্রতিবাদী কণ্ঠ নির্বিরাম সংগ্রাম চালিয়ে গেছে। হালকা মেজাজের নামের আবরণে হলিডে নিবিড়ভাবে রাজনৈতিক সাপ্তাহিক হিসাবে যেন তার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদকের ব্যক্তিত্বেরই অনায়াস সম্প্রসারণ। এনায়েতুল্লাহ খান অনেক সময়েই তার বন্ধু-বান্ধবদের বলতেন যে, ‘হলিডে’ নামটি বেছে নেওয়া হয়েছিল তারই এক জেষ্ঠ বন্ধু হাবিবুর রহমানের পরামর্শ অনুযায়ী। তিনি ছিলেন তৎকালীন পাকিস্তান পুলিশ সার্ভিসের সদস্য। সেনাশাসক আইয়ুবের সরকার কোনো নতুন রাজনৈতিক পত্রিকার অনুমোদন দেবে না – এই পরিপ্রেক্ষিতে হালকা ধরনের নাম নিয়ে পত্রিকা প্রকাশের উপদেশ হাবিব সাহেব মিন্টু ভাইকে দেন।
কৌশলগত কারণে এই ছদ্মবেশ ধারনের ঘটনাটি যেন এনায়েতুল্লাহ খানের ভবিষ্যৎ জীবনকেও প্রভাবিত করে। তাঁর পরবর্তী জীবনের অনেক কর্মকাণ্ড ও পদক্ষেপকে তাঁর বিশ্বাস ও বক্তব্যের বিপরীতমুখী মনে হতে পারে। তিনি সক্রিয় রাজনীতিতে সরাসরি অংশ নিতেন না। তাঁর ভূমিকা ছিল এমন এক সজাগ বিশ্লেষক ও সাংবাদিকের, যার বিশ্বাস ও বক্তব্যের মধ্যে কোনো ফারাক নেই। অথচ ১৯৭০-এর শেষ দিকে সরকারের উপদেষ্টা ও মন্ত্রী হিসাবে তিনি রাজনৈতিক ক্রিয়াকাণ্ডে সরাসরি সামিল হন। এ সত্ত্বেও সম্ভবত নিজ অভিলাষ অনুযায়ী তিনি সম্পূর্ণভাবে প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে জড়িয়ে থাকেননি। রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মন্ত্রী পরিষদের সদস্য হয়েও তিনি জিয়ার নবগঠিত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল, বিএনপিতে যোগ দেননি। কয়েক বছর পর রাষ্ট্রপতি এরশাদের শাসনামলে, ৮০-র দশকের দ্বিতীয়ার্ধে, তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসাবে চীন ও মায়ানমারে দায়িত্ব পালন করেন। স্বাভাবিকভাবেই জিজ্ঞাসা জাগে এসব পদক্ষেপের মাধ্যমে এনায়েতুল্লাহ কী তাঁর ঘোষিত বিশ্বাস ও বক্তব্যের বিপরীতে কাজ করেছেন? দৃশ্যত এ কথা সত্য মনে হলেও এনায়েতুল্লাহকে বিচার করতে হবে তাঁর বিপুল আবেগ ও বিশাল মনের পটভূমিতে। তাঁর ব্যক্তিত্ব ছিল এমনি ব্যাপক ও বিস্তৃত যাতে নানা বৈপরীত্য সহজেই সহাবস্থান করতে পারে। মার্ক টোয়েনের ভাষায়, ‘সারাক্ষণ একই ধারায় চলা আসলে ক্ষুদ্র মনের প্রেতশিশুর সমাহার মাত্র’।
বস্তুত তাঁর দৃশ্যমাণ বিপরীতধর্মী আচরণ তাঁর ব্যক্তিত্বের মৌলিক সততা ও অধিকৃত আত্মপরিচয়ে কোনো খাদ সৃষ্টি করেনি। পরিবর্তনশীল জীবন ও পরিবেশ তাঁকে তাঁর মূল বিশ্বাস ও প্রতিজ্ঞা থেকে দূরে সরাতে পারেনি। সারা কর্মমুখর জীবন তিনি সীমিত আয়ের, মধ্যবিত্ত ও স্বল্পবিত্ত মানুষের কাছাকাছি থেকেছেন, যদিও প্রভাবশালী ও বিত্তবান মহলেও তাঁর পদচারণা ছিল অসঙ্কোচ।
চির যাযাবর এনায়েতুল্লাহ খান সাংবাদিকতার বাইরের জীবনের বেশিদিন টিকে থাকতে পারেননি। মন্ত্রী ও রাষ্ট্রদূতের স্বল্পস্থায়ী মেয়াদ শেষে স্বচ্ছন্দ ভঙ্গিতে তিনি ফিরে যান পরিচিত ভুবনে। এসব কিছুর আগে, মাঝখানে ও পরেও তিনি মূলত রয়ে যান সাংবাদিক জীবনের স্বরচিত রোমান্সের প্রিয় অঙ্গনে। তিনি হয়তো ভাবতেন রোমান্টিক কবি পিবি শেলীর মতো ‘তিনি নন এমন এক দেবদূত যার আলোর পাখা মহাশূন্যে সদা আন্দোলিত অথচ পরিণামে ব্যর্থ, বিফল’।
চূড়ান্ত বিশ্লেষণে একথা বললে অত্যুক্তি হবে না যে, আমাদের এই ভূখণ্ডে সুন্দর ও প্রিয় যেসব সংযোজন তাদের মধ্যে অন্যতম এনায়েতুল্লাহ খান এবং ‘হলিডে’। সংকটের মুখে দাঁড়িয়ে তারা তাদের নীতিগত অবস্থানে দৃঢ় ও অনঢ় থেকেছে। জনগণ ও জাতির সংকটের মুহূর্তে তারা সংগ্রামী ভূমিকা রেখেছে। পথচ্যুত শাসকদের নির্যাতন ও নিষ্পেষণ প্রতিরোধে তারা কখনও পিছপা হননি। প্রাক ১৯৭১-এর পাকিস্তানে সামরিক একনায়কদের বিরুদ্ধে, মুক্তিযুদ্ধ – উত্তর বাংলাদেশে অন্যায়, অবিচার ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে এবং ১৯৯০ পরবর্তী পথভ্রান্ত গণতন্ত্রের অক্ষমতা ও ব্যর্থতার বিরুদ্ধে তাঁর নিরন্তর সংগ্রাম তাকে স্বাধীনতা ও মানবাধিকারের অতন্দ্র প্রহরীর মর্যাদা দিয়েছে।
এনায়েতুল্লাহ খান সারা জীবন বৃহত্তর ও স্থায়ী জনকল্যাণের সাধনায় সহযোগিতা দিয়েছেন। তাঁর নীতি ও আদর্শ এবং মানুষের প্রতি ভালাবাসা ও অঙ্গীকার ছিল বিপুল আবেগে মণ্ডিত। অশুভ এবং গণবিরোধী কার্যক্রমের প্রতি তাঁর ঘৃণা ছিল প্রচণ্ড। কিন্তু তাঁর ঘৃণার লক্ষ্যবস্তু ছিল অন্যায়, অবিচার ও গণবিরোধী ক্রিয়াকাণ্ড। ওই ধরনের কাজে যারা লিপ্ত তাঁরা অনুতপ্ত হলে তাদেরকে মানুষ হিসাবে ক্ষমা করতে তিনি পিছপা হতেন না। মানুষকে ঘৃণা করার প্রবণতা তাঁর ছিল না কারণ তাঁর মন ছিল মানবতা বোধে সিক্ত। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে তিনি তাঁর বহুদিনের লালিত এক স্বপ্নের রূপায়ন দেখে যান – এক দৈনিক পত্রিকার সূচনা। ইংরেজি দৈনিক ‘দি নিউ এইজ’ এর প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক এনায়েতুল্লাহ খান এই জাতীয় দৈনিকের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদকের পরিচয় নিয়ে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন। কিন্তু তাঁর সাংবাদিক জীবনের শেষ ও শুরুর প্রতীক বুঝি তাঁর অনবদ্য কীর্তি ‘হলিডে’, যার প্রতিষ্ঠাতা হিসাবে সাংবাদিকতার জগৎ তাঁকে মনে রাখবে। আর ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে তিনি আদৃত হবেন উত্তালকালের এক কলকণ্ঠ নকীব হিসাবে, যিনি সাংবাদিকতাকে দিয়ে গেছেন এক বিচিত্র, বর্ণিল ও নতুন মাত্রা।।