২২টি বই পড়ার পরামর্শ দিলেন জাকারবার্গ

বছরজুড়ে দারুণ একটি কাজ করেছেন ফেসবুকের সহ-প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ। প্রতি দুই সপ্তাহে একটি করে বই পড়েছেন তিনি। এ বইগুলো সবার পড়া উচিত বলে নিজের ফেসবুক পেজেও লিখেছেন জাকারবার্গ।

বিজনেস ইনসাইডারের প্রতিবেদন জানিয়েছে জাকারবার্গের ২২টি প্রিয় বইয়ের কথা।

. জন গার্টনারের `দ্য আইডিয়া ফ্যাক্টরি : বেল ল্যাবস অ্যান্ড দ্য গ্রেট এজ অব আমেরিকান ইনোভেশন`

সিলিকন ভ্যালির আধুনিক মানুষগুলো হয়তো মানতে চাইবেন না, কিন্তু লেখকের মতে, আমেরিকার দারুণ সব উদ্ভাবন হয়েছিল ১৯২০-১৯৮০ সালের মধ্যে। এক শতাব্দীর যুগান্তকারী সব উদ্ভাবনের কথা বইতে তুলে ধরেছেন তিনি।

. হেনরি কিসিঞ্জারের `ওয়ার্ল্ড অর্ডার`

কন্যার জন্মের বেশ আগে থেকেই ভবিষ্যত প্রজন্মের শান্তিময় পৃথিবী নিয়ে ভাবতেন জাকারবার্গ। আর এর আশা জাগানিয়া বিষয় তুলে ধরা হয়েছে এই বইতে।

. ড্যারেন এসমোগলু এবং জেমস রবিনসনের `হোয়াই নেশনস ফেইল`

ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনলজির অর্থনীতিবিদ ড্যারেন এবং হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানী জেমসের ১৫ বছরের গবেষণার ফলাফল উঠে এসেছে বইটিতে। রাষ্ট্র, সরকার এবং দেশের অর্থনীতি বিষয়ক নানা তথ্য উঠে এসেছে এতে।

. ম্যাট রিডলের `দ্য ্যাশিওনাল অপটিমিস্ট`

বইটি দারুণ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। সম্ভবত এই বিজ্ঞান লেখকের সবচেয়ে বিতর্কিত বই বটে। জাকারবার্গ এই বইটি পড়েছেন আগেরটির কারণে। কারণ এতে আগের বইটির বিপরীত থিওরি দেওয়া হয়েছে।

. ড্যারিল কলিনস, জোনাথন মরডাচ, স্টুয়ার্ট রাদারফোর্ড এবং অর্লান্ডা রুথভেনএর `পোর্টফোলিওস অব দ্য পোর`

লেখকরা সবাই গবেষক। এরা বাংলাদেশ, ভারত এবং দক্ষিণ আফ্রিকার হতদরিদ্র মানুষের জীবনযাপন নিয়ে ১০ বছর গবেষণা করেছেন। চরম দারিদ্রতার নানা দিক ওঠে এসেছে এখানে।

. লিউ সিক্সিনের `দ্য থ্রিবডি প্রবলেম`

২০০৮ সালে চীনে বইটি প্রথম প্রকাশ পায়। ইংরেজিতে অনুবাদ হওয়ার পর ২০১৫ সালে তা সেরা বই হিসাবে হুগো অ্যাওয়ার্ড লাভ করে। মাও জেদংয়ের সময়ের সাংস্কৃতিক অবস্থার কথা উঠে এসেছে এতে।

. ম্যাট রিডলের `জেনোমি`

এই লেখক জাকারবার্গের তালিকায় দ্বিতীয়বার উঠে এসেছে। এ বইয়ে জেনেটিসক নিয়ে নয়, বরং সমাজবিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে মানবজাতির ইতিহাসকে দেখানো হয়েছে।

. ইবনে খালদুনের `দ্য মুকাদ্দিমা`

এটা লেখা হয়েছিল ১৩৭৭ সালে। ইসলামিক ঐতিহাসিক খালদুন সেই সময় মানবজাতির ক্রমবর্ধমান উন্নতি নিয়ে লিখেছেন।

. উইভাল নোয়াহ হারারির `স্যাপিয়েনস`

হিব্রু ইউনিভার্সিটি অব জেরুজালেমের ঐতিহাসিক তিনি। আদিমকালের মানুষ থেকে আধুনিক মানুষের মধ্যে বিবর্তন তুলে ধরেছেন তিনি।

১০. উইলিয়াম জেমসের `দ্য ভ্যারাইটিস অব রিলিজিয়াস এক্সপেরিয়েন্স`

বইটি আমেরিকান দার্শনিকদের যাবতীয় বিষয় দেখিয়েছে। এখানে ধর্মতত্ত্ব মানুষের জীবনকে কিভাবে নানাভাবে প্রভাবিত করেছে তা দেখাচ্ছেন লেখক।

১১. মিশেল অ্যালেক্সান্ডারের `দ্য নিউ জিম ক্রো`

লেখক ওহিও স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন আইনের শিক্ষক। এ বইতে ক্রিমিনাল জাস্টিসকে ভিন্ন দৃষ্টিতে দেখেছেন তিনি। জাকারবার্গের কাছের বিশেষ কয়েকজন মানুষ এ বইটি পড়ার পরামর্শ দেন।

১২. মোইসেস নাইমের `দ্য ইন্ড অব পাওয়ার`

বিশ্বব্যাংকের সাবেক পরিচালক লেখক। কতৃত্বপরায়ণ সরকার, মিলিটারি এবং ক্ষমতাসীন ব্যক্তিদের মাঝে ক্ষমতা কিভাবে ছড়ায় তাই লিখেছেন এ বইতে।

১৩. এড ক্যাটমুলের `ক্রিয়েটিভিটি, ইনক`

কম্পিউটার অ্যানিমেশন জগতে জায়ান্ট পিক্সার সম্পর্কে বিস্তারিত লেখা হয়েছে বইটিতে। কর্মীবাহিনীর সৃষ্টিশীলতা ধরে রাখতে প্রতিষ্ঠান কি করেছে তা বলা হয়েছে এতে।

১৪. স্টিভেন পিঙ্কারের `দ্য বেটার অ্যাঞ্জেলস অব আওয়ার নেচার`

৮০০ পাতার বইটি পড়তে মন চাইবে না। কিন্তু হার্ভার্ডের মনোবিজ্ঞানীর বইয়ের ভাষা খুব সহজ। এ বইটি বিল গেটসের প্রিয় বইগুলোর একটি।

১৫. ইউলা বিসের `অন ইমিউনিটি`

জনস্বাস্থ্যের যত্নে ভ্যাকসিনেশন কতটা জরুরি তা বলা হয়েছে এ বইয়ে। সমাজের প্রতিটি মানুষকে সুস্থ্য রাখতে এর ভূমিকার কথা তুলে ধরা হয়েছে।

১৬. আইয়ান এম ব্যাঙ্কসের `দ্য প্লেয়ার অব গেমস`

হাইপার-অ্যাডভান্সড টেকনলজি ছেয়ে গেলে মানুষের জীবন কেমন হবে তা দেখার চেষ্টা করেছেন লেখক। বইটি টেসলা এবং স্পেসএক্স-এর সিইও ইলোন মাস্কেরও প্রিয় বই।

১৭. সুধির ভেঙ্কটেশের `গ্যাং লিডার ফর ডে`

কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানী লিখেছেন বইটি। অপরাধীচক্রের যাবতীয় বিষয় বুঝতে শিকাগোর একটি গ্যাংয়ের সঙ্গে মিশে যান তিনি। বইটি ভিন্ন পরিবেশে মানিয়ে নেওয়া শেখায়।

১৮. থমাস এস কুহনের `দ্য স্ট্রাকচার অব সায়েন্টিফিক রেভ্যুলেশন`

বিজ্ঞানের বিবর্তন তুলে ধরা হয়েছে এতে। কিন্তু বইটি এমন যেন একজন পদার্থবিজ্ঞানী পড়ছেন ফিলোসফি।

১৯. পিটার হুবারের `ওরওয়েলস রিভেঞ্জ`

ইন্টারনেট এবং টেলিকমিউকেশন প্রযুক্তি কিভাবে নতুন নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিচ্ছে তা উঠে এসেছে বইটিতে।

২০. ভ্যাকলাভ স্মিলের `এনার্জি`

শক্তি নিয়ে যাবতীয় কাজের কথা বলা হয়েছে এতে। এতে উৎপাদন কিভাবে যুক্ত হয় তাও বলা হয়েছে, তা ছাড়া লেখক বিল গেটসেরও প্রিয় লেখক।

২১. হেনরি এম পলসনের `ডিলিং উইথ চাইনা`

চীনের সংস্কৃতির প্রতি দারুণ দুর্বল জাকারবার্গ। তিনি মান্দারিন চাইনিজ ভাষা শিখেছেন। চীনের সঙ্গে যেকোনো কাজের ক্ষেত্রে বইটি দারুণ কাজের।

২২. মাইকেল সুকইয়ং চয়ি` `্যাশিওনাল রিচুয়াল`

সোশাল মিডিয়াকে কিভাবে সর্বোত্তম উপায়ে ব্যবহার করা যায় তা শেখানো হয়েছে বইটিতে। মানুষের চিন্তা-ভাবনার পেছনের মনোবিজ্ঞান দেখানো হয়েছে এতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.