৭ হাজার কোটি টাকা বাড়তি বিনিয়োগের পথ খুলে গেল

উল্লেখ, বাংলাদেশ ব্যাংক গতকাল রোববার সাবসিডিয়ারি কোম্পানির মূলধনকে পুঁজিবাজারে ব্যাংকের মোট বিনিয়োগ হিসাবের (Exposure) বাইরে রাখার ঘোষণা দেয়। নতুন এই হিসাব আগামী ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর থাকবে।

সাবসিডিয়ারি কোম্পানিগুলোর গড় পরিশোধিত মূলধন ১৫০ কোটি টাকা হলে, সবগুলো প্রতিষ্ঠানের মোট মূলধনের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা। এই টাকা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করা হলেও কোনো ব্যাংকের এক্সপোজার তার সীমার বাইরে যাবে না

উল্লেখ, বর্তমানে ৩৬টি ব্যাংকের এমন সহযোগী প্রতিষ্ঠান বা সাবসিডিয়ারি কোম্পানি রয়েছে,  যারা পুঁজিবাজারে ব্যবসা করছে। এদের মধ্যে ২৯টি ব্যাংকের রয়েছে ব্রোকারহাউজ। আর সাতটি ব্যাংকের রয়েছে মার্চেন্ট ব্যাংক। আর ১০টি ব্যাংকের রয়েছে দুটি করে সাবসিডিয়ারি কোম্পানি, যার একটি ব্রোকারেজ ব্যবসা ও অন্যটি মার্চেন্ট ব্যাংকিং করে থা্কে। বর্তমানে ১০০ কোটি টাকার কম মূলধনসম্পন্ন সাবসিডিয়ারি কোম্পানি নেই বললেই চলে। বেশ কয়েকটি সাবসিডিয়ারি কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ২০০ কোটি টাকার বেশি। এদের মধ্যে এবি ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের পরিশোধিত মূলধন ২৯৭ কোটি টাকা। আর ইসলামী ব্যাংক সিকিউরিটিজের মূলধন ৩শ কোটি টাকার বেশি। সাবসিডিয়ারি কোম্পানিগুলোর গড় পরিশোধিত মূলধন ১৫০ কোটি টাকা হলে, সবগুলো প্রতিষ্ঠানের মোট মূলধনের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা। এই টাকা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করা হলেও কোনো ব্যাংকের এক্সপোজার তার সীমার বাইরে যাবে না।

২৯টি ব্যাংকের ব্রোকারহাউজ রয়েছে, ৭টি ব্যাংকের রয়েছে মার্চেন্ট ব্যাংক। আর ১০টি ব্যাংকের ব্রোকারহাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংক-দুটিই রয়েছে

ব্যাংক কোম্পানি আইনের সর্বশেষ সংশোধনী (২০১৩) অনুসারে প্রতিটি ব্যাংক তার রেগুলেটরি মূলধনের ২৫ শতাংশ পর্যন্ত বিনিয়োগ করতে পারে। এই আ্ইন বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ব্যাংক একাধিক বিধিমালা জারি করে।  এসব বিধিমালার মাধ্যমে রেগুলেটরি ক্যাপিটালের সংজ্ঞা এবং পুঁজিবাজারে ব্যাংকের মোট বিনিয়োগ (Exposure) নির্ণয়ের নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। বিধিমালা অনুসারে রেগুলেটরি মূলধনের মধ্যে রয়েছে ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধন, তার বিধিবদ্ধ রিজার্ভ, অবণ্টিত মুনাফা ইত্যাদি। বিনিয়োগের পরিমাণ গণনায় ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠানের (ব্রোকারহাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংক) মূলধনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তবে সাবসিডিয়ারি কোম্পানির মূলধনকে মূল ব্যাংকের এক্সপোজারে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টিকে অযৌক্তিক আখ্যায়িত করে তা সংশোধনের দাবি করে আসছিলেন সংশ্লিষ্টরা। এ দাবি এবং পুঁজিবাজারে চলমান অস্থিরতার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংক বিদ্যমান দুটি নির্দেশনা সংশোধন করে ব্যাংকের বিনিয়োগ থেকে সাবসিডিয়ারি কোম্পানির বিনিয়োগকে বাইরে রাখার নতুন নির্দেশনা জারি করে।

উল্লেখ বর্তমানে ২৯টি ব্যাংকের সাবসিডিয়ারি কোম্পানি রয়েছে, যেগুলোর ব্রোকারেজ ব্যবসা রয়েছে। ব্যাংকগুলো হচ্ছে-এবি ব্যাংক, আল আরাফা ব্যাংক,  ব্যাংক এশিয়া, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, কমার্স ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, মেঘনা ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক,  প্রিমিয়ার ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, পূবালি ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক, ইউসিবি ও উত্তরা ব্যাংক।

অন্যদিকে এবি ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, আলআরাফা ইসলামী ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক, সাউথইস্ট ব্যাংক ও ট্রাস্ট ব্যাংকের সাবসিডিয়ারি কোম্পানি মার্চেন্ট ব্যাংকিং ব্যবসায় যুক্ত। সৌজন্যে অর্থসূচক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.